আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার প্রথম ভূত দেখা

কিছুই না ।

আমি তখন অনেক ছোট, ক্লাস টু কি থ্রি তে পড়ি, আমার এক নিকট আত্নীয়ার হঠাৎ করেই অসুখ করলো, অনেক ডাক্তার দেখানো হলো কিন্তূ কোন ওষুধ এ কিছু হলো না। যেহেতু আমাদের গ্রাম এ বাড়ি সেই কারনে অন্য পাড়া প্রতিবেশীরা উপদেশ দিলো ভালো কোন কবিরাজ দেখানোর। যেহেতু রোগী অসুস্থ সেই কারনে সবার মনে হলো তাইতো একবার কবিরাজ দেখানো যায়, দেখা যাক কবিরাজ এর মাধ্যমে কিছু হয় কিনা! অনেক খোজখবর করে এক কবিরাজ পাওয়া গেল আমার নানা বাড়ীতে , সবাই বলল সে খুবই জানলীওয়ালা কবিরাজ, কিন্তু একটা সমস্যা সে কখনো নিজেকে কবিরাজ বলে স্বীকার করে না। যাইহোক আমার বাবা সেই কবিরাজ এর বাড়িতে গেলেন ও রোগীর সমস্যার কথা বললেন।

কবিরাজ তো সাথে সাথেই অস্বীকার করলো্‌, সে বলে --- না না , আমি এসবের কিছুই জানি না, আপনি অন্য কারো কাছে যান, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার বাবা তাকে অনেক করে অনুরোধ করে বুঝালেন, আরো বললেন , দেখেন রোগীর জন্য অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে কিন্তু কোন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। শেষমেষ কবিরাজ অনুনয় বিনীনয় উপেক্ষা করতে না পেরে বললেন –রোগীর কি সমস্যা? বাবা তাকে বললেন, রোগী বেশিরভাগ সময় সুস্থ থাকেন, মাঝে মাঝে অসাভাবিক আচরন করেন, যেমন_ মন খারাপ করে বসে থাকা, ঘরের জিনিষ পত্র ভাংগা, হঠাৎ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়া, পাগলামী আচরন করা । কবিরাজ সবশুনে বললেন- আজ রাতে আপনি আমার একানে থাকেন, দেখি আমি কিছু করতে পারি কি না। বাবা বাড়ি নাই দেখে আমিতো বাড়ির রাজা, সেই রাত এ সাঁজবেলায় আমি ঘোষনা দিলাম আমি সেই আত্নীয়ার কক্ষে রাত কাটাব, সেইমতে আমি সেই রাত এ সেই আত্নীয়ার সাথে রাতে ঘুমুতে গেলাম, মশারির মধ্যে আমি আর আমার ফুপু আর মশারির বাহিরে আমাদের কাজের মেয়ে।

ঘুমিয়ে পরলাম কিন্তু কতক্ষন ঘুমিয়েছি বলতে পারবো না, খসমস শব্দে ঘুম ভাংলো, তাকিয়ে দেখি একটি সারস পাখি, এতো রাতে সারস পাখি আসলো কোথায় থেকে? আমার তো মহাআনন্দ, সারস পাখি পেয়েছি, তাকে পুষবো, কথা শিখাবো আরও যে কত কি করবো---, কিন্তু না আমার ফুপু এইসব করতে বাগড়া দিলেন , আমাকে অনেক করে বুঝালেন পাখিটা ছেড়ে দেওয়ার জন্য, বললেন- রাতের পাখি ধরে রাখতে নেই, শেষে মন খারাপ করেই পাখিটিকে জানালা দিয়ে ছেড়ে দিতে গেলাম, দুহাত বের করে অতি যত্নে পাখিটিকে ছেড়ে দিলাম কিন্তু এ কী!!!! এ যে পাখি নয়! অবাক হয়ে দেখলাম একটা মানুষ শরশর শব্দে উড়ে চেলে যাচ্ছে, আমি আমার ফুপুকে বললাম , ফুপু এইটা কি, এইটা কি, ফুপু কোনো কথা না বলে আমার চোখ চেপে বুকের সাথে জড়িয়ে রাখলো। আর এইদিকে সকাল বেলায়, আমার বাবাকে কবিরাজ বলল, বাড়ি যান আল্লাহর রহমতে আপনার রোগী সুস্থ হয়ে যাবে, আপনার ছেলে টের পেয়েছে আমি যাকে দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি তবে দয়া করে কারো কাছে বলবেন না যে, আমি আপনার রোগীকে ভাল করেছি। আমি চাইনা কোনো মানুষ আমাকে কবিরাজ হিসাবে জানুক। তারপর থেকে আমার ফুফু ভালো হয়ে গিয়েছিল, এরপর আর কোনদিন ই আগের অসুখ আর তাকে গ্রাস করতে পারেনি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।