আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ। জীবনের ইচ্ছা বা স্বপ্ন বা ভাবনা গুলি হয়তো বা কোনদিন বাস্তবে রূপান্তরিত করতে পারবো না তাই ব্লগ লিখে আমি আমার ইচ্ছা /স্বপ্ন/ ভাবনা গুলো প্রকাশ করি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় Latin: Rajshahi University ________________________________________ প্রতিষ্ঠা ১৯৫৩ ধরন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান[১] ডিন ৭ অনুষদ ১০০০ কর্মচারী ও কর্মকর্তা ২০০০ ছাত্র ২৫,০০০ অবস্থান রাজশাহী, বাংলাদেশ ঠিকানা মতিহার, রাজশাহী - ৬২০৫ প্রাঙ্গণ শহরে প্রায় ৭৫৩ একর ডাকনাম রাবি (RU) সংযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ওয়েবসাইট http://www.ru.ac.bd রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশে রাজশাহী শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দুরে পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত৷ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে ১৯৫৩ সালের ৬ই জুলাই৷ সেদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা ছিলো মাত্র ১৬১জন৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন ইতরাত হোসেন জুবেরী প্রতিষ্ঠার কথা : রাজশাহী ছিলো প্রাচীন বরেন্দ্রভূমির প্রাণকেন্দ্র৷ ইতিহাসের অনেক রাজশক্তির উত্থান পতনের স্বাক্ষী এই বরেন্দ্র ভূমি৷ এখন থেকে কয়েক হাজার বছর আগে পাল আমলে এই বরেন্দ্র অঞ্চলেরই নওগা জেলার পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷ জ্ঞান বিজ্ঞান ও ধর্মশাস্ত্র চর্চার প্রসিদ্ধ স্থান হিসেবে স্বীকৃত ছিলো এই বৌদ্ধবিহার৷ সে সময়ে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছিল৷ বিশ্বের নানা দেশ থেকে জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার জন্য এখানে আসত শিক্ষর্থীরা৷ কালের গহ্বরে আস্তে আস্তে নিজের গৌরব হারাতে থাকে বরেন্দ্রভূমি৷ পিছিয়ে পড়তে থাকে ক্রমশ৷ এক সময়ের সমৃদ্ধশালী বরেন্দ্র ভূমি পরিনত হয় শিক্ষাদীক্ষা অর্থনীতিসহ নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল হিসেবে৷ ব্রিটিশ যুগে রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষাদীক্ষা উন্নয়নের জন্য ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয রাজশাহী কলেজ৷ রাজশাহী কলেজের অবস্থানও ছিলো বেশ ওপরে৷ কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজের পরই রাজশাহী কলেজের স্থান ধরা হতো৷সে সময়ে রাজশাহী কলেজে আইন বিভাগসহ পোস্ট গ্রাজুয়েট শ্রেনী চালু করা হয়৷ কিন্ত এর কিছুদিন পরেই বন্ধ হয়ে যায় এসব কার্যক্রম৷ সে সময়েই রাজশাহীতে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজন অনুভূত হয়৷ ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পাকিস্তান সরকার দেশের সব কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে৷ রাজশাহীতে এ সময় স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্দোলন শুরু হয়৷ ভাষা আন্দোলনের কিছুদিন আগ থেকেই রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন বেশ জোরে শোরেই শুরু হয়৷ ১৯৫০ সালের নভেম্বর ১৫ রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের নিয়ে ৬৪সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়৷ ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি ১০ রাজশাহী শহরের ভূবন মোহন পার্কে রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য সর্বপ্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ প্রথম দাবি অবশ্য ওঠে রাজশাহী কলেজেই৷ ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শহরের সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গনে সমবেত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ পাস করার দাবি তোলে৷ এই দাবি পাঠিয়ে দেয়া হয় তত্কালীন এমএলএ ও মন্ত্রীদের কাছে৷ পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারি ১৩ ভূবন মোহন পার্কেই অনুষ্ঠিত হয় আরও একটি জনসভা৷ ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ এমএলএ৷ সভায় বক্তব্য রাখেন ইদ্রিস আহমেদ এমএলএ, প্রভাষ চন্দ্র লাহিড়ী, খোরশেদ আলম, আনসার আলী, আব্দুল জব্বার প্রমূখ৷ ক্রমেই তীব্র হতে থাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি৷ এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৫ ছাত্রনেতা৷ পরে ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে ঢাকায় একটি ডেলিগেশন পাঠানো হয়৷ ওই ডেলিগেশনের সদস্যদের মধ্যে মরহুম আবুল কালাম চৌধুরী ও আব্দুর রহমানের নাম উল্লেখযোগ্য৷ এভাবে একের পর এক আন্দালনের চাপে স্থানীয় আইন পরিষদ রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়৷ এই আন্দোলনে একাত্ব হন পূর্ববঙ্গীয় আইনসভার সদস্য প্রখ্যাত আইনজীবী মাদার বখশ৷ বর্তমান অবস্থা : এখন প্রায় ৩০৪ হেক্টর জুড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৫টি উচ্চতর গবেষনা ইন্সটিটিউট, ৮টি অনুষদের অধীনে ৪৬টি বিভাগে বতৃমানে পরিচালিত হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম৷ ক্যাম্পাসের উত্তর পুর্ব দিক জুড়ে রয়েছে ১১টি ছাত্রহল৷ ৪টি ছাত্রীহল ক্যাম্পাসের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত৷ এর পাশেই নির্মিনাধীন রয়েছে আরও একটি ছাত্রী হল৷ পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত জুড়ে রয়েছে শিকদের জন্য আবাসিক এলাকা৷ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লাইব্রেরীটি এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ এছাড়া রয়েছে, মেডিকেল সেন্টার, কম্পিউটার সেন্টার, শহীদ মিনার, স্টেডিয়াম৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা এদেশের সর্বপ্রথম স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর৷ রয়েছে সাবাস বাংলাদেশ নামে একটি অপুর্ব শৈলির ভাষ্কর্য৷ আর রয়েছে গোল্ডেন জুবিলী টাওয়ার৷ প্রতিদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব স্থানে ঘুরতে আসেন সারা দেশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থী৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি হিসেবে কর্মরত আছেন প্রফেসর আলতাফ হোসেন৷ উপ-উপাচার্য প্রফেসর মামনুনুল কেরামত৷ অনুষদসমূহ : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বমোট আটটি অনুষদ রয়েছে। এগুলো হল কলা অনুষদ * বাংলা * ইংরেজী * ইতিহাস * দর্শন * ভাষা * চারুকলা * ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ * আরবি * ইসলামিক স্টাডিস * Folklore * Theatre & Music বানিজ্য অনুষদ * একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ * ব্যবস্থাপনা * Marketing * Finance & Banking বিজ্ঞান অনুষদ * পদার্থবিদ্যা * ফলিত পদার্থবিদ্যা এবং ইলেকট্রনিক ইন্জ্ঞিনিয়ারিং * রসায়ন * পরিসংখান * কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং * ফার্মেসী * তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি * গনিত * ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি * প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান * ফলিত গনিত * Population Science & Human Resource Development * Material Science and Technology কৃষি অনুষদ * Genetic Engineering & Biotechnology * Agronomy & Agricultural Extension * Fisheries * Animal Husbandry & Veterinary Science * Crop Science and Technology সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ * অর্থনীতি * রাষ্ট্রবিজ্ঞান * সমাজকর্ম * সমাজবিজ্ঞান * গণযোগাযোগ * গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান * নৃবিজ্ঞান * লোকপ্রশাসন আইন অনুষদ * Law & Justice জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদ * ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা * মনোবিজ্ঞান * উদ্ভিদ বিজ্ঞান * প্রাণিবিদ্যা * ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা চিকিত্‍সা অনুষদ * রাজশাহী মেডিকেল কলেজ * রংপুর মেডিকেল কলেজ * শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়া * দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ * খুলনা মেডিকেল কলেজ * রংপুর ডেন্টাল কলেজ * নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জ গুণীজন: দীর্ঘ ৫৩ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জড়িত হয়েছে বেশ কয়েকজন প্রতিথযশা ব্যাক্তিত্বের স্মৃতিতে৷ এখানে শিক্ষকতা করেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী ও সাহিত্যক ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক, তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান, খ্যাতনামা ঐতিহাসিক ডেভিড কফ, নৃবিজ্ঞানী পিটার বাউচি, কারেন্স ম্যালেনি , জোহানা কর্ক প্যাট্রিক, বিশিষ্ট ঐতিহাসিক প্রফেসর আব্দুল করিম, রমিলা থামার, উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথা সাহিত্যক হাসান আজিজুল হক প্রমূখ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।