আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কথোপকথন-৪

I am what I am and that's how I would be. No I am not stubborn. I just want to be myself.

কথোপকথন-১ কথোপকথন-২ কথোপকথন-৩ -ফোন নাম্বারটা আজো দিলেনা। "কেন বলো তো? কী দরকার?" -তোমার গলার আওয়াজটা খুব শুনতে ইচ্ছে করে। তোমার হাসতে হাসতে ভেঙ্গে পড়াটা খুব দেখতে ইচ্ছে করে। "হাসালে। ফোন নাম্বার পেলে কি দেখতে পাবে?" -তা'নয়।

তবে মনের চোখে অনেক কিছু দেখে নিতে পারতাম। "এভাবে পোষাচ্ছেনা বলো?বেশি লোভ করছো, বুঝতে পারছো তো?" -তা নাহয় করলামই। একটা ফোন নাম্বারই তো, আর তো কিছু নয়। মাঝে মাঝে মনিটরের দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে থাকি তুমি কখন একটু দেখা দেবে, দুটো কথা বলবে। নাম্বারটা থাকলে একটা মেসেজ অন্ততঃ পাঠিয়ে জানাতে পারতাম আমি তোমার অপেক্ষায় আছি।

"তারপর কী হতো জানো? আমি যতক্ষণ অনলাইন না-হবো, তুমি মেসেজের পর মেসেজ পাঠাতেই থাকতে। " -আমি কি খুব বিরক্ত করি? "ওমা!! করোই তো! এতদিনেও সেটা জানোনি?" -রাগ করলাম কিন্তু! "হা হা হা, করো রাগ। আমিই খালি রাগ করবো, তুমি করবেনা, তা কি হয়?" -একদিন চলো দেখা করি! "সেই প্রবাদটা জানো? খাইতে দিলে শুইতে চায়? তোমার দেখি এখন সেই অবস্থা। " -চলো না, কাছে পিঠে কোথাও! "কেন? কী হবে দেখা করে?" -তোমাকে একটু দেখতে খুব ইচ্ছে করে। জানো তো, বয়স হয়ে যাচ্ছে।

কোনোওদিন মরে টরে যাই যদি, তাই একটু চোখের দেখা দেখে মনটা জুড়াতো। এরপরেও মরলেও আফসোস থাকতোনা। "খুব ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা, না? আমি ভুলিনি এইধরণের ব্ল্যাকমেইলিং করে তুমি আমাকে একসময় হাতের পুতুল বানিয়ে রেখেছিলে। আজ আর হবেনা। মরলে মরবে, সবাই মরে।

আমিও মরবো। কার কী যায় আসে?" -তুমি কি আগের মতই আছো? "আগের মত মানে? কিরকম?" -তোমার সেই উচ্ছ্বল হাসি, ঝিকঝিক করা দুইচোখ, চঞ্চল মুখভঙ্গীমা! দুইবেণী দুলিয়ে আপনমনে গান গাওয়া...মুখ ফুলিয়ে অভিমান করা আবার মুহূর্তেই হেসে আকুল হওয়া। আমার প্রতি প্রচন্ড একটা মায়া ছিল তোমার। সবকিছু আমার সাথে ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা, এত ছোট বয়সে কত উদার ছিলে তুমি। "আর? বলতে কি কিছু বাকি রাখলে? তোমাকে মুগ্ধ করার সে কী আগ্রহ আমার!! খুব সুন্দর হতে ইচ্ছে হতো, তোমার চোখে পড়তে ইচ্ছে করতো।

তোমার ক্লাসমেট মেয়েগুলোকে দূর থেকে কতশতবার অভিশাপ দিয়েছি, তবুও তারা কেউ মরেনি। আর আমি কান্নায় ভেসে গিয়েছি আড়াল থেকে। " -হা হা হা সত্যি? কাকে অভিশাপ দিয়েছিলে বলো তো? জানতাম না তো?? "তুমি জানবে কী করে? আমি কি তেমন কোনও জরুরী কেউ ছিলাম যে তুমি একটু খেয়াল করে দেখবে?" -ছিলে। "না, ছিলাম না। " -সত্যি ছিলে।

তুমি ওভাবে বিয়ে করে ফেলার পর হঠাৎ করে আমার সবকিছু ধূসর হয়ে গেল। আমার একেকটা মুহূর্ত কেটেছে বছরের মত। কেমন অদ্ভূত অনুভূতি ছিলো সেটা। রাগ, অভিমান, বেদনা, সমস্ত একাকার হয়ে বেঁচে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। একেকবার ইচ্ছে হচ্ছিল তোমাকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে আসি।

আবার মনে হচ্ছিলো বিষ খেয়ে মরে যাই। আমি সেভাবে মরে গেলে হয়তো তোমার শাস্তিই হতো। "কই, করলেনা তো কিছুই? আমি তো শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম তুমি আসবে। এসে আমার বিয়ে ভেঙ্গে দেবে, আর আমাকে ডেকে নিয়ে যাবে। " -সেই অধিকার কি ছিলো আমার? "অধিকার কেউ কাউকে দেয়না।

আদায় করে নিতে হয়। আজ যতটুকু মূল্য দিচ্ছো আমায়, তার কানাকড়ি সেসময়ে দিলে অনেক ঝড় এড়ানো যেত। " -তোমার জেদ খুব বেশি, জানো? "আর তোমার বেশি ইগো। তোমার এই ইগোর সামনে আমার সমস্ত ভালবাসা তুচ্ছতায় ভেসে গিয়েছে, দেয়ালে মাথা ঠুকে কেঁদেছি কতো। নিজেকে নিবেদন করেই গিয়েছি বারবার।

কিন্তু আমাকে যে আদৌ ভালবাসতে, সেটাও বুঝতে পারিনি ভালোমত। " -আমার ভুল হয়েছে। আমি স্বীকার করছি আমার অনেক বড়ো ভুল হয়ে গিয়েছে। "এখন স্বীকার করে কী লাভ, বলো?" -শোধরানো তো যায়, যায় না? "একটা জ্বালা ধরানো ক্ষত শুকিয়ে তাতে দাগটা থেকে গেছে শুধু। ক্ষত মিলিয়ে গিয়েছে, শুধু স্মৃতি রয়ে গিয়েছে।

এত বছর পর, তুমি কী শোধরাবে, বলো?" -একবার সুযোগ দিয়েই দেখ না। বেঁচে তো আছি। এই জীবন তো আছে এখনও। "আমি তো নিজের জন্যে বাঁচিনা। সে বাঁচাকে জীবন বলেনা।

এসব কথা থাক। আজ আর এসব শুনতে ভালো লাগেনা। " -আমি চাই তুমি এই কথা মনে রেখো। যখন, যেভাবে, যে-কারণেই ডাকো না কেনো, আমাকে তুমি তোমার পাশে পাবে। "তোমাকে কেন ডাকবো? আমাদের জীবন আলাদা।

এভাবে তোমাকে ডাকা যায়না। জীবনটা বইয়ের পাতা নয়। অনেক বাঁধনে আটকে থাকি, সেসব ছেড়ে তোমাকে ডাকা, কিংবা তোমার কাছে যাওয়া সম্ভব নয়। " -আমি তবে অপেক্ষায় থাকবো। একদিন বাঁধন ঢিলে হবে।

হয়তো আমাদের সূবর্ণ সময়টা পেরিয়ে যাবে। তবুও আমি অপেক্ষায় থাকবো। একদিন তুমি আমাকে ডাকবে। "উফ, তুমি না, পাগল একটা। বাদ দাও তো এসব কথা!" -বলো না, ডাকবে না?? "আরে আমি কী জানি? মেয়ে দুটো বড় হচ্ছে, তোমারও ছেলেমেয়ে আছে।

এমনভাবে কথা বলো, যেন পৃথিবীতে তুমি-আমি ছাড়া আর কেউ নেই। " -আমাদের বাচ্চাদেরও তো একদিন নিজের জীবন হবে। তখন কী হবে? তখন ডাকবে না? "আচ্ছা, সেটা তখন দেখা যাবে। " -আমি তবে কালকেই ওদের সবকয়টার বিয়ে দিয়ে দেবো!!" "আচ্ছা, তোমাকে রোজায় ধরেছে, না? পাগলের মত কথাবার্তা বলছো!" -আমি তো পাগলই। "অনেক হয়েছে।

পরে কথা হবে। এখন উঠি?" -ডাকবে তো?? "হা হা হা, আচ্ছা যাও, ডাকবো। ওদের বিয়েটা হয়ে যাবে যেদিন, সেদিন নতুন করে ভাবতে বসবো। ঠিক আছে তো এবার?" -যদি দেখতে পেতে, আমার গাল ভর্তি হাসি! "আমি জানি। দেখতে হবে না।

পাগল একটা!!" কথোপকথন-৫ কথোপকথন-৬ (শেষ)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।