আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই সেই তেতুল!

নাজমুল ইসলাম মকবুল

এই সেই তেতুল! নাজমুল ইসলাম মকবুল প্রধানমন্ত্রী মাঝে মধ্যে এমন কিছু কথা বলেন যেগুলো শুনলে মানুষের মনে কষ্ট বাড়ে জ্বালাতন বাড়ে। বাড়ে দীর্ঘশ্বাস। এমনি একটি কথা গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় দেখে বিশ্বাস করতে পারছিনা। আমার ধারনা এ ধরনের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর হতে পারেনা। বক্তব্যটি হলো দেশে বিদ্যুত সমস্যা নেই।

মানুষ যাতে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রনা টের পায় সেজন্য ইচ্ছে করে প্রতিদিন দুই ঘন্টা করে লোডশেডিং করার কথা বলেছি। সেজন্য লোডশেডিংয়ের তীব্র যন্ত্রনা আমরা উপভোগ করছি হাড়ে হাড়ে। জনগনকে যন্ত্রনা না দিয়ে দয়া করে শান্তি দিলে আর কিছু না পেলেও অন্তত জনগনের দোয়া পাওয়া যেতো। এরচেয়ে জগন্য একটি বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে দিয়ে দেশ বিদেশে হৈ চৈ ফেলে দিলেন একজন বয়স্ক এবং সমঝদার মন্ত্রী। গণতান্ত্রিক এদেশে যারা হরতাল করবে তাদের ঘরে গিয়ে হত্যা করার গণতান্ত্রিক অর্ডার দিলেন তিনি।

এ গণতান্ত্রিক চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করেই হরতাল ঘোষনা করা হলো সিলেটে। এম. ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবীতে হরতাল। যা আগামী ২৯ আগস্ট পালিত হওয়ার কথা। আয়োজকদের বাড়ীগুলোতে কয়স্থরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখে তারা হরতাল ঘোষনা করেছেন জানিনা। তবে যেহেতু আইন শৃঙ্খলা রাকারী বাহিণী দেশে মহামারি আকারে চলমান হত্যা দুর্নীতি লুটপাট ডাকাতি চুরি দেহ ব্যবসা মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড এবং মাছ তরকারি ফলমুল তথা নিত্য ব্যবহার্য খাদ্যদ্রবে রেকর্ড পরিমাণ ভেজাল মিশ্রণ করে দেশবাসীকে খাইয়ে মুনাফা অর্জন করে নীরিহ জনসাধারনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবার কান্ড কারখানার দিকে খেয়াল না করে সরকার বিরোধী আন্দোলন যারা করেন সে সকল রাজনীতিবিদ নেতা কর্মীসহ সাধারন জনসাধারনদের যেভাবে ব্যক্তিগত চলাচলের উপরও গোয়েন্দা নজরদারী দমন পীড়ন নির্যাতন বেধড়ক পিটুনি ডান্ডাবেড়ি লাগানো মিছিল মিটিং ছত্রভঙ্গ করা মামলা হামলা লাটিপেটা গুলি গ্রেনেড টিয়ারশেল গ্যাস ইত্যাদি ছোড়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে তাতে মনে হয় মন্ত্রীর কথাই হয়তো বাস্তবায়ন হতে বাধা পাবার কথা নয়।

তবে সে বাস্তবায়ন যে শুরু হয়নি তা বলাটাও মনে হয় অন্যায় হবেনা। পুলিশ অফিসারের মেয়ে ঐশিকে প্রথমে যে স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছিল সে স্কুলে মাথায় স্কার্ফ পরে যথেষ্ট শালিনতার মাধ্যমে যেতে হতো। তা ঐশির ভালো লাগেনি। বেপরোয়া জীবন যাপনের জন্য ইংলিশ স্কুলে ভর্তি হতে মা-বাপকে চাপ দিলে তারা রাজী হয়ে ভর্তি করে দেন সেখানে। পত্র পত্রিকায় দেখলাম পুলিশ অফিসারের বেতনের কয়েকগুণ বেশি টাকা নাকি শুধুমাত্র ঐশির হাতখরছই লাগতো।

স্কুলের খরছতো আছেই। স্বামী-স্ত্রী এবং ঐহির হাত খরছের হিসাবতো আলাদা। বাকী রইলো ফ্যমিলি খরছ ও আয়ের খতিয়ান। সীমিত বেতন বাদে বাকী টাকাগুলো হয়তো আলাদিনের চেরাগের মতো হাতে এসে জমা হতো প্রতিনিয়ত। এমন আলাদিনের চেরাগ আরও কতোজনের হাতে পাবার যে সৌভাগ্য হয়েছে তার হিসাবইবা দেবে কে! পত্র পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী পর্দা টর্দা শালিনতা ছেড়ে দিয়ে শুরু হলো ঐশির বেপরোয়া ইংলিশ মিডিয়াম জীবন।

ডিজে নাচ, ইয়াবা, মদ, গাজা সেবন ও অনেক ছেলে বন্ধুদের সাথে রাত বিরাতে চুটিয়ে প্রেম এবং ভোগ উপভোগ। এ দৃশ্য দেখে যারা উপরের অর্ডারের দোহাই দিয়ে হরতাল বন্ধ করতে দেশের নীরিহ নিরস্ত্র জনসাধারনকে কত্তো রকমের পিটুনি দেন গুলি করে রাস্তায় ফেলে দেন সেই বাহিণীরই হতভাগা সদস্য একজন পুলিশ অফিসার পিতা ও তাঁর স্ত্রী শুরু করে দিলেন হরতাল ধর্মঘট নিষেধাজ্ঞা। মেয়ে একা বাহিরে যেতে হরতাল। মেয়ের মোবাইলে হরতাল। বখাটে বন্ধু বান্ধবীতের সাথে আড্ডা ইয়ার্কি মারতে হরতাল।

নেশা করতে হরতাল। প্রেমের নামে বহুজনের সাথে অবাধ মেলামেশা তথা ভোগ উপভোগ করতে হরতাল। ঐশির মতো কিশোরির মাথায় চেপে বসলো মন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নের কুটিল ও দুর্ভাগ্যজনক এক নির্মম ভাইরাস। যারা হরতাল করবে তাদেরকে ঘরে ঢুকে হত্যা করতে হবে। আর রে নেই।

যা করার তাই করলো। হত্যা করলো ঘরেই। আপন জন্মদাতা মা-বাবাকে নিজ হাতে হত্যা করে দেশের ইতিহাসে লেপন করলো কলংকের কালো তিলক। একে একে বেরিয়ে আসতে থাকলো অজানা কাহিণীগুলো। দেশী বিদেশী মিডিয়া ফেসবুক ও ব্লগে শুরু হয়ে গেল আলোচনা সমালোচনার ঝড়।

অনেকেই বলতে শুরু করলেন এই ঐশিই সেই তেতুল। এর মতো আরো যারা আছে তারাই তেতুল। এসব ঘৃণ্য কার্যকলাপ যারাই করে তাদেরকে আল্লামা আহমদ শফী সাহেব তেতুলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এসব তেতুলদের সুপথে ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে বক্তব্যকে বিকৃত করে বা আংশিক প্রচার করে সম্পুর্ণ প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে আলেম উলামাদের নির্যাতন নীপিড়ন গালি দেয়া কাদের অভ্যাস তা আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়না। দেশ তথা দেশের মানুষকে রসাতলে নেবার পরও গহীণ অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাবার মরণখেলায় যারা লিপ্ত এরাই স্বঘোষিত দেশপ্রেমিক।

এরাই দেশের মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে নিজের আখের গোছায়। এরাই আবার গলাবাজি করে। মানুষ হিসেবে বসবাস করার নুন্যতম অধিকারটুকু থেকেও আজ বঞ্চিত দেশবাসী। এই যদি হয় দেশ ও সমাজের অবস্থা তাহলে আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগ বলতে কোন যুগকে বলা হবে তা বিবেকবানদের উপরই ছেড়ে দেয়া ছাড়া আর উপায়ইবা কী!

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।