আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ঘোষণার শর্ত" -৪

O Allah! Please lead me from unreal to The Reality!!

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আস সালামু আলাইকুম! [পূর্বের আলোচনার ধারাবাহিকতায়, যেগুলো এখানে রয়েছে: www.somewhereinblog.net/blog/peace55/29201656 www.somewhereinblog.net/blog/peace55/29202268 www.somewhereinblog.net/blog/peace55/29203093 www.somewhereinblog.net/blog/peace55/29204215] সপ্তম শর্ত: শাহাদার সপ্তম শর্ত হচ্ছে এই সাক্ষ্যকে মনে প্রাণে ভালবাসা। যে শাহাদাকে ভালোবাসবে - সে, এই শাহাদা অনুসারে সব কিছুকে [মূল্যায়ন করবে বা] ভালবাসবে, এই শাহাদার নিহিতার্থ ও করণীয়সমূহকে ভালবাসবে এবং সেই সমস্ত মানুষকেও ভালবাসবে, যারা এই শাহাদা অনুযায়ী জীবনযাপন করেন এবং এর অর্থ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেন। এটা শাহাদার একটি পূরণীয় শর্ত। একজন মানুষ যদি শাহাদা উচ্চারণ করে, অথচ এই সাক্ষ্য যা কিছুর প্রতিনিধিত্ব করে সেসবকে ভাল না বাসে, তবে বলতে হবে যে, তার ঈমান অপূর্ণ এবং তাকে সত্যিকার বিশ্বাসী বলা যাবে না। সে যদি শাহাদা ভাল না বাসে, অথবা, যদি এর বক্তব্যের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে, তবে বলতে হবে যে, সে শাহাদাকে অস্বীকারই করলো।

পবিত্র কুর’আনে আল্লাহ্ বলেন : وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آَمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ “তবু মানুষের মাঝে কেউ কেউ আল্লাহ্ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষ হিসাবে গ্রহণ করে এবং আল্লাহকে ভালবাসার মত করে তাদের ভালবাসে। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, তারা আল্লাহর প্রতি ভালবাসায় সুদৃঢ়….। ” (সূরা বাক্বারা, ২ : ১৬৫) এছাড়া সূরা তওবার ২৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্ পার্থিব ব্যাপারসমূহকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ও জিহাদের চেয়ে বেশি ভালবাসার ব্যাপারে সবাইকে সাবধান করেছেন: قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ “বল, ‘তোমাদের কাছে যদি আল্লাহ্, তাঁর রাসূল এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করা অপেক্ষা তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভ্রাতা, তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দা পড়ার তোমরা আশঙ্কা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরা ভালোবাসো – এসব বেশী প্রিয় হয়, তবে অপক্ষো কর আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত। ’ আল্লাহ্ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না। ” (সূরা তওবা, ৯:২৪) রাসূল (সা.) বলেছেন, “যার ভিতর তিনটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে সে ঈমানের মিষ্টি স্বাদ লাভ করেছে।

(যার প্রথমটি হচ্ছে) সে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে যে কারো চেয়ে বেশি ভালবাসে …………….। ” (বুখারী ও মুসলিম) অষ্টম শর্ত: শাহাদার অষ্টম শর্ত হচ্ছে অন্য সকল উপাস্যকে অস্বীকার করা। এটা যদিও শাহাদার কথাতেই স্পষ্ট, তবু অনেকে শাহাদা উচ্চারণ করলেও, এ ব্যাপারটা সম্বন্ধে পরিস্কার ধারণা পোষণ করেন না। সেজন্যই দেখা যায় অনেকে আল্লাহর ইবাদত করেন এবং পাশাপাশি অন্যান্য শাফায়াতকারীর শরণাপন্ন হন। শাহাদা কেবল নিশ্চয়তাকারী একটি ঘোষণা নয়, বরং অন্য উপাস্যদের অস্বীকারকারী একটি ঘোষণা, যেটা আল্লাহ্ সূরা বাকারার ২৫৬নং আয়াতে মনে করিয়ে দেন: فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا “…..যে তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহ্য় ঈমান আনবে, সে এমন এক মজবুত হাতল ধরবে যা কখনো ভাঙ্গবে না………।

” (সূরা বাক্বারা, ২:২৫৬) [আমাদের দেশে বিভিন্ন পীরের খানকায় বসে মানুষ একাধারে যেমন “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” যিকির করে, তেমনি জীবিত/মৃত পীর বা দরবেশের কৃপা ভিক্ষা করতে থাকে। এসব স্পষ্টতই উপরোক্ত শর্তের পরিপন্থী কাজ। ] এছাড়া রাসূল(সা.) বলেছেন: “যে বলে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই এবং আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুর উপাসনা করা হয় তা অস্বীকার করে – তার সম্পদ ও রক্ত নিরাপদ এবং তার হিসাব হবে আল্লাহর সাথে। ” (মুসলিম) ফি আমানিল্লাহ্!! [চলবে ....... ইনশা'আল্লাহ্!]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।