আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজত,মাদ্রাসা এবং আমরা

জানি না এই বিষয়ে কথা বলার এটা উপযুক্ত সময় কিনা, ধেয়ে আসছে ‘মহাসেন’, তার তাণ্ডবলীলা নিয়ে। কিন্তু কিছু বলার জন্য কিছু দিন থেকেই তাড়না অনুভব করছি। ৫ তারিখের হেফাজতের ঘটনার পর থেকে সবখানেই মাদ্রাসার ছাত্র, হুজুরদের প্রতি বিরূপ মন্তব্য লক্ষ্য করছি। কখনও নিজেও কিছু অসংযত মন্তব্য করেছি। কিন্তু যতই ভেবেছি, নিজেদের নিম্ন রুচির মন্তব্বের জন্য লজ্জিত হয়েছি, অনুতপ্ত হয়েছি।

অনুতাপ হতেই কিছু বলতে চাই। আমরা বলছি, আমদের লিল্লাহ, সদকা খাওয়া মাদ্রাসার ছাত্র,হুজুরদের এতো স্পর্ধা! বলছি, আমদের কোরবানির চামড়ার টাকা নিয়া মাদ্রাসায় জঙ্গি বানাইতেছে! আবার অনেকে এক কাঠি বেড়ে বলছি, মাদ্রাসায়,মসজিদে দান খয়রাত বন্ধ করে দিতে হবে! কিন্তু আমরা বাস্তব সত্যিটা ভুলে যাচ্ছি। আমরা ভুলে যাচ্ছি এতিম শিশুগুলোর প্রতি মমতা থেকে, কিংবা সামাজিক দায়িত্ব থেকে কিন্তু খুব অল্প সংখ্যক মানুষ এই দান খইরাত করছি। আমরা নিজেদের স্বার্থে, এবং শুধু মাত্র নিজেদের স্বার্থেই এই কাজ টি করছি। আমরা সহজ উপায়ে, বিনা শ্রমে জান্নাতের রাস্তা খুঁজছি।

এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ, আরও সহজ কথায় যুগোপযোগী নয়। সামর্থ্যবান যাদের অনুদানে এই প্রতিষ্ঠান গুলো পরিচালিত, তাদের কজনার সন্তানই বা মাদ্রাসা শিক্ষা গ্রহণ করেন তাও আমাদের অজানা নয়। আমি লজ্জিত আমাদের বিত্তবান অভিভাবকদের নিচু মানসিকতায়, তারা নিজের সন্তানদের যেখানে দিচ্ছেন আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সেখানে এই এতিম, দরিদ্র শিশুদের ঠেলে দিচ্ছেন ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থায়, তাদের ঠেলে দিচ্ছেন অনিশ্চয়তার দিকে! তাদের লক্ষ্য একটাই, সহজ পথে জান্নাত! হায়, কি অবিচার! খোদার কি এই অবিচার সহ্য হবে! আমার মতে, যারা এই অনুদান দিচ্ছেন, তারাই পরিবর্তন আনতে পারেন। তারা কর্তৃপক্ষকে(সরকার, মাদ্রাসা বোর্ড) বাধ্য করতে পারেন এই ত্রুটি গুলো শুধরাতে। তারা বলতে পারেন, ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের সন্তানদের আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য, দর্শন শিক্ষা দিতে হবে।

তাদের যুগোপযোগী শিক্ষা ensure করতে হবে। অপার সম্ভাবনার দেশ, বাংলাদেশ। আমরা পরিশ্রমী, মেধাবী। আমাদের ছাত্ররা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকার সব নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের ছাত্ররা O-levels, A-levels পরীক্ষায় রেকর্ড মার্কস পাচ্ছে। তবে কেন লাখ লাখ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মেধাকে আমরা অপচয় করছি! কে জানে, তাদের মাঝে লুকিয়ে আছে আগামীর ইসলামিক দার্শনিক, যারা হয়তো নতুন সংস্কার মুক্ত,জঙ্গিবাদ মুক্ত ইসলামিক বিশ্বের নেতৃত্ব দিবেন।

হয়তো তাদেরই কেউ চিকিৎসা, প্রকৌশল কিংবা বিজ্ঞানের কোন শাখায় রাখবেন যুগান্তকারী কোন ভুমিকা। তবেই ইসলামের সঠিক খেদমত হবে, ইসলাম হেফাজত হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।