আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তসলিমা নাসরিন বনাম প্রভা-রাজিব-অপূর্ব 'স্ক্যান্ডাল'

রিজওয়ানুল ইসলাম রুদ্র

১. পাশ্চাত্য... আমাদের সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক, সামাজিক, পারিবারিক, নৈতিক, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা এথিকস্ গুলো ধ্বংস করে আসছে তিল তিল করে। পশ্চিমা বিশ্ব কাপড় খুলছে, খুলতে উৎসাহ করছে, বাধ্য করছে... এই উৎসাহ টার্ন নিচ্ছে সেক্সুয়াল এক্সাইটমেন্টের দিকে... পশ্চিমা বিশ্ব শারীরিক ভোগ বিলাস বা যৌনানন্দ উপভোগে অতিমাত্রায় উৎসাহী, কুকর্মের ছবি, ভিডিও, চটি বিকৃত কামোদ্দীপনা শরীরে কোনোমতে জাগাতে পারলেই হলো... হোক সেটা ছেলে-মেয়ে, ছেলে-ছেলে, মেয়ে-মেয়ে, মানুষ-পশু কিংবা যন্ত্রসঙ্গমে! আশ্চর্য এক সাইবার দুনিয়া অক্টোপাসের মতো আড়ষ্ট করে রেখেছে মানব-মস্তিষ্ক, কৃত্রিম রোবটিক যন্ত্রে দৃশ্যমান পর্নো ছবি দেখে হরমোন নিঃসরণ... ধর্ম কিংবা সামাজিক মূল্যবোধের তীব্র স্খলন! বাংলাদেশ, সামাজিক ও ধর্মীয় আদর্শে প্রতিপালিত হচ্ছে যে দেশের হাজার বছরের এথিকস, আচরণ, চলাফেরা... রাজনীতির কথাটা উহ্য রইলো, আমরা মাত্র ৩৯ বছরের এক অপরিণত শিশু! চাইলেই আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে দেখিয়ে দিতে পারি--- আমরা কি! ক্রিকেটে আমরা অস্ট্রেলিয়ার মতো টিমকে উড়িয়ে দিয়েছি... যেটাকে ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় 'অঘটন' বলেছিলো বিদেশি কুত্তারা! আমরা কিন্তু যা-তা না... আমরা যে কি এটা কখনোই উপলব্ধি করি না যে আমরা কতটা ভালো, ঠিক সেইসাথে কতটা নোংরা পথে এগোচ্ছি কিছু অমানুষের কুকর্মের জন্য! ২. তসলিমা নাসরিন। একজন লেখিকা। পড়াশোনা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে। তাঁর 'উতল হাওয়া' কিংবা 'ক' এর মতো নিষিদ্ধ আত্মজীবনীধর্মী উপন্যাসগুলো পড়লে অনুধাবন করা যায় কতটা কষ্ট, অপমান, মৌলবাদী এবং মেয়েখোরদের লোলুপ আচরণ ডিঙিয়ে একজন 'লেখিকা' হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

মোটেও বাংলাদেশকে বা নারীদের তিনি 'ন্যাংটা' করেননি তাঁর লেখায়, বরং সতর্ক করেছেন। তীক্ষ্ণ লেখনি আর প্রতিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য নির্বাসিত হয়েছেন... অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকার লাথি দিয়ে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে তাকে, একজন ফরাসি পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখিকাকে! তসলিমা যৌনতাকে তুলে ধরেছেন তাঁর বইয়ে... তবে সেটা মেয়েদের সতর্ক করতে। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত লেখক আত্মজীবনীমূলক রচনায় এ বিষয়টা খোলাখুলিভাবেই তুলে ধরেছেন। তবে তসলিমা নারী এবং বাংলাদেশের মুসল্লিদের ধর্মীয় অনুভূতি বলে একটা জিনিস (!) থাকায় সেটা সহ্য করতে না পেরে এই ব্যবস্থা নেয়া আর কি! যদিও সেই অনুভূতি কার্টুন চিত্র কিংবা ধর্ম-সমালোচনামূলক লেখাতেই বেশি কাজ করে, গ্রামের চেয়ারম্যান কোন মেয়েটা ধর্ষণ করে অন্ত:সত্ত্বা বানিয়ে দিলো... কোন রাজনৈতিক নেতা কিংবা এমপি-মন্ত্রী ফেনসিডিল-মদ-গাঁজা সাপ্লাই দিলেন বাগানবাড়িতে, কিংবা নব্য আগত যুবকের দিকে বাড়িয়ে দিলেন সেটা, মেয়েমানুষ আর মদ--- সেদিকে এইসব মুসল্লির ভ্রুক্ষেপ মোটেও নেই... একেই বলে ধর্মীয় অনুভূতি! সেলুকাস... ৩. একজন জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী ও তার বয়ফ্রেন্ড মিলে নিজেদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের একটা 'ভিডিও' করেছেন উভয়ের সম্মতিতে। না, সেটা কোন চুম্বনদৃশ্য না, জড়াজড়ি, হাত ধরাধরি না... অত্যন্ত জঘন্য এবং কুরুচিপূর্ণ, দেখলেই ঘেন্না লাগে যে আমাদের প্রিয় দেশ সারাবিশ্বে কীভাবে 'ন্যাংটা' হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে, প্রভা আর রাজিবের ভিডিও স্ক্যান্ডালের কারণে... প্রভার সম্মতি দেয়া ঠিক হয়নি আর রাজীব নামধারী বদমাশের সেই ভিডিও ইন্টারনেটে আপলোড করা ঠিক হয়নি আবার প্রভার রাজীবকে ফাঁকি দিয়ে অপূর্বকে বিয়ে করা ঠিক হয়নি আবার অপূর্বর নয় বছরের সম্পর্ক নষ্ট করে প্রভাবে বিয়ে করা... উফফ্ অসহ্য! বাংলাদেশের টিভি মিডিয়া জগতের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে নোংরামি... অশ্লীলতা, মদ আর নারী! এই দুর্দিনে প্রভা-রাজীবের ভিডিও ঘি ঢেলেছে নোংরামির আগুনে... আগুনে পুড়ছে বাংলাদেশের লালিত মূল্যবোধ, নারীদের সম্ভ্রম, শাড়ির আঁচল... তার বদলে শুধুই যৌনবিকৃতি... পশ্চিমা বিশ্বের মতো! ৪. তসলিমার সাথে প্রভা-রাজীবের ব্যাপারটা তুলনা করার কারণ একটাই, এই ভিডিওচিত্র ধারণ করা এবং তুলে ধরা দুটোই গুরুতর অপরাধ।

তসলিমা শুধু বই লিখেছিলেন তাতেই অবস্থা ছিলো কেরোসিন! তাই যদি হয়ে থাকে প্রভা-রাজীবের বিচার হওয়া উচিত যাতে অন্য কেউ এমন অপরাধ করার দুঃসাহস না দেখায়। এদের দুইজনকেই টক শোতে মুন্নী সাহা দিয়ে ফুলের মালা না পরায় দেশ থেকে লাথি দিয়ে বের করে দেয়া হোক... তা নাহলে আবালবৃদ্ধবনিতা উৎসাহিত হবে এহেন কুকর্ম করতে! ধিক্কার প্রভা-রাজীব-অপূর্ব! ধিক্কার... বি.দ্র.: দু:খিত। মুন্নী সাহার নাম ভুলবশত শাহনাজ মুন্নী লিখা হয়েছিল।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।