আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোগবাদ, র্দূনীতি ও কর্পোরেট বাণিজ্য (সপ্তম পর্ব)


[ বিশ্বায়নের ডামাডোলে বিশ্বজুড়ে আজ চলছে ভোগবাদ দর্শনের প্রচন্ড দাপট। মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত জনগোষ্ঠীর মনন আজ "ভোগেই তৃপ্তি"- এ বেদবাক্যে উজ্জীবিত। চারদিকে 'চাই, চাই আরো চাই" ধ্বনি। খোদ আমেরিকা থেকে শুরু করে পৃথিবীর গরীবতর দেশ এ বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর একাংশ পর্যন্ত এই ভোগবাদ দর্শনকে ক্রমান্বয়ে করে নিচ্ছে জীবনের ব্রত। এ ভোগবাদ দর্শনের স্বরূপ উন্মোচনের লক্ষ্যেই এ লেখার অবতারণা।

কয়েকটি পর্বে এ লেখাটি সম্পন্ন হবে। বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের মন্তব্য কাঙ্খিত। প্রথম পর্ব- Click This Link দ্বিতীয় পর্ব- Click This Link তৃতীয় পর্ব- Click This Link চতুর্থ পর্ব- Click This Link পঞ্চম পর্ব- Click This Link ষষ্ঠ পর্ব- Click This Link সপ্তম পর্ব আমরা যদি আমাদের সমাজকে বিশ্লেষণ করি তবে র্দূনীতির সাথে ভোগবাদের যোগসূত্র খুঁজে পাব। কয়েক দশক আগেও ভোগবাদ যুক্তরাষ্ট্র এবং পাশ্চাত্যের উন্নত কিছু দেশের মধ্যেই সীমিত ছিল। কিন্তু বহুজাতিক কোম্পানীগুলো তাদের পণ্যবাজার সম্প্রসারণ করার লক্ষে বিশ্বায়নের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বে ভোগবাদ অপদর্শনকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

ঠিক এ মূহূর্তে বাংলাদেশে চলছে ইতিহাসের ক্রান্তিকাল। বাংলাদেশ এখন আধা সামন্তবাদী দেশ থেকে পুঁজিবাদি দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। কিন্তু পুজিঁবাদি সমাজ ব্যবস্থায় একটি শক্তিশালী বুর্জোয়া শ্রেণী আবশ্যক। চমনেস্কুর ভাষায় পূঁজিবাদি সমাজ ব্যবস্থায় একটি এলিট বুর্জোয়া শ্রেণী থাকবে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। কিন্তু কৃষি নির্ভর আধা সামন্ততান্ত্রিক বাংলাদেশে সেরূপ বুর্জোয়া শ্রেণী গড়ে ওঠার সুযোগ পায়নি।

মূলত: এই শূণ্যস্থান দখল করেছে লুটেরা বা লুম্পেন বুর্জোয়া শ্রেণী, যারা দেশের বড় বড় রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই সব নেতৃবৃন্দের ব্যাপক দূর্নীতিতে অংশগ্রহণের কার্যকারণ ভোগবাদের আলোকে ব্যাখ্যা করা যায়। বিশেষ করে বিগত বিএনপি-জামাত নিয়ন্ত্রিত জোট সরকারের মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দ, এমপি এবং তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দের রাজকীয় জীবন-যাপন এবং তাদের খরচ করার প্রবণতা বিশ্লেষণ করলে এরা যে ভোগবাদ দর্শনের শিকার এ কথা নি:সন্দেহে বলা চলে। উদাহরণ স্বরূপ উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গের সাম্প্রতিক মডেলের দামী ব্রান্ডের গাড়ী, বিলাসবহুল একাধিক এপার্টমেন্ট, বাগানবাড়ী, ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানার মালিক হওয়া ইত্যাদি তো ভোগবাদেরই চূড়ান্ত বহি:প্রকাশ। বলাবাহুল্য, জনগণের টাকা লুন্ঠন করেই এ লুটেরা গোষ্ঠি ভোগের মাধ্যমে পেয়েছে একধরণের আত্মতৃপ্তি।

যদি নিরপেক্ষ তদন্ত চালানো যায় তাহলে দেখা যাবে যে, আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের বড় বড় র্দূনীতির সাথে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আমাদের দেশে বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর স্বার্থ দ্বিবিধ। প্রথমত: আমাদের দেশে তাদের উৎপাদিত পণ্য এবং পরিষেবার বাজার সৃষ্টি করা। দ্বিতীয়ত: আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষত: তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি হাতিয়ে নেওয়া। বিগত সরকারগুলোর মতোনই বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারও বহুজাতিক কোম্পানির গুরু যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দেশের স্বার্থবিরোধী অস্বচ্ছ বেশ কিছু চুক্তি করতে যাচ্ছে বলে জানা যায়।

অস্বচ্ছ এই সব চুক্তির বেশীরভাগই হচ্ছে কর্পোরেট স্বার্থে প্রণীত তা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য কর্পোরেট স্বার্থ হচ্ছে ব্যবসায়িক স্বার্থ এবং তা মানুষের নৈতিক নীতিমালাকে গ্রাহ্য খুব কমই করে। চলবে ....
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

আরো পড়ুন


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।