আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেছে নিন সহজ, দ্রুত এবং বিজ্ঞান সম্মত কিবোর্ড লেআউট। হবু লেখক, ওয়েব ডিজাইনার, প্রোগ্রামার ও হ্যাকারদের জন্য অবশ্য দরকারী।

এটা সত্যি যে কিবোর্ড চেন্জ করার ঝামেলা আছে। আপনি আর দেখে দেখে টাইপ করতে পারছেন না। কিন্তু, যারা সারা জীবন দেখে দেখে টাইপ করে কাটিয়ে দিতে চান তারা সময় নষ্ট না করে, এখনই এই পোস্টটা পড়া বাদ দিন।
আর যাদের লিখতে হয় বেশী বেশী তারা পড়তে থাকুন.........
কেননা, নতুন কীবোর্ডটি হচ্ছে ডিভোরাক কীবোর্ড। এটা বিজ্ঞানী ড. ডিভোরাক তার আরেক বিজ্ঞানী শালা (সমুন্দি ও হতে পারে) তাকে নিয়ে বানিয়েছেন।

প্রথম দিকে বেঁচারা খুব হতাশ হয়েছিলেন যে এত সুবিধা স্বত্তেও এটাকে তিনি তেমন জনপ্রিয় করতে পারেননি। “I’m tired of trying to do something worthwhile for the human race,”শেষে আফসোস করে বলেছিলেন “They simply don’t want to change!” তিনি অবশ্য SEO ব্লগিং সম্পর্কে জানতেন না।
পরবর্তীতে আ্যডভান্স ইউজাররা ঠিকই এই জিনিস খুঁজে বের করে। কেননা দ্রুত টাইপিং করতে এবং RSI (Repeated Strain Injury) থেকে বাঁচতে সর্বোচ্চ সুবিধা সম্পন্ন একটা কীবোর্ড খুবই প্রয়োজন হয়।
এর জন্য মাইক্রোসফট তাদের উইন্ডোজ এ ডিভোরাক কীবোর্ডের মোট ৩টা ভার্সন ই যোগ করেছে।

এবং লিনাক্স, ম্যাক সর্বত্রই এটা বিদ্যমান আছে। আর এজন্য আপনাকে আলাদা কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে না।
১. Qwerty কীবোর্ড লেআউট মূলত তৈরী করা হয় টাইপ রাইটিং মেশিনের যান্ত্রিক সমস্যা সমাধানের জন্য। টাইপিষ্টদের কথা চিন্তা করে নয়। পরবর্তীতে টাইপরাইটারে সেই সমস্যা দূর হয়ে যায়।

আর এখনতো এর কোন প্রয়োজন থাকতেই পারেনা। কিন্তু, পুরোনো টাইপিষ্টদের জন্যই এই Qwerty কিবোর্ড এখনও প্রচলিত আছে। আর Qwerty তে টাইপ করতে যেয়ে সমস্যা মনে হয় নাই বা হাত ব্যাথা হয়ে যায় নাই এমন মানুষ নাই। তবে, মানুষ সাধারনত সমস্যায় পড়লেও ভাবে “এটা আসলে আমার সমস্যা, এর সমাধান করতে হলে আমাকে আরো প্রাকটিস করতে হবে। ” ডি ভোরাক কীবোর্ড লেআউট তৈরীর ঊদ্দেশ্যই হলো সহজে ও দ্রুত টাইপিং।

দরকারী বর্ণ গুলো বেশী কাছে রাখা।
২. মাত্র কয়েক মিনিটেই এই কীবোর্ডটি মুখস্ত করা যায়। যদিও অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে মনযোগ দিয়ে প্রাকটিস করলে কয়েক ঘন্টার বেশী কোনভাবেই লাগতে পারে না। ব্যাক্তিগত ভাবে আমার লেগেছে ১৯ মিনিট।

তাও না দেখে টাইপ করতে। কেননা, আমার কি বোর্ডে qwerty কিবোর্ডেরই ছাঁপ মারা।
সমস্ত Vowel গুলো বাম হাতে এবং মাঝের সারিতে। Consonant গুলো ডান হাতে। গুরুত্বপূর্ণ গুলো মাঝের সারিতে এবং তারপরের গুলো উপরের সারিতে এবং তারপরের গুলো অন্যত্র।

গুরুত্ব অনুসারে এবং আঙ্গুলের সাথে সুইচের অবস্থান মেপে এই লেআউট তৈরী করা হয়।   গুলোর মোট ৭০% ই মাঝের সারিতে যেখানে হাত থাকে মূলত, ২২% উপরের সারিতে এবং মাত্র ৮% নিচের সারিতে। অন্যদিকে, qwerty তে বহুল ব্যবহৃত অক্ষর মাত্র ৩২% মাঝের সারিতে, যার অর্থ হচ্ছে টাইপিস্টদের আঙ্গুল গুলোকে ৫২% উপরে সরতে হচ্ছে এবং নিচের সারিতে নামতে হচ্ছে ১৬%। qwerty লেআউট এভাবেই আপনার আঙ্গুলের ১২ টা বাজাচ্ছে। ৩. ঠিক উপরের কারণেই আপনি টাইপ করার সময় একটা ছন্দ পাবেন।

আপনাকে বেতালা আঙ্গুল নাড়াতে গিয়ে একটু পর পর হোঁচট খেতে হবেনা।
৪. দ্রুত মামা (চাচ্চু) সত্যিই এটা দ্রুত। কেননা আঙ্গুলকে অনেক কম নাড়াতে হয়। ট্রাই করে দেখতে পারেন। আমার ট্রাই করা আছে।

ব্যাক্তিগতভাবে, আমি খুব দ্রুত ইমপ্রুভ করেছি। লেআউট দেখলেই বুঝবেন সাথে সাথে যে এটা সত্যি। ভাষার সবচাইতে যা বেশী লাগে তা হল Vowel বা স্বরবর্ণ। আর ডিভোরাকে আপনাকে Vowel এর জন্য বাম হাতে আঙ্গুল গুলো সড়াতেই হবেনা। তেমনি গুরুত্বপূর্ণ অন্য Key গুলোও সহজে ডান হাতে পাচ্ছেন।


৫. RSI (Repeated Strain Injury) বা বার বার আঁঙ্গুল নাড়াতে গিয়ে যে ব্যাঁথা হয় সেটা হবার সম্ভাবনাও বহুগুন কম। আপনি সারাদিন টাইপ করেও আঙ্গুল ব্যাঁথা করতে পারবেননা, যা আপনি QWERTY কিবোর্ডে ১ ঘন্টায় পারবেন। কেননা ২৪ ঘন্টায় QWERTY ১জন টাইপিস্টের আঙ্গুল গুলোকে ৩০ কি. মি. ভ্রমন করতে হয়, যেখানে ডিভোরাকে মাত্র ১.৫ কি. মি.।
৬. এর আছে ৩ টা লেআউট। নরমাল ডিভোরাক, যাদের কেবল বাম হাত তাদের জন্য, যাদের কেবল ডান হাত আছে তাদের জন্য।


৮. ডিভোরাকে ভুল কম হয় এবং তুলনামূলক অনেক সঠিক টাইপ করা যায়। কেননা প্রয়োজনীয় অধিকাংশ অক্ষরই আপনার হাতে কাছে।
৭. এর ব্যবহার এর জন্য আপনার আলাদা কোন সফটওয়্যার লাগবে না। উইন্ডোজেই অপশন দেয়া আছে।
Start> Control panel > Region and Language এ ক্লিক করুন > Keyboard and Languages ট্যাবে  > এরপর Change keyboards
খ). Add বাটনে ক্লিক করে English (United States)-Dvorak বা অন্য যেটা লাগবে।

(ভাল কথা আপনি অন্য ভাষার কিবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন এখান থেকে)
গ) . Default Input Language টা ঠিক করে নিন। আপনি English (United States)-US ও রাখতে পারেন আপাতত Default হিসেবে। আপনি যেটা বেশী পারবেন সেটাই Default করবেন। যদি অন্য কারও কম্পিউটার ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে US রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। (কেননা অল্প বিদ্যানেরা এর জন্য সামান্য ঝামেলাও সহ্য করবেনা।

তারা আপনার ১২টা বাজিয়ে দেবে। ) এবার, ঘ). Language Bar ট্যাবে যান। খেয়াল করুন Docked in the taskbar সিলেক্ট করা আছে কিনা। না থাকলে এখনই সিলেক্ট করে দিন।
ঙ). Advanced Key Settings ট্যাবে যান।

Change Key Sequence বাটনে ক্লিক করুন Switch Input Language এ Not Assigned দিলেই ভাল হয়। আপনি অন্য Language যেহেতু Use করছেননা। যারা Photoshop চালান তারা বুঝে শুনে একটা দিলেই হবে। তবে Grave Accent (~) ( আপনার কিবোর্ড এর একদম বামে, Tab এর উপরে, 1 এর বামে) ওটা Switch Input Language এর জন্য দেবেন না।
ওটা Switch Keyboard Layout এর জন্য ব্যবহার করুন।

Grave Accent (~) এ টিক রেখে Ok করুন।
চ). Apply করে Ok করুন।
ব্যস খেল খতম। ঐ Grave Accent (~) বাটন টি কিবোর্ড থেকে চাপলেই কিবোর্ড পরিবর্তন হবে। তবে যেটা Default এ থাকবেনা সেটা কিন্তু স্রেফ অস্থায়ী ভাবে শুধু ঐ কাজটির জন্যই সিলেক্ট হবে।

যেমন, Windows এর প্রতিবার কোন লেখা লিখতে প্রতিবার কিবোর্ড পরিবর্তন করে নিতে হবে। তবে কোন একটি প্রোগামে একবার চেন্জ করে দিলে ক্লোজ না করা পর্যন্ত পরিবর্তন না করলে ও চলবে। মনে করুন, আপনি Firefox ব্যবহার শুরু করেছেন। একবার Grave Accent (~) বাটন টি কিবোর্ড থেকে চাপুন। আরেকবার চাপ না দিলে বা Firefox ক্লোজ না করলে পরিবর্তিত হবে না।


জিনিসটা খুবই সহজ...........
তবে সমস্যা আসলে অন্যত্র................ হ্যাঁ, আপনি হুট করে যে কারো PC তে আপনার হাতের জাদু দেখাতে পারবেননা। আর সে নির্ঘাত নেকু টাইপ হলে “কি কইরা দিলিরে......” বলে যে আর্ত চিৎকার দেবে তা শুনলে জীবনই বিষিয়ে যাবে। এছাড়া, “তুই ভুলেও আমার PC ধরবিনা”, “PC ধরবা, কিবোর্ড ধরবা না” এসব শুনতেই পারেন। তারা আপনার সামনে কিবোর্ড সুইচ খুঁজে খুঁজে “25 Word Per Century” গতিতে টাইপ করবে আর আপনি টার্বো বুস্ট গতি নিয়ে মনে মনে হাত কামড়াবেন। আর যারা নিজের আঙ্গুলের মায়া না করেই QWERTY তে ঝড় তুলছে তারা তো নাক সিটকাবে।


তবে ভাই নিজের সুবিধা নিজের কাছে। আমি নিজে দিনে যে পরিমান চ্যাট করি তা গড়ে ৩০ পাতা লেখার সমান হবেই (কম করেই ধরেছি)। আর সামান্য সাহিত্য চর্চার অংশ হিসেবে সে বর্ণনা দিলাম না। এছাড়া কমেন্ট তো আছেই। এই সাইটেই তো দেখেছি অনেকে যে কমেন্ট করে তা পোস্ট এর চাইতে ও বড়।

Essay তো লজ্জায় অস্থির কমেন্টের সাইজ দেখে। আর ব্লগিং ও ওয়েব ডিজাইন করতে গেলে তো কথাই নাই। আরো ৩০/৪০ পাতা স্রেফ কম মনে হবে। আর শখের হ্যাকারদের তো উচিত এখনই এটা শিখে নেয়া। কেননা টাইপ না জানা হ্যাকার, কল্পজীবি বেকারদের মতই বিপদগ্রস্ত।


প্রথম টিউন বলে আর আগে বাড়লাম না। লাগলে Update করবো।
আমি আগ্রহী হয়েছিলাম যেটা পড়ে
বিস্তারিত

সোর্স: http://www.techtunes.com.bd/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.