আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মই' ট্রেন যাত্রীদের একমাত্র ভরসা

ঈদ ও জাতীয় শোক দিবসের ছুটি এবং হরতাল শেষ। কর্মজীবী মানুষকে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরতে হবে। বাস-ট্রাকেও প্রচন্ড ভীড়। বাসেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আবার মহাসড়কেও তীব্র যানজট।

তাই নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর ভরসা ট্রেন। ট্রেনের দায়িত্বরতদের ৪০/৫০ টাকা ধরিয়ে দিলেই অনায়াসে ছাদে বা ইঞ্জিন কভারে যাওয়া যায়। কিন্তু সেখানেও প্রচন্ড ভীড়। ট্রেনের ভিতরে তীল ধারনের ঠাঁই নেই। কিন্তু সময়মতো কর্মস্থলে ফিরতেই হবে।

নইলে কর্ম হারাতে হবে। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে দিন কাটাতে হবে। বাধ্য হয়ে ট্রেনের ছাদে উঠতে হচ্ছে। ট্রেনের ছাদে উঠতেও বিড়ম্বনা। ছাদে উঠতে হলে মই দরকার।

আর এ সুযোগে স্থানীয় কিছু যুবক মই নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। জনপ্রতি ২০ টাকা করে নিয়ে মই দিয়ে যাত্রীদের ট্রেনের ছাদে তুলে দিচ্ছে।
 
জানা যায়, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোন রাজশাহী-খুলনা-রংপুর বিভাগ থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকামুখে প্রায় ২৬টি ট্রেন যাতায়াত করে। প্রতিটি ট্রেনই সিরাজগঞ্জ কয়েকটি ষ্টেশনে যাত্রা বিরতি করে। এ জন্য স্বল্প সংখ্যক সিটের টিকিট বরাদ্দ রয়েছে।

কিন্তু তা তুলনায় খুবই নগন্য। ঈদের পর থেকে জেলার প্রতিটি ষ্টেশনেই হাজার হাজার যাত্রী ভীড় করছে। ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হওয়ায় ষ্টেশনে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঘন্টা পর ঘন্টা নারী-পুরুষ-শিশু ষ্টেশনে খেয়ে না খেয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
 
গতকাল বিকেলে সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় শহীদ এম.মনসুর আলী ষ্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ষ্টেশনে শত শত নারী-পুরুষ-শিশু অপেক্ষা করছে।

সকাল ১০টার সিল্কসিটি ট্রেন বিকেল তিনটার দিকে আসলেও ভিতরে ও ছাদে ছিল অতিরিক্ত যাত্রী। তীল ধারনের ঠাঁই ছিল না। অনেকে টিকিট কাটলেও ট্রেনের ভিতরে ঢুকতে পারেনি। বাধ্য হয়ে ২০ টাকার বিনিময়ে মই দিয়ে ছাদে উঠেছে। আবার অনেকে ট্রেনের ড্রাইভার ও এ্যাটেনডেন্দদের প্রকাশ্যে ৪০/৫০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে তাদের নিজস্ব রুম বা ড্রাইভারের পাশে ঠাঁই নিয়েছে।

অনেকে ইঞ্জিনের কভারে বসেছে। এদিকে,ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ট্রেনগুলো চলাচল করায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে সংশি্লষ্টরা। বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ট্রেন ধীরগতিতে গেলেও সেতুতে বড় ধরনের কম্পন হচ্ছে। যে কোন সময় লাইনচু্যত হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে সংশি্লষ্টরা মনে করছে।  
 
মই ব্যবসায়ী শাহাদত ও আনছার আলী জানান, টাকাই বড় কথা নয়।

মই ছাড়া যাত্রীদের ছাদে উঠা সম্ভব নয়। তাই তাদের উপকারও করছি আমাদের কিছু টাকা আয়ও হচ্ছে।
ট্রেন যাত্রী আসলাম উদ্দিন ও নাসিমা আক্তারসহ অনেকে জানান, সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষা করছি। উঠতে না পেরে পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি।
 
শহীদ এম.মনসুর আলী ষ্টেশনের মাষ্টার আজাহার আলী জানান, ষ্টেশনে যাত্রীর চাপ বেশী।

অনেকেই ঝুকি নিয়ে ট্রেনের জানালা দরজা ও ছাদের উপরে উঠছে। যাত্রীদের কিছু বলাও যাচ্ছে না। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন ঘন্টায় ১৬ কি.মি. গতিতে চলাচল করছে। তবু আমরা শঙ্কায় রয়েছি। এছাড়া ষ্টেশনগুলোতে যাত্রীদের উঠানামা এবং ট্রেন ধীর গতিতে চালানোর কারণেই সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

 
 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।