আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সবই ভালবাসার নিদর্শন: ব্যান্ডউইথ পাচার হচ্ছে

পূর্নিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রূটি

যখন ছোট ছিলাম তখন বাবা মাকে দেখতাম স্যাকরিফাইস করতে। মাছের বড় মাথাটা আমার পাতে তুলে দিত। বেশির ভাগ ঈদে বাবা-মা কোনো কিছুই কিনতো না। মধ্যবিত্ত পরিবাবের ছেলেপেলে মানুষ করতে বাবা-মারা যতটা কষ্ট করে তা অবর্ননীয়। কতটা খাটুনি/শ্রমের বিনিময়ে অর্জিত সম্পদ তিনারা নিজের জন্য খরচ না করে, সেটা খরচ করেন তার সন্তানের জন্যে।

এ থেকে একটা জিনিশ স্পষ্ট, ভালবাসা যখন সব কিছু ছাপিয়ে যায়, তখন স্যাকরিফাইস করাটা অনেক ইজি। ছোটকাল থেকে বড় হওয়া অবধি কিছু দিন আগে পর্যন্ত কখনো স্যাকরিফাইস করতে হয়নি তেমন ভাবে। ইদানিং স্যাকরিফাইস করছি, করতে শিখতেছি এবং বুঝতে পারছি এতেও অনেক আনন্দ। না বাবা-মার জন্যে নয়। গার্ল ফ্রেন্ডের জন্যে।

জানিনা ভালবাসা কি জিনিস, তবে এটা জানি যে, ভালবাসলে অনেক কিছুই আর করা যায়না, নিজের মত করে। নিজের চাওয়া পাওয়া গুলো আজ অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। বোধ করি প্রতিটি বাবা, ভাই, প্রেমিক, স্বামী এই ব্যাপার টা ইনজয় করেছ। স্পেশিয়ালি আপনি যদি মধ্যবিত্ত পরিবারের হয়ে থাকেন। স্পেশিয়ালি আপনি যদি মধ্যবিত্ত পরিবারের হয়ে থাকেন, তবে আর্থিক স্যাকরিফাইস টি অনেক বড় একটা ব্যাপার।

নিজে ইউজ করেন ছেড়া ফাটা মানিব্যাগ, বান্ধবিকে কিনে দিছেন চকচকে ভেনেটিব্যাগ। নিজে খান আকিজ বিড়ি, বান্ধবিরে তার ফ্রেন্ড সার্কেল সহ খাওয়ান কেএকসিতে। ব্যাপার গুলো অনেক সময় নিজের কন্ট্রোলে থাকেনা। না চাইলেও লজ্জায় পড়িয়া করিতে হয়। আবার কখোনো এই খেয়াল আসে যে, কেন খরচ করব না ওর জন্যে, ও মানেই তো আমি।

ঐতো আমার সব। আমার সুখ দুখের সঙ্গি। এই স্যাকরিফাইসের ব্যাপারটাকে পরিবার থেকে বৃহৎ পর্যায়ে নিয়ে যাই। একটি দেশ কখোনো কখনো অন্য একটি দেশের জন্যে সর্বোচ্চ স্যাকরিফাইস করে। তেমনি একটি গর্বিত দেশ ভারত।

বাংলাদেশের ভালবাসায় সিক্ত আজ আমাদের ভারত মাতা। সরকার ভারতের প্রেমে এতটাই মগ্ন যে, লজ্জায় পড়িয়া হইলেও আবদার রাখিতে হয়। ফ্রি ট্রানজিট দিলাম, আমাদের ভর্তুকি দেওয়া তেলে আমাদের রাস্তার উপর দিয়ে ভারতীয় ট্রাক চলে। আমাদের নদী বন্ধ করে দিয়ে, বালু-মাটি দিয়ে ভরাট করে তাদের ট্রাক চলাচলের পথ স্মুথ করা হয়। চুক্তির নামে আমাদের ন্যায্য পানি আমরা তাদেরকে দিয়ে দেই।

আমাদের দেশের টেন্ডার সার্কুলেটেড হয় তাদের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে। টেন্ডারে কাজ পাওয়া তো ঝাল-মুড়ি। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন কে এখন আর আগ্রাসন বলা যায়না। ঐটাই আমাদের সংস্কৃতি। বর্ডারে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে বর্ডারে হত্যা, বিডিয়ার বাহিনিকে পঙ্গু করা সহ সবই তাদের মর্জি।

সরকারের কোনো মাথা ব্যাথা নাই। কারন সুখে দুখে যে এই দাদারাই সব। এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। http://www.netindex.com/download/allcountries/ এই সাইট টির মতে, পৃথিবীতে ব্রডব্যান্ড স্পীডের লিষ্টে বাংলাদেশ ১৬২ তম। ভারতের অবস্থান ১৩৬ তম।

গতকালের প্রথম আলোর এই রিপোর্ট টা পড়েন এইবার: বাংলাদেশ থেকে ১০০ জিবি ব্যান্ডউইথ কিনবে ভারত এইবারে ব্যান্ডউইথের উপকারিতা, ফ্রিল্যান্সিং এর প্রয়োজনীয়তা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে এর ভুমিকা কি হতে পারে তা গুগল করে দেখে নিন। নিচের অংশটুকু মোস্তফা কামাল পলাশ ভাইয়ের ফেবু থেকে কপি করা ১৯৯১-১৯৯৬ সালে ক্ষমতার থাকা কালীন বিএনপি সরকারের সবচেয়ে বড় যে ব্যর্থতা আজও সমালোচিত হয় তা হলো তৎকালীন সরকারের অথর্ব মন্ত্রীদের নিজ দেশের তথ্য পাচার হয়ে যাওয়ার ভয়ে বিনে পয়সায় সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা। যেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়েছিল আবার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে ৬৫০ কোটি টকা খরচ করে The South East Asia-Middle East-West Europe 4 (SEA-ME-WE 4) নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে। একই সময় একই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে সারা বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করতেছে ভারত। বিএনপি সরকারের সেউ ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশের একটা প্রজন্মকে।

ক্ষমার অযোগ্য সেই ভুল নিয়মিতই মনে করিয়ে দিতে ছাড়েন না জাফর ইকবাল স্যার বা কায়কোবাদ স্যার, জাকারিয়া স্বপন সহ অন্যান্য তথ্য-প্রযুক্তিবিদরা। আমি নিজেও সেই ভুল ক্ষমা করতে রাজি না। সেই একই রকম ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার। কিন্তু এবারকার ভুলটার পরিণতি হবে আরও মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক। আমি আশ্চার্যিত হচ্ছি সরকারের এই পদক্ষেপ এর খবর বেশ কিছুদিন পূর্ব থেকেই মিডিয়ার আলোচিত হলেও এখন পর্যন্ত পরিচিত কোন তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এই নিয়ে কোন উচ্চ বাচ্য করেনি বা আমার চোখে পড়ে নি।

আমি যদি ভুল লিখি তবে দয়াকরে আমাকে সংশোধন করে দিবেন। ধন্য ভারত মাতা, তুমি সবই পেলে। বুক নিংড়ানো ভালোবাসা যাকে বলে আরকি। আজ ভারত মাতার স্বাধীনতা দিবসে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।