আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কান : সমস্যা ও সমাধান

জিবনের সন্ধানে এসে আমি মৃত্যুর কাছাকাছি এসেছি

নাক, কান ও গলা শরীরের এই তিনটি অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে। সাধারণ হাঁচি-সর্দি থেকে শুরু করে গলার ক্যান্সার সবই রয়েছে এই তালিকায়। স্বল্পপরিসরে সেইসব রোগের কয়েকটি সম্পর্কে ধারণা দেয়া হল। কানপাকা রোগ : কানের রোগগুলোর অন্যতম। কান পাকা রোগ দুই ধরনের।

একটি হচ্ছে নিরাপদ ধরনের, অন্যটি মারাত্মক ধরনের। নিরাপদ ধরনের কানপাকা রোগে কান থেকে কানের পর্দা ছিদ্র থাকে। কান দিয়ে পুঁজ পড়ে। কানেব্যথা হয়, কান চুলকায়, কানে কম শোনা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় কিছু ওষুধ ব্যবহার করে ও উপদেশ মেনে চলে রোগ নিরাময় করা যায়।

তবে এতে কানের পর্দা জোড়া লাগেনা। তবে অপারেশন করে কানের পর্দা জোড়া লাগানো যায়। মারাত্মক ধরনের কানপাকা রোগে কান দিয়ে সবসময় একটু করে কষের মত ঝরে। কানের এই কষ পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা এই দুর্গন্ধ থেকেই রোগটির ধরণ বুঝতে পারেন।

মারাত্মক ধরনের কানপাকা রোগে অপারেশনই হচ্ছে প্রকৃত চিকিত্সা। উভয় ধরনের কানপাকা রোগ জটিল হয়ে কানের পুঁজ মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। এ ধরনের জটিলতায় কানে অপারেশন লাগে। অনেক ক্ষেত্রে রোগ নিরাময়ের পাশাপাশি রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য এই অপারেশন করতে হয়। কান পাকা রোগ নিয়ে কখনোই হেলা ফেলা করা উচিত নয়।

মধ্যকর্ণে প্রদাহ : এই সমস্যা শিশুদের বেশি হয়ে থাকে। তবে বড়দেরও হয়ে থাকে। সাধারণত উর্ধ্বশ্বাসনালীর প্রদাহ, টনসিলের ইনফেকশন, এডিনয়েড নামক গুচ্ছ লসিকা গ্রন্থির বৃদ্ধি ইত্যাদি থেকে এই ইনফেকশন হয়ে থাকে। এই রোগে কানে বেশ ব্যথা হয়, কান বন্ধ মনে হয়। সঠিক সময়ে এই রোগের চিকিত্সা না করলে কানের পর্দা ফুটো হয়ে রোগটি কান পাকা রোগে রূপ নিতে পারে।

এন্টিবায়োটিক ও নাকের ড্রপসহ অন্যান্য ওষুধ হচ্ছে এই রোগের চিকিত্সা। মধ্যকর্ণে পানির মত তরল জমা : এই রোগের কারণও উপসর্গ অনেকটা মধ্যকর্ণে প্রদাহের মতই। তবে উপসর্গসমূহের তীব্রতা অনেক কম থাকে। সাধারণ ওষুধেই এ রোগ সারে। অনেক সময় ছোট্ট অপারেশন করে মধ্যকর্ণে জমে থাকা পানি বের করে দিতে হয়।

কানে ফাঙ্গাস ও কানে ক্ষত : কানের মধ্যে অনেক সময় ফাঙ্গাস এবং ক্ষত হয়। সাধারণত কান খোঁচানোর জন্য কানের মধ্যে ফাঙ্গাস হয়ে থাকে। কান পরিষ্কার করা কিংবা কান খোঁচানো অনেক সময় একই বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এসব কাজে ব্যবহার করা হয় কটনবাড থেকে মুরগির পালক, কলমের মুখ, চুলের ক্লিপ ইত্যাদি। এসব কিছুই কানের এই রোগটির জন্য দায়ী।

কানে ফাঙ্গাস হলে কান মূলত চুলকায়। সাথে ইনফেকশন বেড়ে প্রদাহ হলে ব্যথা হয়, কষ ঝরে ও কান বন্ধ হয়ে থাকে। অনেক সময় কানের ভিতরে ক্ষত হয়ে ফাঙ্গাসের সাথে কানের বাইরের পথটিতে ক্ষত সৃষ্টি হলে ব্যথা মারাত্মক আকার ধারন করে। তবে চিকিত্সায় পুরো সেরে যায়। তবে ওষুধের চিকিত্সা শুরুর আগে ইএনটি বিশেষজ্ঞ দিয়ে কান পরিষ্কার করিয়ে নিতে হবে।

কানে ওয়াক্স বা খোল : কানে ওয়াক্স বা খোল অতি পরিচিত সমস্যা। এই খোল অনেকেই পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। নিজে এটি পরিষ্কার করা ঠিক নয়। নিজে পরিষ্কার করতে গেলে জমে থাকা খোলের বেশিরভাগই ভিতরে চলে যায়। ফলে বিপত্তি আরো বাড়ে।

কানে খোল আটকে গেলে কানে ব্যথা হয়, কানে কম শোনা যায় কান বন্ধ থাকার কারণে। ইএনটি স্পেশালিস্ট কান দেখে এটি পরিষ্কার করে দিতে পারেন। তাবে পরিষ্কার করা সম্ভব না হলে খোল গলানোর ওষুধ রয়েছে। তাতেও কাজ না হলে কিংবা অবস্থা বেশি খারাপ হলে অজ্ঞান করে কান পরিষ্কার করে দিতে হয়। যাদের কানে খোল হওয়ার প্রবনতা রয়েছে তারা নিয়মিত কানে ৪/৫ ফোঁটা করে অলিভ অয়েল দিতে পারেন।

পরামর্শদাতা : ডাঃ সজল আশফাক, সহযোগী অধ্যাপক, নাক কান গলা বিভাগ হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।