আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৮ বছরের এক শিশুকে নষ্টা বানালো বার্থি বাজার সভাপতি ও এক আ. লীগ নেত



ধর্ষণের চেষ্টার বিচার চাওয়ায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় বাজার কমিটি ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা আট বছরের শিশু কন্যাকে নষ্টা আখ্যায়িত করে তিন দিনের মধ্যে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। রোববার বিকেলে এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা গেছে, ভূমিহীন আলম বেপারী ৭ বছর ধরে স্ত্রী নাছিমা বেগম ও একমাত্র মেয়ে আনোয়ারা খানমকে নিয়ে গৌরনদী উপজেলার বার্থী বাজার সংলগ্ন সড়ক ও জনপথের জমিতে একটি কুঁড়েঘরে বসবাস করে আসছে। গত শুক্রবার সকালে প্রতিদিনের মতো তিনি দিনমজুরের ও তার স্ত্রী নাসিমা বেগম ঝিয়ের কাজ করতে যান। বেলা ৩টার দিকে তার বসতঘর সংলগ্ন বার্থী বাজারের তেলের দোকানদার উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের এসাহাক মোল্লার ছেলে রিপন মোল্লা (১৮) আনোয়ারাকে কথা বলার জন্য দোকানে ডেকে নিয়ে যায়।

এক পর্যায়ে বন্ধ দোকানের মধ্যে নিয়ে রিপন শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় সে চিৎকার দিলে বখাটে রিপন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধরে খুঁটির সাথে আঘাত করে। এতে শিশুটি মারাত্মক আহত হয়। শিশুটি কাঁদতে থাকলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে রিপনের লোকজন বাধা দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে শিশুটিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

ভূমিহীন আলম বেপারী শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, তিনি ও তার স্ত্রী বাড়িতে ফিরে এ ঘটনা শুনে মেয়েকে নিয়ে রাতে বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও রিপনের আত্মীয় মো. শহিদুল ইসলাম বেপারীর কাছে বিষয়টি জানিয়ে বিচার চান। তারা বিচার না করে উল্টো তাদের শাসিয়ে দেয় এবং এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে গত শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে আনোয়ারা ও তার বাবা-মা ঘটনার বর্ণনা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. শহিদুল ইসলাম শিশুটিকে নষ্টা মেয়ে আখ্যায়িত করে তিন দিনের মধ্যে স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. শহিদুল ইসলামের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা স্থান ত্যাগের নির্দেশ প্রদানের কথা স্বীকার করে শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বলেন, মেয়েটি নষ্টা প্রকৃতির।

বাজারের স্বার্থেই এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিশুটির মা নাছিমা বেগম জানান, তারা সামাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার সংস্থার কাছে ন্যায্য বিচারের দাবি করেন। সংস্থার প্রতিনিধিরা রোববার সকালে শিশুটিকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. লাকী পারভীনের তত্ত্বাবধানে শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গৌরনদী থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, শিশুটির মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

আসামিদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে। (শীর্ষ নিউজ ডটকম/এজে/এসএস/এসএম/৯.৪৪ঘ)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।