আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্রষ্টা-পরকালের আজাব;এসব কি শুধুই অন্ধ-বিশ্বাস নাকি যুক্তির উপর অধিষ্ঠিত চরম সত্য বিষয় ?

নিভূতচারী এই জীবনে ব্লগেই হয়ে ওঠে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন

এই লেখায় স্রষ্টা-পরকালের আজাব-ধর্ম এই বিষয়গুলো কি শুধুই অন্ধ-বিশ্বাস নাকি যুক্তির উপর অধিষ্ঠিত চরম সত্য বিষয়, সেটা আলোকপাত করবো বহুদিন ধরে এ বিষয়ে নানা মতের উপর গবেষনা করে যেমনঃ যুক্তিবাদ, নানা রকম ধর্মবাদ, ধর্মবিদ্বেষবাদ(নাস্তিক্যবাদ),প্রকৃতিবাদ ইত্যাদির উপর গবেষণা করে যা পেলাম আজ সেটাই এই লেখায় তুলে ধরবো । বিশেষ দ্রষ্টব্যঃআমার মত ক্ষুদ্র মানুষের যুক্তিসমূহের কারনে ,আমার এই পোষ্টের কারনে কারো অনুভূতিতে যদি আঘাত লেগে যায় তবে তার কাছে আমি বিনয়ের সঙ্গে অগ্রিম মার্জনা চেয়ে নিচ্ছি উলেখ্যঃ ব্যক্তিগতভাবে আমি শয়ন , এ বিষয়টিতে আগাগোড়া একজন যুক্তিবাদী মানুষ । যুক্তির বিচারে যে ফলাফলটা পেলাম তাই আজ এই লিখায় তুলে ধরবো । অনুচ্ছেদঃ১ ইশ্বর কি আসলেই বিরাজমান ? নাকি ইহা এক ধরনের অন্ধ-বিশ্বাস ?? বিশ্লেষনঃ ইশ্বর বিদ্যমান কিনা, সেটাকে অন্ধ-বিশ্বাসের দৃষ্টিকোন থেকে না দেখে , চলুন একটু যুক্তির দৃষ্টিকোন থেকে দেখি । বস্তুবাদী নাস্তিকেরা দাবি করে সমস্ত কিছুই জাগতিক পদার্থের তৈরি ।

আসলেই এই পৃথিবীটি বিভিন্ন ধরনের পদার্থের সমন্বয়ে তৈরি । তেমনি প্রতিটি জীব দেহও তার পিতা-মাতার শুক্রানু-ডিম্বানু নামক জাগতিক পদার্থেরই সমন্বয়ে তৈরি , বস্তুবাদীদের এ যুক্তিটি মানলাম । কিন্তু এই জীবদেহের মধ্যে মনটি এলো কোথা থেকে??, অনুভূতি আসলো কোথা থেকে?? অনুভূতি ধারণকারী আত্মার তৈরির রহস্যের ব্যাপারে বস্তুবাদীতার আলোকে তাদের কাছে থেকে যুক্তিযুক্ত কোন যুক্তি তো পাচ্ছি না । যে মন ভয় পায়, যে মন ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে, নানান ধরনের অনুভূতি লালন করে, সেই মনের মত একটি অতি-প্রাকৃত সত্বার অস্তিত্বই প্রমান করে এর সৃষ্টির পেছনে অবশ্যই কেউ না কেউ একজন আছেন । আর তিনিই হলেন এই জগতকূলের স্রষ্টা -মহান সৃষ্টিকর্তা ।

পদার্থের তৈরি এই প্রকৃতির মাঝে, পদার্থের তৈরি এই জীবদেহের মাঝে অতি প্রাকৃত সত্বা আত্মার ঊপস্হিতিই প্রমান করে দেয় যে, অনুভব-অনুভূতি ধারনকারী রহস্যময় সত্বা মনের সৃষ্টির পেছনে , মহান সৃষ্টিকর্তা নামধারী কেউ না কেউ একজন আছেন। সুতরাং যুক্তির দৃষ্টিকোন থেকেই প্রমান করা যায়, মহাশক্তিধর ইশ্বর বিদ্যমান। অনুচ্ছেদঃ২ পরকাল বলতে আসলেই কি কিছু আছে? পরকালের আজাব বলতে আসলেই কি কিছু আছে?? নাকি এসব এক ধরনের গাঞ্জা, অন্ধ-বিশ্বাস ??আসুন এই প্রশ্নের উত্তর খুজি ,তবে সেটা শুধুমাত্র যুক্তির দৃষ্টিকোন থেকে । বিশ্লেষণঃ প্রথমেই একটা কাল্পনিক গল্প বলিঃ “এক চোর চুরি করার পর মরার পরে ইশ্বরের কাঠগড়ায় এসে হাজির হলো । ইশ্বর তারে বললোঃ তুই তো চুরি করছোস ।

মহাপাপ করছোস । তোরে তো এখন মাইর দিমু। জবাবে তখন ঐ চোর ব্যাটা ইশ্বরকে উদ্দেশ্য করে বললোঃ ঐ মিয়া ভগবান , চুরি করা যে পাপ ,সেইটাই তো আমি আগে জানিতাম না। চুরি যে পাপ, সেইটা আগে জানলে তো ,এই আকাম আমি করতাম না । অতএব আমারে আজাব থ্যাইকা মাফ কইরা দেও ,শাস্তি থ্যাইকা মাফ কইরা দেও” ।

প্রতিটি মানুষের মাঝেই বিবেক নামক এক বিশেষ ধরনের সত্বা বিরাজমান । যে সত্বাটি কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ সেটা নির্ধারণ করে । ভালো কাজকে এপ্রিসিয়েট করে ,আবার খারাপ কাজের বেলায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখায়-বাধা দেয় । আমাদের মাঝে যদি বিবেক না থাকতো ,তবে গল্পের ঐ চোরের মত আমাদের কাছেও “এটা যে পাপকাজ- আগে জানলে করতাম না“ এই টাইপের অজুহাত দাড় করানোর সুযোগ থাকতো । কিন্তু আমাদের ভিতর বিবেকের উপস্হিতি থাকার দরুন , পরবর্তিতে কোন অজুহাত তৈরির সুযোগ আর থাকছে না ।

বিবেকের মত এই অতি প্রাকৃত সত্বার ঊপস্হিতিই প্রমান করে দেয় যে, আমাদেরকে অবশ্যই অবশ্যই জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে । কেননা জবাবদিহিতা যদি নাই থেকে থাকে , তবে বিবেকের এই উপস্হিতিরই তো কোন দাম থাকে না । আমি আবারো বলছিঃ যদি জবাবদিহিতা নাই থেকে থাকে , তবে বিবেকের এই উপস্হিতিরই তো আদৌ কোন দাম থাকে না । সুতরাং আগেভাগেই ইনপুট করা- আমাদের মাঝে বিবেকের এই ঊপস্হিতিই প্রমান দেয় পরকালের অস্তিত্ব বিদ্যমান ,জবাবদিহিতা বিদ্যমান। সুতরাং , অবশ্যই পরবর্তীতে কঠিন বিচারের মুখোমুখি আমরা ।

অনুচ্ছেদঃ৩ ইশ্বর এবং পরকালের অস্তিত্ব তো আমরা যুক্তির আলোকেই খুজে পেলাম । এবার আসুন দেখি ইশ্বর আর পরকালের সাথে বিশেষভাবে যুক্ত ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে যুক্তির কাঠগড়ায় কচুকাটা করা যায় কিনা । তবে ধর্মগুলোকে যতোই এনালাইসিস করেছি , এনালাইসিসকৃত অনেক ধর্মই অসাধারণ কিছু বস্তুনিষ্ঠ তত্ব , অসাধারণ কিছু যুক্তি আবার তার সঙ্গে গাজাখুরি ভিত্তিহীন যুক্তিহীন গাঞ্জা অংশও পেয়েছি । তবে অনুচ্ছেদঃ১ এবং অনুচ্ছেদঃ২ অনুযায়ী যেহেতু যুক্তির আলোকেই ইশ্বর এবং পরকালের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায় সেহেতু যুক্তির আলোকে নিশ্চয়ই আমরা প্রচলিত ধর্মের সঠিক যুক্তিগ্রাহ্য অংশটিকে খুজেও পাবো । প্রসঙ্গঃ১ খৃষ্ট ধর্মঃ খৃষ্টানেরা দাবি করে যিশু খৃষ্ট সৃষ্টিকর্তা দূত ।

যিনি তার জীবৎদশায় সারাটি জীবন ধরে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য করার শিক্ষা মানুষকে দিয়ে গেছেন । মহান সৃষ্টিকর্তার সাথে অন্যকারো তুলনা কিংবা মহান সৃষ্টিকর্তাকে বাদ রেখে অন্য কারো কাছে শরনাগত হওয়া যে মহাপাপ সেই শিক্ষা তিনি আজীবন দিয়ে গেছেন । কেননা দেবার মালিক হলেন আল্লাহ ,সেই আল্লাহ সোবানহুতালাকে বাদ রেখে যদি আমরা অন্যকারো কাছে হাত পাতি ,তাহলে দেবার যিনি মালিক তাকে তো একধরনের অসম্মানই করা হয়, নাকি ?এতে করে সৃষ্টিকূলের কাছ থেকে আনুগত্য/পূজা পাবার হক অধিকার থেকে স্রষ্টাও তো বঞ্চিত হন ,নাকি ?সৃষ্টিকূলকে তৈরি করেছেন সৃষ্টিকর্তা , সুতরাং সৃষ্টিকূলেরও মাথানত করা উচিৎ কিংবা শরণাগত হওয়ার উচিৎ তাদের সেই মহান সৃষ্টিকর্তারই কাছে । স্রষ্টা ব্যতিত অন্য কারো কাছে শরণাগত হওয়ার অর্থ মহাপরাক্রমশালী স্রষ্টাকেই এভোয়েট করার দূঃসাহসিক চ্যালেঞ্জ ছূড়ে দেওয়া। যিশু খৃষ্ট, যিনি মানবকূলকে শিক্ষা দিয়ে গেছেন জগৎ স্রষ্টার আনুগত্য করতে ।

জগৎ স্রষ্টার আদেশকৃত পথে মানবকূলকে জীবন পরিচালিত করতে যিনি আজীবন শিক্ষা দিয়ে গেছেন । যিশু খৃষ্টের ধর্ম প্রচারনার এরূপ কার্যক্রম বিশ্লেষন করলে মনে হবে তিনি আদৌতেই ছিলেন সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরিত সত্যিকারের বলিষ্ঠ একজন মানব দূত । তবে বর্তমানে খৃষ্টান সমাজে প্রচলিত যে ধারনাটি আমাকে বিভ্রান্ত করেছে সেটি হলোঃ ‘খৃষ্টান সমাজ যিশু খৃষ্টকে ইশ্বরের পুত্র হিসেবে গণ্য করে থাকেন’ যদিও এই দাবিটি যিশু খৃষ্টের জীবৎদশায় কখনো ঊনি করেন নি বলে জনশ্রুতি আছে । বরং পৃথিবী থেকে তাঁর প্রস্হানের অনেক পরে ‘যিশু ইশ্বরের পুত্র ছিলেন’ এই ধারনাটি খৃষ্টান সমাজে নতুন ভাবে নাকি সংযুক্ত হয় । তবে তাদের এই ধারনাটি কেন আমাকে বিভ্রান্তির মধ্য ফেলে দিয়েছে, এবার সেটার ব্যাখ্যা দেইঃ বিজ্ঞানের সূত্র থেকে জানা যায়, পূর্ব পুরুষের জেনেটিক্যাল বৈশিষ্ট্য তার পরবর্তি প্রজন্ম ধারণ করে ।

এখন যিশু খৃষ্ট যদি ইশ্বরের পুত্রই হয়ে থাকেন ,তাহলে ইশ্বরের জেনেটিক্যাল বৈশিষ্ট্য-গুনাবলী পুত্র যিশুর মধ্যও সঞ্চিত থাকবে । এতে করে একই রকম অতি-প্রাকৃত জেনেটিক্যাল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন দুই জনার আবির্ভাব ঘটবে , একই ধরনের জেনেটিক্যাল বৈশিষ্ট্য ধারন করার কারনে এমতাবস্হায় স্রষ্টাও যেমন ‘একক’ স্বার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হইবেন, যিশুও তেমনি ‘একক’ স্বার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হইবেন । এমতাবস্হায় ২ জনের ঊপস্হিতি একে অপরের স্বার্বভৌমত্বকেই ক্ষুন্ন করিবে । যেমনঃ স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যন্তরের যদি কোন একটি অংশ নিয়ে আরেকটি স্বাধীন-স্বার্বভৌম রাষ্ট্র তৈয়ার হয় ,তাহলে যেমন বর্তমান কালের বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হইবে,ঠিক তেমনি যিশু খৃষ্টকে ইশ্বরের পুত্র হিসেবে গণ্য করলে একই ধরনের জেনেটিক্যাল বৈশিষ্ট্য ধারনকারী ২ জনের ঊপস্হিতি ,একে অপরের স্বার্বভৌমত্বকে ক্ষুন্ন করিবে । কিন্তু সত্যিকারের যিনি ইশ্বর ,তাকে তো সঙ্গানুসারে অবশ্যই একক স্বার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হতে হবে ।

অতএব যিশু খৃষ্টকে ইশ্বরের পুত্র হিসেবে গণ্য করিলে ,প্রকৃতই যিনি ইশ্বর্‌, সেই পরাক্রমশালী স্রষ্টার ‘একক’ সার্বভৌমত্ব নামক বিশেষ গুনটিকেই খাটো করা হবে , যেটা এক কথায় স্রষ্টার সাথে দৃষ্টতার শামিল । এ থেকে বোঝা যায়- পৃথিবী থেকে ইশ্বরের দূত যিশু খৃষ্টের প্রষ্হান করার পর স্রষ্টা কর্তিৃক নির্দেশিত আদি খৃষ্ট ধর্ম এবং স্রষ্টার কর্তিৃক প্রেরিত- ঐশি গ্রন্হ পবিত্র বাইবেলের অনেক কিছুই বিকৃতির শিকার হয় । প্রসঙ্গঃ২ হিন্দু ধর্ম । অনুচ্ছেদঃ১ এর মত হিন্দু ধর্মও ইশ্বরের অস্তিত্বকে বিশেষভাবে স্বীকার করে নিয়ে বলেছেঃইশ্বর এক-অদ্বিতী্‌য়,এবং স্বয়ম্ভু । স্রষ্টা সর্বশক্তিমান এবং মহাপরাক্রমশালী নিয়ণ্ত্রক ।

কিন্তু হিন্দু ধর্মে সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে অসাধারণ এই একটি অবস্হান থাকা সত্বেও এই ধর্মবাদে অনেক কিছুই আমার কাছে যুক্তিহীন বিভ্রান্তকর বলে মনে হয়েছে । যেমনঃ হিন্দু ধর্মে বর্তমানে প্রচলিত আছে-রাম চন্দ্র নিজেই নাকি ভগবান । সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এজন্য “হরে কৃষ্ণ-হরে রাম” মন্ত্র সর্বদাই ধারন করে- লালল করে । রামায়ণে বর্নিত আছে;রাম চন্দ্র রাবনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়া আগ মুহূর্তে তিনি শক্তি প্রার্থনা করে, শক্তির দেবী দূর্গার পূজা করেছিলেন । আমার প্রশ্ন- রাম যদি নিজেই ভগবান হয়ে থাকেন তাহলে তিনি নিজেই তো সর্বশক্তিমান ।

সেই সর্বশ্রেষ্ঠ-সর্বশক্তিমান ভগবানকে আবার আরেক জন শক্তির দেবীর কাছে শক্তি চেয়ে হাত পাততে হলো কেন!! এতে কি ভগবান রামচন্দ্রের সর্বশক্তিমান নামক মহান বৈশিষ্ট্যটাই কি বিপন্ন হয়ে পড়লো না ? ‘রাম চন্দ্রের শক্তির দেবী দূর্গার পূজা’ নামক এই অধ্যায়টির মাধ্যমে হিন্দু ধর্ম মূলতঃ স্রষ্টার সর্বশক্তিমান এই মহান বৈশিষ্ট্যটাকেই সরাসরি অপমান করেছে । এতে প্রকৃত স্রষ্টার সর্বশক্তিমানত্ব কি ক্ষুন্ন হলো না ?এতে কি প্রমান হয় না যে -রামচন্দ্র নিজে সর্বশক্তিমান ভগবান ছিলেন না , বিধায়-ই তো তাকে আরেকজনের কাছে শক্তির জন্য হাত পাততে হয়েছিল । অতএব হিন্দু ধর্মে লীলার নামে ‘ভগবান রাম চন্দ্রের অবতার’ শীর্ষক এই অংশ মূলতঃ স্রষ্টার সর্বশক্তিমানত্বকেই অপমান করা-এক প্রকার যুক্তিহীন –ভিত্তিহীন, একটা বিভ্রান্তকর অংশ । রামকে ভগবান সাজিয়ে আসল স্রষ্টার সর্বশক্তিমানত্বকে এভাবে অপমান -অপদস্ত করার দরুন বিভ্রান্তবাদ লালনকারীদেরকে স্রষ্টার কঠিন রোষানলে পরতে হতে পারে । প্রসঙ্গঃ২ ইসলাম ধর্মঃ আল্লায় নাম দিয়েছে যার শান্তির ধর্ম,উল্টা তালেবানেরা যারে বানাইতাছে জঙ্গি ধর্ম ।

এবার আসি ইসলাম প্রসঙ্গেঃ প্রথমে ইসলামতত্ব কি দাবি করে সেইটা আগে শুনি ,এরপর তা যুক্তি দিয়ে বিচার করবো। ইসলামতত্বের দাবিঃ ইসলাম ধর্মের প্রচারক হইলেন হজরত মুহম্মদ (সাঃ) । তিনি এসে মানুষের কাছে কোরআন শরীফের আয়াত তুলে ধরে বললেন, কোরআন হইলো মানুষ ও জ্বীন জাতির জন্য স্রষ্টা কর্তিৃক প্রেরিত বিধি বিধান ,তিনি আরও বলিলেনঃএরকম আরও অনেক বিধি-বিধান সম্বলিত ঐশি বাণী এর আগেও আল্লাহতালা মানুষের জন্য প্রেরণ করেছিলেন। উদাহরন দিতে গিয়ে তিনি বললেন খৃষ্টানদের বাইবেল(ইঞ্জিল শরীফ) এর কথা,ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ ‘তৌরাত’-এর কথা, এছাড়া আরও কয়েকটি ঐশি গ্রন্হের কথা। এমনকি কোরানে এক ডজনেরও বেশিবার ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ ‘তৌরাত’-এর নাম এসেছে, এসেছে তাদের নবী দাউদ (আঃ) এবং মুসা (আঃ)-এর নাম,এছাড়াও এসেছে খৃষ্টানদের নবী ঈসা(আঃ)মানে যিশু খৃষ্টের নামও।

হজরত মুহম্মদ (সাঃ)আরও দাবি করিলেন তিনিই শুধু একমাত্র আল্লাহ প্রেরিত দূত নন ,তাঁর আগেও পৃথিবীর প্রতিটি জনপদেই যুগে যুগে নাকি তাঁর মত অসংখ্য দূত এসেছিলো মানুষের কাছে আল্লাহর নির্দেশমালা প্রেরণের ঊদ্দেশ্য। তিনি আরও বলিলেলঃআল্লাহ প্রতিটি জনপদেই যুগে যুগে মানুষকে সঠিক পথে চলার জন্য নবী প্রেরণ করেছিলেন, ঐশি গ্রন্হ প্রেরণ করেছিলেন । কিন্তু মানুষ স্রষ্টার ঐসব দূতদের কথা-স্রষ্টা প্রেরিত ঐশি গ্রন্হের নির্দেশমালা কথা প্রথম কিছুদিন ভালোভাবে মেনে চললেও পরবর্তিতে তারা নির্দেশনার অবাধ্য হতে শুরু করে ,এমন কি তারা স্রষ্টা কর্তিৃক প্রেরিত- ঐশি গ্রন্হসমূহগুলোকেও নিজেদের মনমত বিকৃতি করা শুরু করে”। এভাবে শয়তানের ধোকায় পড়ে মানুষ একটি ঐশি গ্রন্হ বিকৃতি করেছে তো, জবাবে আল্লাহও মানষকে সঠিক পথে চলার জন্য পুনরায় আরেকটি ঐশি গ্রন্হ প্রেরন করেছে । এরূপ ঘটনার বার বার পূনারাবৃত্তি ঘটতে থাকে ।

এভাবে অসংখ্য নবী এবং অসংখ্য ঐশি বানী এ দুনিয়াতে বার বার আসতে হয়েছে । কোরআন শরীফের আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে হজরত মুহম্মদ (সাঃ)আরও দাবি করিলেনঃ তিনিই শেষ নবী, এরপর আল-কোরআনের মত নতুন কোন ঐশিগ্রন্হ নিয়ে আল্লাহর তরফ থেকে আর কোন নবী এই পৃথিবীতে আর আসবে না । যেহেতু আল-কোরআনই শেষ ঐশিগ্রন্হ তাই আগের ঐশিগ্রন্হগুলোর মত আল-কোরআন কে যাতে কেউ বিকৃতি করতে না পারে ,এজন্য এর হেফাজতের দ্বায়িত্ব আল্লাহ সরাসরি নিজেই নিয়েছেন এবং পূর্বোক্ত বিকৃত হওয়া সকল ধর্ম বাতিল হিসেবে গণ্য করে ইসলামকেই চূড়ান্ত ধর্ম হিসেবে মানুষের জন্য স্রষ্টা প্রেরণ করেছেন’ আল-কোরআনের আয়াত নাজিল হওয়ার সিস্টেমটাই মূলত আমার কাছে কৌতুহলের সৃষ্টি করেছে । ইস্লামিষ্ট মতে,অহির মাধ্যমে আসা , স্রষ্টার নির্দেশমালা আল-কোরআনের আয়াতগুলো নাকি হজরত মুহম্মদ (সাঃ)শুনতে পেতেন এবং শোনার পর তিনি তা তাঁর অনুসারীদের কাছে ব্যক্ত করতেন । এভাবে ঐশিগ্রন্হ কোরআনের বানী নাকি এ পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয়! এবার সামান্য সময়ের জন্য একটু অন্য প্রসঙ্গে যাইঃ বাইবেলে একটা ঘটনা লেখা আছে দেখলাম।

তা এখন তুলে ধরছিঃ “যিশু খৃষ্ট পৃথিবী থেকে প্রস্হানের আগ মুহূর্তে তাঁর শিষ্যদের ডেকে বললেনঃআমি শিঘ্রই তোমাদের ছেড়ে চলে যাবো। যিশু খৃষ্টের কাছে থেকে একথা শুনে শিষ্যরা শোকে মুষড়ে পড়লো । তখন যিশু খৃষ্ট শোকে কাতর শিষ্যদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ আমার যাওয়া তোমাদের জন্য ভালো । কেননা আমি না গেলে ‘সত্যের আত্মা’ আসবেন না । তিনি এসে তোমাদেরকে সমস্ত সত্যে লইয়া যাইবেন ।

যখন সেই সাহায্যকারী আসবেন তখন তিনি পাপ, ন্যায়পরায়নতা ও বিচার সম্পর্কে জগতের মানুষকে চেতনা দিবেন। আমি তোমাদের যা যা বলেছি, সে সকল বিষয় তিনি তোমাদেরকে পুনরায় স্মরন করিয়া দিবেন । তিনি এসে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে আমাকেও মহিমান্বিত করিবেন । তিনি তোমাদেরকে তাহাই বলবেন, যাহা তিনি শোনেন”। [শেষের এই লাইনটি মনে রাখুন] “খৃষ্টানেরা মনে করেন, যিশু চলে যাবার পর যে ‘সত্যের আত্মা’ আসিবার কথা, সেই ‘সত্যের আত্মা’ হইলেন ইশ্বর নিজেই ।

অর্থাৎ ইশ্বরের পুত্র যিশু চলে যাবার পর পিতা (ইশ্বর) নিজেই আসবেন”। আমার কাছে খৃষ্টানদের এই দাবিটি অত্যন্ত ভ্রান্তিযুক্ত । খৃষ্টানদের দাবি অনুযায়ী আগত ‘সত্যের আত্মা’ যদি ইশ্বর নিজেই হয়ে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে আমার মত হচ্ছেঃ ইশ্বর তো নিজেই সর্বজ্ঞানী , ইশ্বরের তো আরেক জনের কাছ থেকে শুনে-শুনে তারপর সেই জ্ঞান আমাদের কাছে বিতরন করার কথা নয় । কেননা বাইবেলে যিশু বলিতেছেনঃ”তিনি তোমাদেরকে তাহাই বলবেন, যাহা তিনি শোনেন”। যিশুর এই কথা অনুযায়ী, আগত ব্যক্তি প্রথমে নিজে আগে ঐশি বানী শুনতে পাবেন অতঃপর সেই ঐশি বানী অন্যদের মাঝে বিতরন করিবেন ।

অত্যন্ত বিস্ময়কর হলেও সত্য, , আগত ব্যক্তিকে নিয়ে বাইবেলে যিশুর এই ভবিষ্যত বানী “তিনি তোমাদেরকে তাহাই বলবেন, যাহা তিনি শোনেন” বাক্যটির সাথে হজরত মুহম্মদ (সাঃ) এর কার্যক্রমের ব্যাপক মিল পাওয়া যাচ্ছে। কেননা ‘নিজে আগে শুনে-শুনে তারপরে সেই শ্রবনকৃত বানী অন্যদের কাছে বলা’,এই কাজ তো হজরত মুহম্মদ (সাঃ) ই করে গেছেন । কোরআন নাজিলের সিস্টেমটা ছিলঃ অহির মাধ্যমে আসা ঐশি বানীগুলো, আল-কোরআনের আয়াতগুলো হজরত মুহম্মদ (সাঃ) নিজে আগে শুনতে পেতেন এবং শোনার পর তিনি তা তাঁর অনুসারীদের কাছে ব্যক্ত করতেন । আর লক্ষ্যনীয় বিষয় যেটা এই সিষ্টেমটার কথাই কিন্তু যিশু খৃষ্ট অনেক আগে ভবিষ্যত বানী করে গেছেন । এছাড়া বাইবেলের আরও একটি লাইন থেকে প্রমান করা যায়, হজরত মুহম্মদ (সাঃ) ই হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যার আগমনী বার্তার কথা যিশু অনেক আগেই বলে গেছেন ।

বাইবেলের সেই লাইনটি হলোঃ যিশু বলতেছেনঃ “তিনি এসে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে আমাকেও মহিমান্বিত করিবেন” । হজরত মুহম্মদ (সাঃ) ও তাঁর আল-কোরআনও বলে, ঈসা (আঃ)মানে যিশুও ছিলেন আল্লাহর নবী এবং তাঁর সময়ে প্ররিত ঐশিগ্রন্হ বাইবেলও(ঈঞ্জিল শরীফ)ছিল খোদারই প্রেরিত ঐশিগ্রন্হ । অর্থাৎ বাইবেলে যিশুর সেই বাক্যটি “তিনি এসে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে আমাকেও মহিমান্বিত করিবেন” এই বাক্যটিকেও হজরত মুহম্মদ (সাঃ) সিদ্ধ করে গেছেন। মুসলিম দাবি করবেই -খোদা সত্য। মুসলিম দাবি করবেই- হজরত মুহম্মদ (সাঃ) সত্য ।

মুসলিম দাবি করবেই –আল-কোরআন স্রষ্টার প্রেরিত ঐশিগ্রন্হ । কিন্তু আমি যুক্তিবাদী শয়ন, যুক্তি ছাড়াই কেন সেই দাবি মেনে নেব !! কিন্তু আমি যুক্তিবাদী শয়ন, যখন দেখতে পাই বহু বছর আগেই বাইবেলে ঊল্লেখিত যিশুর ভবিষ্যত বানীগুলো বহু বছর পরে জন্ম নেওয়া মুহম্মদ এর দ্বারা সিদ্ধ হচ্ছে ,তখন আমার আর মেনে নিতে আপত্তি নেই যে, হজরত মুহম্মদ (সাঃ) ই হলেন স্রষ্টা কর্তিৃক নিযুক্ত সর্বশেষ দূত, যিনি মানব জাতির জন্য দিয়ে গেছেন আমাদের এই মহাবিশ্ব-সৃষ্টিকূলের মহাস্রষ্টা, এক-অদ্বিতী্‌য়,স্বয়ম্ভু , ‘একক’ সার্বভৌমত্বের অধিকারী, সুমহান্‌,অসীম দয়ালু,সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী মহানিয়ণ্ত্রক, প্রজ্ঞাময় অসীম ক্ষমতাধর খোদা তালার অপূর্ব নির্দেশনামালা –পবিত্র আল-কোরআন। আল্লাহ’র নামে শুরু করছি যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। সূরা সাবা(৩৪) : আয়াত নং ২৮ "আমি (আল্লাহ্) তো তোমাকে (হয়রত মুহাম্মদ সাঃ) সমগ্র মানব জাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সর্তককারী করে পাঠিয়েছি, তবে অনেকেই তা অবগত নয়। " সূরা হাজ্জ্ব নং- ২২,আয়াত – ৬৯ “তোমরা যে বিষয়ে মত বিরোধ করছ, আল্লাহ কিয়ামতের দিন সেই বিষয়ে তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করবেন ।

“ সূরা হাজ্জ্ব নং- ২২,আয়াত – ০৮-০৯ “কতক মানুষ জ্ঞান; প্রমাণ ও উজ্জ্বল কিতাব ছাড়াই আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে । সে পার্শ্ব পরিবর্তন করে বিতর্ক করে, যাতে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করে দেয়। তার জন্যে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা আছে এবং কেয়ামতের দিন আমি তাকে দহন-যন্ত্রণা আস্বাদন করাব । “ সতর্কবানীঃদেশে দেশে শয়তান কর্তিৃক জাল হাদিসের মাধ্যমে তালেবানি নামক নয়া একখান জংলী ধর্মের ঊত্থানের আলামত দেখতে পাচ্ছি । নইলে আল্লাহর পবিত্র ঘর মসজিদে বোমা ফাটে ক্যানো ।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃআমার মত ক্ষুদ্র মানুষের যুক্তিসমূহের কারনে ,আমার এই পোষ্টের কারনে কারো অনুভূতিতে যদি আঘাত লেগে যায় তবে তার কাছে আমি বিনয়ের সঙ্গে অগ্রিম মার্জনা চেয়ে নিচ্ছি ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।