ঘর থেকে বের হয়ে ৫০ কিমি দুরে মেলবোর্ন এয়ারপোর্টে পৌছে আমার টার্গেট থাকে- প্লেনে উঠে ৩ ঘন্টা সলিড ঘুম দিবো। জানলার সিটটা বুকিং দেয়া থাকে মাস আগে থেকে। শুধু ঘুমের জন্য! কোম্পানী ভালা সিটের ভাড়া দেয় আর আমি ভালা কইরা ঘুমামু না , তা কেমনে হয়? মোটামুটি সবসময়ই স্টুয়ার্ডরা আমাকে খাবারের জন্য উঠায় না। পাশের প্যাসেন্জারও খোসগল্প করে না! ঘুমকাতুরে লোকরে মাফ করা আর কি! এমন রুটিনই লাস্ট দেড় চালাইছি!
এইবার ছুটির ২৮ দিন কঠিন সময় পার করলাম! আপনাদের দোয়ায় বাসা কিনছি একখান। আইনী সেটেলমেন্ট হতে হতে ছুটির ২ সপ্তা পার।
বাসায় উঠার আগে আম্মার শর্ত বাসা রং করতে হবে (আমার বউয়ের কুটনামী! সিওর!!) যাই হোক কম সময়ে রং মিস্ত্রী ম্যানেজ করে রং করানো, টুকিটাকি কাজ শেষ করতে করতে বাসা শিফটিং করতে পারলাম গত সোমবার। মণ্গলবার বাসা গোছানো কাজ সারলাম যতটুকু সম্ভব! বুধবার সকালের ফ্লাইটে রওনা হলাম কাজে!
আগে থেকে সিট ঠিক করতে ভুলে গেছিলাম। যে সিট পেলাম তা হলো ইকোনমি ক্লাসের তিন সিটের মাঝখানের টা। যাই হোক নানা রকম ক্যাচাল শেষ করে চুড়ান্ত ক্লান্ত আমি আশায় আছিলাম- প্লেনে ঘুমামু! প্লেনে উঠে দেখি জানলার পাশে বসছেন একজন স্বাস্থ্যবতি ভদ্রমহিলা। ইকোনমি ক্লাসের চিপা সিটের উনারটা তো দখল করছেন, আমারটাও হাফ দখল।
আমার আরেক পাশেও আরেকজন মেয়ে! বুঝলাম আজকর ঘুমের শনির দশা!
ঘুমের ব্যাপারে খুব আশাবাদি হলাম যখন দেখলাম বা'পাশের মোটাসোটা ভদ্রমহিলা প্লেন চলার আগেই কুইক চোখ বন্ধ করছেন! কিন্তু ডান পাশের ব্রিটিশ একসেন্টে ভদ্দমহিলা কথা শুরু করলেন... কই থাকি পার্থে না কি?
বললাম মেলবোর্নে আর মনে মনে বললাম "চুপ পিলিজ!"
আবার জিগাইলো ' হোয়াট ডু ইু ডু ফর লিভিং?'
আমি কইলাম ' আই লিভ এ ডাবল লাইফ!!" ওদের কাছে কথাটার অর্থ খুবই খারাপ। মানে আমি বউয়ের লগে চিটিং কইরা আরেক বউ/গার্লফেরেন্ড পালতাছি!
সে ভাবছিলাম আমারে আর কিছু জিগাইবো না। কিন্তু উড়াল দেয়া আগেই জানতে চাইলো ' তোমাকে দেখে মনে হয় না তুমি কি সত্যই দুইটা মাইয়া হ্যান্ডল করতাছো?"
আমি বললাম "দেখো এই শহরে আমার একখান সাজানো সংসার আছে। আর যেইখানে যাইতেছি সেই পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া্য়ও আমার আরেকটা সাজানো সংসার আছে! আমি দুই সংসারে পালা করে ২৮ দিন ২৮ দিন করে সময় কাটাই! গত দুই বছর ধরে এমন চালাচ্ছি! আর দুইটা না আসলে ৩টা এক্সপেন্সিভ গার্ল পালতে হয়। ইয়াংগেস্ট গার্লটা আবার বেশী ডিমান্ডিং!!"
উনি অবাক হয়ে জিগাইলেন 'তুমি ম্যানেজ করো ক্যামনে? কারে বেশী ভালা পাও?' উনাকে একটু আউলানো লাগছিলো।
আমি বললাম "ছোট জনরে বেশী। সেই আমার জান! আর ম্যানেজ - হইয়া যা্য আর কি!'
উনি জিগাইলো "তোমার ভালোবাসার ব্যাপারটা মেলবোর্নের বউ জানতে পারলে?"
আমি বললাম ' বুঝতে হ্য়তো পারে! তারপরও এখন পর্যন্ত সমস্যা হয় নায়"
কথা আর বাড়ল না কিন্তু টার্গেট মত ঘুমও হইলো না। আধো ঘুম অস্বস্তি নিয়া পৌছালাম পার্থ এয়ার পোর্টে! নামার আগে ব্রিটিশ ভদ্রমহিলাকে বললাম আমার ডাবল লাইফ আর ট্রিপল গার্লের রহস্য। তিন এক্সপেন্সিভ গার্ল হলো আমার মা, আমার বউ দয়াবিবি আর আমার ৬ বছরের মেয়ে আয়না! আয়না আবার বেশী ডিমান্ডিং!
কোম্পানীর তরফ থেকে বাসা পাই পস্চিমে। দয়াবিবি উনার চাকুরী ছেড়ে পস্চিমে আসে না বলে ৪ সপ্তা পর পর আমাকে ৩০০০ কিলোমিটার দুরে দুই সংসারে সময় দিতে হয়!
দুই সংসারের এক সংসারে আমি সুখী বিবাহিত স্বামী, আদুরে ৬ বছর মেয়ের বাপ, মায়ের বুড়া খোকা আর আরেক সংসারে আমি ইয়াহু ব্যচেলর হোদল রাজা!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।