আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রুনা-রত্নার বিয়ে আজ গণভবনে

তাশফী মাহমুদ

পুরান ঢাকার নবাব কাটরার রুনা-রত্নার বিয়ে আজ। বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে। ‘মা’ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কনে রুনা ও রত্নাকে তুলে দেবেন বর জামিল ও সুমনের হাতে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে গতকাল রাতেই বিয়ের সব কেনাকাটা শেষ হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় লালমাটিয়ায় মহিলা অধিদপ্তরের আশ্রয়কেন্দ্রে রুনা-রত্নার গায়েহলুদ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

তাদের কয়েকজন আত্মীয় এতে অংশ নেন। আয়োজন হয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে। কনে দুই বোন দেশবাসীর কাছে দোয়া চান। আর তাঁরা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু। রুনা-রত্নার মায়ের ইচ্ছা ছিল দুই বোনকে একই দিনে বিয়ে দেবেন।

বড় বোন রত্নার বিয়ে আগেই ঠিক ছিল। ছোট বোন রুনার পানচিনির দিন ঘটে সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। পারলারে সাজতে গিয়ে বেঁচে যান দুই বোন। আর বাসায় রুনার মাসহ নিকটাত্মীয় আর হবু বর জামিলের পরিবারের সদস্যসহ মোট ২১ জন আগুনে পুড়ে মারা যায়। অনিশ্চয়তার অথৈ সাগরে পড়ে যাওয়া এতিম দুই বোনের অভিভাবকের দায়িত্ব নেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠান করে গয়নাগাটি দিয়ে বিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। দুই বরের বিয়ের যাবতীয় পোশাক-পরিচ্ছদ দেবেন তিনি। দুই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বরদের চাকরিরও ব্যবস্থা করছেন প্রধানমন্ত্রী। বরযাত্রীদের জন্য গণভবনে খাওয়া-দাওয়ারও আয়োজন করা হয়েছে। বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে দিনভর ব্যস্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন। আজ সন্ধ্যায় দুই বোনের বিয়ে হবে। সোমবার রাতে গণভবনে রুনা-রত্না, তাঁদের হবু বর এবং পরিবারের সদস্যদের ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। কথা ছিল, বড় বোন রত্নার বিয়ে হবে আজ। রুনার হবু বরের প্রবাসী ছোট ভাই দেশে ফিরলে তাঁর বিয়ে সম্পন্ন হবে বলে কথা ঠিক হয়।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অভিভাবকত্ব বলে কথা। গতকাল দুপুরে রুনার বর জামিলের পরিবার ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম মুরাদের কাছে আজই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে বিয়েতে সম্মতি দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রুনা-রত্না আর জামিল-সুমনের বিয়ের বাজার করেন এম এ আজিজ ও শাহ আলম মুরাদ। বায়তুল মোকাররম মার্কেটের গ্রামীণ জুয়েলার্স থেকে দুই বোনের জন্য আট ভরি করে ১৬ ভরি স্বর্ণের গয়না কেনা হয়।

কনে ও বরদের জন্য বিয়ের সব কাপড় কেনা হয়। এমনকি বরদের জন্য দ্রুততার সঙ্গে স্যুটও বানানো হয়। গত রাতে কথা বলার সময় শাহ আলম মুরাদ মিরপুর বেনারসিপল্লী থেকে কনের জন্য বেনারসি শাড়ি কিনছিলেন। এম এ আজিজ জানান, ছোট বোন রুনার আজ কাবিন হবে। জামিলের পরিবারের কয়েকজন সদস্য মারা যাওয়ায় ৪০ দিনের শোক শেষে রুনাকে উঠিয়ে নেওয়া হবে।

তবে রত্না আজই স্বামীর বাড়িতে চলে যাবেন। গত শুক্রবার সকালে হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী রুনা-রত্নার করুণ কাহিনি জানতে পারেন। রুনার বিয়ের পানচিনির দিনে অগ্নিকাণ্ডে দুই পক্ষের নিকটাত্মীয়রা মারা যান। প্রধানমন্ত্রী সেদিনই দুই বোনের সব দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। গত সোমবার গণভবনে দুই বোনকে জড়িয়ে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমিও এক দিন ঘুম থেকে উঠে শুনি, আমার পরিবারের কেউ নেই।

তোমাদের দুঃখ, কষ্ট, বেদনা আমার থেকে আর কে ভালো বুঝবে!’

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।