আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চে’ গুয়েভারাঃ স্মরণীয় উদ্ধৃতি

seremos como el Che
চে’ গুয়েভারা’র নামটা আমরা সবাই জানি, কিন্তু তার কাজ সম্পর্কে হয়ত ততটা জানি না। এখানে আমি চে’র নিজের বলা কিছু কথার মাধ্যমে তাকে বুঝতে চেষ্টা করেছি। ১। আমরা কিসের জন্য বাঁচব সেটা আমরা নিশ্চিত হতে পারি না যতক্ষন না আমরা তার জন্য মরতে প্রস্তুত থাকি। ২।

জয়ের আগ পর্যন্ত লড়াই, সবসময়। (Hasta la victoria siempè!) ৩। তুমি যদি প্রতিটি অবিচারের বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠ, তাহলে তুমি আমার একজন সহ-যোদ্ধা। ৪। যে কথার কাজের সাথে মিল নেই তা অপ্রয়োজনীয়।

৫। নতুন নেতাদের নিষ্ঠুর হয়ে ওঠার মাধ্যমেই কেবল নিষ্ঠুর নেতাদের অপসারণ সম্ভব। ৬। হাস্যকর লাগার একটি ঝুঁকি নিয়েই বলতে চাই যে, একজন সত্যিকার বিপ্লবী পরিচালিত হয় একটি গভীর ভালবাসা থেকে। এটা চিন্তা করাও অসম্ভব যে এই গুণটি ছাড়া কেউ প্রকৃত বিপ্লবী হতে পারে।

৭। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এক একটি সিংহনাদ এবং সাধারণ মানুষের ঐক্যের জন্য একটি যুদ্ধ-বন্দনা, তাদের বিরুদ্ধে যারা মানবতার প্রধান শত্রুঃ ইউনাইটেড স্টেটস্‌ অফ আমেরিকা। যেখানেই মৃত্যু এসে আমাদের বিস্মিত করে, তাকে স্বাগত জানাও যেন আমাদের সিংহনাদ কোন গ্রহণোন্মুখ কানে পৌঁছায় এবং আমাদের অস্ত্র গ্রহণ করার জন্য আর একটি হাত প্রসারিত হয়। এবং অন্যরা যেন প্রস্তুত হয় মেশিনগানের শব্দে এবং যুদ্ধ ও বিজয়ের নতুন সিংহনাদ তুলে আমাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার গান গাওয়ার জন্য। ৮।

গেরিলা যোদ্ধারা কেন যুদ্ধ করে? শেষ পর্যন্ত অনিবার্যভাবেই আমাদের বুঝতে হবে যে গেরিলা যোদ্ধা হচ্ছে একজন সমাজ গঠক, যে অস্ত্র তুলে নেয় নিপীড়ক শাসকের বিরুদ্ধে জনতার হয়ে উত্তর দেবার জন্য, এবং সে যুদ্ধ করে সেই সমাজব্যাবস্থার বিরুদ্ধে যা তার অস্ত্রহীন ভাইদের অবমাননা ও দুর্দশার ভেতরে রাখে। ৯। একজন গেরিলার এলাকার সব লোকের কাছ থেকে পূর্ণ সাহায্য দরকার হয়। এটি একটি অপরিহার্য শর্ত। ১০।

আমি কোন মুক্তিদাতা নই। মুক্তিদাতাদের কোন অস্তিত্বই নেই। জনতাই নিজেদের মুক্ত করে। ১১। যখন একটি ভোট ব্যবস্থার মধ্য একটি সরকার ক্ষমতায় আসে, সেটা প্রতারণ করে হোক আর না হোক, এবং সামান্য হলেও সাংবিধানিক বৈধতা রক্ষা করে, তখন গেরিলা যুদ্ধ সংগঠন করা যাবে না।

কারণ তখনও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। ১২। একজন মানুষ কর্তৃক অন্য মানুষের উপর যে শোষণ এটা রোধ করা ছাড়া আমাদের কাছে সমাজতন্ত্রের অন্য কোন ব্যাখ্যাই বৈধ নয়। ১৩। জগতের অন্য কোথাও কি হচ্ছে তা থেকে আমরা আলাদা হতে পারি না, কারণ সাম্রাজ্যবাদের উপর যেকোন দেশের বিজয় হল আমাদের বিজয় একইভাবে যেকোন দেশের পরাজয় আমাদের সবার পরাজয়।

১৪। স্বাধীনতা তখনই অর্জন করা হয় যখন মানুষের উপর থেকে সাম্রাজ্যবাদের অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব শেষ করা যায়। ১৫। যখন সাম্রাজ্যবাদ ধ্বংসের ছক কাটা হয়, তখন এটার মাথাটা খুঁজে পাওয়া দরকারী হয়ে পড়ে, যেটা ইউনাইটেড স্টেটস্‌ অফ আমেরিকা ছাড়া আর কিছুই না। ১৬।

একটি বিপ্লবে একজন অর্জন করে - বিজয় অথবা মৃত্যু। (ফিদেলকে শেষ চিঠি, ১লা এপ্রিল, ১৯৬৫) ১৭। অনেকে বলে আমি একজন অভিযাত্রী – এবং আমি আসলেই তাই, শুধু একটু অন্য ধরনের। আমি তাদের একজন যারা কিনা নিজের সামান্য একটি কথা প্রমান করার জন্য নিজের চামড়াটা বাজি রাখে। ১৮।

সবার আগে, পৃথিবীর যে কোন জায়গায়, যে কারো বিরুদ্ধে, যে কোন অবিচার গভীরভাবে অনুভব করার জন্য সবসময় নিজেকে প্রস্তুত রাখবে। এটা একজন বিপ্লবীর সবচেয়ে সুন্দর একটি গুণ। (সন্তানদের কাছে শেষ চিঠি) আজ চে’ গুয়েভারা’র ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮ই অক্টোবর, ১৯৬৭ তে বলা ফিদেল ক্যাষ্ট্রো’র একটি কথা স্মরণ করতে চাই – ‘আমরা যদি বলি যে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কেমন দেখতে চাই, আমাদের বলতে হবেঃ তারা চে’র মত হোক! আমরা যদি বলি যে আমরা আমাদের সন্তানদের কেমন শিক্ষিত দেখতে চাই, আমরা দ্বিধাহীনভাবে বলতে হবেঃ আমরা তাদের চে’র আদর্শে শিক্ষিত দেখতে চাই! আমরা যদি একটি মানুষের প্রতিমূর্তি কল্পনা করি, যিনি আমাদের সময়ের নন, ভবিষ্যতের; আমি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বলছি যে সেই প্রতিমূর্তি, যিনি তার আচরণ ও কর্মে সম্পূর্ণ কলঙ্কমুক্ত, হলেন চে’’। এই দিনে চে’ গুয়েভারা’কে অনেক অনেক শ্রদ্ধা, তার আদর্শ বেঁচে থাক আমাদের সবার মাঝে।

এই লেখাটি ভাল লেগে থাকলে নিচের লেখাগুলোও আপনার ভাল লাগতে পারেঃ ১। চে’ গুয়েভারাঃ একটি বিপ্লবী জীবন ২। Guerrillero Heroico - ক্যামেরার পেছনের মানুষটি জাতিসংঘে চে’ গুয়েভারা, ১১ই ডিসেম্বর, ১৯৬৪ জাতিসংঘে চে’ গুয়েভারা, ১১ই ডিসেম্বর, ১৯৬৪ তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট ৯ই অক্টোবর, ২০১০, ঢাকা
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।