আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোনার বাংলা নাকি তালেবানি রাষ্ট্র চাই?

কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি । উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলাদেশে আক্রমণ করছে। ভাবনাটি এমনই ভুল যে বারবার নাকচ করেছি সে সময়। উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি হাটু গেড়ে বসেছে ১৯৭৫ থেকেই। মাঝের সময়টুকু তারা শুধু নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করেছে।

শক্তি বৃদ্ধির একটি পরিসংখ্যান দিলেই বুঝতে সুবিধে হবে। কতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে ছাগসন্তান। জামায়াতের পরীক্ষিত সদস্যদের মধ্যে রুকন পদ পেতে আমীরের নিকট শপথ নিতে হয়। জামায়াতের গঠনতন্ত্রে শপথের ৩(ঘ) তে বলা হয়েছে এমন কোন পার্টি বা প্রতিষ্ঠানের সহিত সর্ম্পক রাখিব না যাহার মুলনীতি এবং উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জামায়াতে ইসলামের আকিদা, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এবং কর্মনীতির পরিপন্থি। এই প্রেক্ষপটে বিচার করা হলে ছাগু গুরু মওদুদির সুর ‍‍'ইসলাম যদি ধর্ম মাত্র হইয়া থাকে এবং মুসলমান যদি নিছক ্একটি জাতি হয়, তবে জিহাদ কিছুতেই সর্ব্বোত্তম ইবাত হইতে পারেনা বরং জীবনের সকল ক্ষেত্রেই উহার অর্থহীনতা ও অযৌক্তিক সুস্টষ্ট হইয়া ওঠে।

কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার সম্পূর্ণ বিপরীত বস্তুত ইসলাম কোনো ধর্ম এবং মুসলমান জাতির নাম নয়। ইসলাম একটি বিপ্লবী মতাদর্শ। সমগ্র পৃথিবীর সমাজ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধন করিয়া উহার নিজস্ব আদর্শ অনুযায়ী নতুন করিয়া উহা ঢালিয়া গঠন করাই ইসলামের চরম লক্ষ্য। আর মুসলমান একটি আন্তজার্তিক বিপ্লবী দল বিশেষ। ছাগ সম্প্রদায়ের পিতা এবার তার লেন্জা বের করে আরো বলেন 'ইসলাম জীবন বিধানের আহ্বান মানব জাতির পূর্ণ স্বাধীনতার বিপ্লবী ঘোষণা।

স্বাভাবিকভাবেই এ ঘোষণার পর শুধু দার্শনিক আলোচনা ও দ্বীনের সৌন্দর্য বর্ণনা দ্বারা বঞ্চিত স্বাধীনতা অর্জিত হবে না। বরং বিরুদ্ধ পরিবেশের সাথে কার্যত সংঘর্ষে লিপ্ত হতে হবে। এবং ক্রম-অগ্রসরমান আন্দোলন প্রতিটি স্তরে যেসব বাধা বিপত্তির সন্মুখীন হয় সেগুলা দুর করার জহন্য প্রয়োজনীয় সকল উপায় উপকরণ (অস্ত্রশস্ত্র-হাতিয়ার) ব্যবহার করতে হবে। এ ধরনের আন্দোলনই হচ্ছে জিহাদ। ' 'জিহাদ না করা আল্লাহর দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ।

কোনো জাতি বা সম্প্রদায় জন্য জিহাদ পরিত্যাগ করা মৃতু্যকে আলিঙ্গন করার শামিল। 'তোমাদের মধ্যে যারা দৃঢ় চিত্ত ধৈর্যশীল হবে, তারা বিশজন হলে দুশমনদের দু'শজনকে পরাজিত করবে এবং একশজন হলে একহাজার কাফেরকে পরাভূত করবে। কারণ তারা অজ্ঞান। জামায়াতে ইসলামীর তাত্ত্বিক গুরু মওদুদীর প্রত্যেকটি বাক্যই জিহাদের উদ্বদ্ধ করছে। আর জিহাদের লক্ষ্য নিয়েই জামায়াত জন্ম থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে মওদুদীর জীহাদী বাণীকে সব রকম সমর্থনের সার্টিফিকেট জামায়াতের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক ভাষণে গোআ বলেন জামায়াতে ইসলামী ও মওলানা মওদুদী এক ও অভিন্ন। মাওলানা মওদুদী ও জামায়াতে ইসলাম একটা হতে আরেকটা ভিন্ন করে দেখার উপায় নেই। " গোআর এ কথা তেকেই বুঝা যায় জামায়াত বাংলাদেশে জঙ্গী বাদের জন্ম দিয়েছে এবং তার কার্যক্রম অব্যাহত রেছেখে। জামায়াত তার জঙ্গীবাদী তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে পীর মুরিদ ওলী আউলিয়া ওলামায়ে কেরাম, নবী রাসূল সকলের বিরুদ্ধেই সমালোচনা করেছে। মওদুদী আউলিয়া কেরামদের থেকে দূরে থাকার জন্য হুশিয়ার করে দিয়েছেন বাংলাদেশে হাজার হাজার বছর ধরে পীর আউলিয়াদের অক্লান্ত সাধনায় ইসলামের সুমহান বাণী, সৌভ্রাতৃত্বমূলক সৌহার্দ, প্রতিটি বর্ণ সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্প্রিতি এবং মানবতার মহান আর্দশে উজ্জীবিত হয়ে বিভিন্ন দেশ হতে মহা মানবদের দ্বারাই বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার হয়েছে।

ইসলামের শ্বাশত সর্বজনীন কল্যানধর্মী রূপ ও মানবতাবাদী অ-সাম্প্রদায়িক ধারাকে ধ্বংস করে তালেবানী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে তাদের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। এ প্রস্তুতি তাদের অল্প দিনের মনে করলে বোকামী করবেন। মওদুদীর ভাষ্যমতে দৃঢ় চিত্ত ধৈর্যশীল বিশজনের সাংগঠনিক পদ রুকন, পঞ্চাশের দশকে অল্প সংখ্যক সদস্য নিয়ে জামায়াতের জন্ম। ৬৮-৬৯ জামায়াতের রুকন সংখ্যা ৪২৫ জন। এবং সহযোগী ৪০,০০০।

১৯৮২ সালে জামায়াতের রুকন ৬৫০। সহযোগী এক লক্ষ। জামায়াতের শতকরা ৩৩% তরুণদের মধ্য থেকে রিক্রুট করে। জামায়াত মৌলবাদি সংগঠন হলেও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬৬% রিক্রুট করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাহবাদ চত্ত্বর গণ জাগরণ মঞ্চ বেশ্যাখানা।

সেখানে শিবিরের রুকনের সংখ্যা ৬২, সাথীর সংখ্যা ৩৭২ এবং কর্মীর সংখ্যা ৮০০। বর্তমানে আরো বেড়েছে আমার কাছে এটা আগের রির্পোট নতুনটা পেলেই আপডেট দিবো। জামায়াতে ইসলামী'র সাথে তালেবানী কানেকশন। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হলে একটু পেছনে ফিরে দেখতে হবে। আবদুল্লাহ আবু সাইয়িদ এর ভাষায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সহায়তায় জামায়াত ইসলামী রাজাকার, আল-বদরসহ বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলে।

পাকিস্তান, গোয়েন্দা কর্মকর্তা সিদ্দিকি সালিক লিখেছেন সেই সব ব্যক্তিরাই আমাদের হাতে হাত মিলালো যারা ইসলাম ও পাকিস্তানের নামে তাদের সব কিছুই ঝুকি নিতে তৈরি ছিল। এই দেশ প্রেমিক ব্যক্তিদের দুটি গ্রুপে সংগঠিত করা হয়। বয়স্ক ও নামীদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠিত হল। তারা সেনাবাহিনী ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে কার্যকর সূত্র হিসেবে কাজ করতে আরম্ভ করে। অন্যদিকে তারা বিদ্রোহীদের ক্রোধাগ্নিতে নিপাতিত হয়।

স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের ধারণাকে তুলে ধরার জন্য এবং পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য শক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে রাজাকার সংখ্যা বাড়ানো হল। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আগত একটি রাজনৈতিক প্রতিনিধি দল জেনারেল নিয়াজীর কাছে অভিযোগ করেন জামায়াতে ইসলাম মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়ে তিনি একটি সেনাবাহিনী গঠন করছেন। এরপর জেনারেল আমাকে তার অফিসে ডেকে নেন এবং বলেন- আজকে থেকে তুমি তাদের আল বদর, আল শামস, নামে অভিহিত করবে। বাংলাদেশ স্বাধিন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে এসব সশস্ত্র গ্রুপ আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে যায়। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কঠোর হাতে এসব স্বাধীনতা বিরোধী উগ্রপন্থিদের দমন করার পদক্ষেপ নেন।

'পূর্ব পাকিস্তান' পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে নুরুল আমি ও গোআ পাকিস্তানে বসে কমিটি গঠন করে। মুসলিম বাংলা প্রতিষ্ঠার সশস্ত্র সংগ্রাম চালানো হয়। পাকিস্তান টিভি ও বেতার-এ মুসলিম বাংলা প্রতিষ্ঠার ব্যাপক প্রচারনা চালানো হয়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে দল গঠন ও রাজনীতি করার সুযোগ পায়। এসব দল গণতন্ত্রের লেবাস পরলেও তাদের সশস্ত্র গ্রুপগুলো প্রকাশে কৌশল পরিবর্তনপূর্বক অবস্থানে সক্রিয় থাকে।

আন্তজার্তিক ক্ষেত্রে আফগানিস্তান রাজনৈতিক পট পরিবর্তন কে তারা সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করতে দ্বিধা করেনি। সোভিয়েত সৈন্যরা কারমাল সরকারের সমর্থনে আফগানিস্তানে এলে জিহাদের ডাক দেওয়া হয়। সে সময় আফগানিস্তানে ও পাকিস্তানে জামায়াত তাদের সদস্যদের ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধে পাঠায়, যুদ্ধে তারা তালেবানি রাষ্ট্র তৈরীতে সহায়তা করে। তালেবান বাহিনী আফগানিস্তানে কঠোরভাবে শরিয়াহ পদ্ধতি প্রয়োগ করে খেলাধুলা ও বিনোদন তৎপরতা বন্ধ করে দেয়। মেয়েদের প্রাতিষ্ঠানিক চাকরি, ব্যবসা নিষিদ্ধ করা হয়।

টিভি ও বিনোদনমূলক যন্ত্রপানিত ভেঙ্গে দেয়া হয়। মেয়েদের বাইরে গিয়ে কেনাকাটা বন্ধ করে দেয়া হয়। দাড়ি রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়। জামায়াতের রিক্রুট হয়ে যারা জিহাদি জোশে আফগানিস্তানকে তালেবান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তার পর দেশে ফিরে এসেছে তারা কারা? তারা কতজন ছিল? কতজন যুদ্ধে মারা গেছেন এবং কতজন দেশে ফিরে এসেছেন? দেশে ফিরে তারা কি করছেন? গোয়েন্দাদের কাছে কি সেই তথ্য আছে? আমার জানা নেই এইসব প্রশ্নে উত্তর। দেশে ফিরে তারা জামায়াতের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে।

তারা বিভিন্ন সংগঠনের নাম দিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মসজিদ ও মাদ্রাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়ে ইতিমধ্যে তৈরি করেছে শক্তিশালি টেওয়ার্ক। এদের আন্তজার্তিক নেটওয়ার্ক অনেক শক্তি শালী। আফগান ফেরত রা যে বিভিন্ন নামে সক্রিয় তাদের মধ্যে অন্যতম জামাআতুল মুজাহিদীন। জামায়াত সৃষ্ট সশস্ত্র জঙ্গি গ্রুপ। তাদের মোটো- "কোনো মুসলিম ভূ-খন্ডে আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য কোন বিধান চলবেনা।

শতকরা নব্বই ভাগ মুসলিম বাস করা সত্ত্বেও বাংলাদেশে আল্লাহর বিধান কার্যকর নেই। দেশের সমস্ত নিম্ন ও উচ্চ আদালতে যে বিচার কার্য পরিচালনা করা হচ্ছে তার মূল ভিত্তি হচ্ছে মানবরচিত সংবিধান। মানুষের কাজ আল্লাহর দাসত্ব করা ও বিধানের আনুগত্য করা কিন্তু মানুষ নিজেই সংবিধান রচনা করে আল্লাহর বিধানের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। জামাআতুল মুজাহিদীন যে তালেবানি ভাষায় কথা বলছে এটি এখনই ভাবনার বিষয় সেই সাথে যুক্ত করে দেখুন জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারী জেনারেলের বক্তব্যর সুর "শীর্ষ নেতাদের মুক্তি না দিলে মেষে গৃহযুদ্ধ বাধবে। " আমরা কি সোনার বাংলা চাই নাকি তালেবানি রাষ্ট্র চাই।

জামায়াত শিবির শাহবাদের আন্দোলনের প্রতিদন্ধি হিসেবে ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করছে যা তারা তাদের স্বার্থে প্রতিনিয়তই করে আসছে। এই ছাগু সম্প্রদায় তাদের স্বার্থ আদায়ের জন্য নিজের মায়ের লজ্জাটুকুও বিক্রি করতে ছাড়েনা তারা ধর্মকে কিভাবে রক্ষা করবে? আজকে আমরা জামায়াতের অপ-প্রচারে বিভ্রান্ত হলে আন্দোলন তার জৌলুশতা হারাবে। জামায়াত কখনই ধর্মের রক্ষক না তারা তাদের পাকিস্তান মিশন ও তালেবানি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে এদের প্রতিহত করুন। জয় বাংলা। জয় তারুণ্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।