কালশিটে হলদে রঙের বাঁশের মাচা। ফাঁকা ফাঁকা, বসতে খুব একটা সুবিধের নয়। বাঁশে ঠেস দিয়ে ধাপ ওঠানো গ্রাম্য দোকান। বেতার তরঙে সকাল বিকালের খবর, সৈনিক ভাইদের জন্যে অনুষ্ঠান.. দুর্বার, বিবিসি, অনুরোধের আসর.. গানের ডালি, শর্ট ওয়েভ-মিডিয়াম ওয়েভ। আর আমাদের অবসর তরঙে ছেলে বুড়োর জমজমাট আড্ডা।
আড্ডার নেশায় ঢুলুঢুলু পরিচিতি মুখ। দেশবিদেশের বিজ্ঞান, রাজনীতি, সিনেমার সামান্য জ্ঞানের গভীর আলোচনা। ঢাকা শহর.. কোন এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। কত কিছু.. কত আলোচনা, কত শেয়ারিং।
অথবা ক্লাস বেঞ্চে ক্লাসের ফাকে বন্ধুর ম্যাটিনি শো, প্রথম কোকা কোলা, চুপিচুপি দেখা প্রথম ভিসিআর, প্রথম ডিশ টিভি, ভুতের গল্প, টেস্ট ক্রিকেট, পাড়ার বড় ভাইয়ের আর্মস, প্রথম কোন মেয়ের রোমান্স.. আহ কত গল্প.. যেন আইসক্রিমের মত গলে গলে পড়ে কাঠি থেকে।
এখন আমরা বন্দী, কর্পোরেট নামক ব্যস্ত সময়ের খাচায়। ক্যারিয়ারের চকচকে বর্শা ফলা তাক হয়ে আছে.. একটু জিরোবি তো ঘচাং।
যাক অন্তত ফেইসবুক.. সেই হলদে মাচার আড্ডা। আই লাভ ইউ লেখা ক্লাস বেঞ্চের উপর সেই নেশাময় আড্ডা। এই দেখো আমি আমার বউ ছেলেমেয়ের সাথে ছবি উঠেছি।
তোমাকে একটা কার্ড পাঠালাম। একটা ভাল ছবি দেখেছি, লিঙ্কটা পাঠালাম। আজ আমার প্রিয় মানুষ কিন্তু তুমি। বাহ মন্দ কি..
সেই ব্যাগ নিয়ে বাজারে যাওয়া বাদলকে থামিয়ে গল্প... কে বাদল নাকি? বাজারে যাচ্ছিস? দাঁড়া আমিও যাব। দাঁড়া গল্প করে যা.. সেই বাদল এখন ডিজিটাল চ্যাটিং..
হাই?
হাই।
হট (হোয়াট)?
ওয়েল।
প্রতি ভোরে ডাকবাক্স আতিপাতি করে খোজা কেউ কি লিখেছে আমাকে? কেন যে লেখে না? ইস্ আমি নিজেই লিখে দিচ্ছি তোমাকে, দয়া করে সেটাই অন্তত পোস্ট করো। প্লীজ..
সেই একই আকাঙ্খায় প্রতিদিন খুঁজি মেসেজ, নোটিফিকেশন, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট..
ফেইসবুক তোমাকে ধন্যবাদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।