আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাস-রঙ্গ ৩



আজকে আমি আমার স্মৃতিচারণ করব না। বরং আমার ছোট ভাইয়ের দুটি ঘটনা বলছি। ঘটনা ১: ২০০৪ সালের কথা। ছোটভাই ও তার এক স্কুল জীবনের বন্ধু কলাবাগান থেকে ট্রান্স সিলভাতে উঠেছে, যাত্রাবাড়ী আসার জন্য। অনেক ক্ষণ বাস না আসাতে বেশ কিছু যাত্রী একসঙ্গে ওঠায় পুরো বাস লোকে লোকারন্য।

এর মাঝেও ছোটভাইয়ের বন্ধু বাসের সামনের দিকে কিভাবে যেন একটা সিট পেয়ে গেল। জ্যাম না থাকায় বাস বেশ দ্রুত চলে এল এলিফ্যান্ট রোডে। কিছু নেমে গেল, কিছু উঠলো। নতুনদের মাঝে ২২/২৩ বছর বয়সের একটা মেয়ে/মহিলা উঠে কোন জায়গা না পেয়ে করুন মুখে এদিক ওদিক তাকিয়ে পরে মলিন মুখে দাড়িয়ে রইলো। তার মলিন মুখ দেখে ছোটভাইয়ের বন্ধুর খারাপ লাগাতে সে তার সিট থেকে উঠে মেয়েটাকে বসতে দিল।

এটা তখনকার দিনে মোটামুটি স্বাভাবিক ঘটনা ছিলো। কারণ, তখনো বাসের ভেতরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার ব্যাপারটা মাথাচাড়া দেয়নি। মেয়েটা সিটে বসেই ছোটভাইয়ের বন্ধুকে প্রথম যে কথাটা বলেছিল তা হল, “আপনি আমার গায়ের কাছে দাড়িয়েছেন কেন? সরে দাড়ান। ” ঘটনা ২: এ বছরের ঘটনা। ছোটভাই রংধনুতে চড়েছে কাকরাইল যাবে।

গেন্ডারিয়া রেল স্টেশনে গাড়ি থামলো যাত্রী উঠানোর জন্য। বেশ কিছু মেয়ে একসাথে উঠেছে। প্রথম যে মেয়েটা উঠেছে সে দেখলো যে, মাঝবয়েসী এক ভদ্রলোক বসা, তার পাশে একই বয়েসের দুই মহিলা। মেয়েটা মোটামুটি মারমুখী ভঙ্গিতে ভদ্রলোকের দিকে তেড়ে এসে খুবই রুঢ় ভাষায় বলল, “মেয়েদের সিটে বসেছেন কেন? ওঠেন। ওঠেন।

” ভদ্রলোকটির রাগার যথেষ্ট কারণ থাকা সত্ত্বেও সে খুব শান্তভাবে বললেন, “আপনি মনে হয় গুনতে ভুলে গেছেন। আপনাদের জন্য বরাদ্দ করা ৯ টি সিট সামনে। আমি ৪ নং সাড়িতে বসা। ” মেয়েটির হুশ ফিরে আসাতে সে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেল যে সব কয়টি সিট ততক্ষণে দখল হয়ে গেছে। কি আর করবে? ড্রাইভারের সিটের পেছনে গিয়ে বিরস বদনে দাড়িয়ে রইলো।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।