আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেই সময়ের নৃপতিরা.....

হাউকাউ পার্টি

ঢাকার সর্ব প্রথম নওয়াব হলেন খাজা আলিমুল্লাহ (?-১৮৫৮)। তিনি চামড়া আর লবনের ব্যবসা করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন। আহসান মঞ্জিলের মুল পত্তন তিনিই করেছিলনে। খাজা আলিমুল্লাহ বিখ্যাত দরিয়া-য়ে-নুর নামক হীরটা ৭৫ হাজার টাকা দিয়য়ে নিলামে কিনে নিয়েছিলেন। এটিই বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আর মূল্যবান।

১৮৫০ সালে হাইড পার্কে রানী ভিক্টোরিয়ার সন্মানে আয়োজিত এক প্রদর্শনিতে কোহিনুর হিরার সাথে এটাও প্রদর্শিত হয়েছিল। যারা চুরি ডাকাতিটে ইচ্ছুক তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি.. এটা বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ভল্টে আছে নওয়াব খাজা আলিমুল্লার পুত্র নওয়াব স্যার খাজা আব্দুল গণি (১৮১৩-১৮৯৬) ছিলেন বৃটিশ রাজাদের স্বীকৃতি প্রাপ্ত ঢাকার প্রথম নওয়াব। তিনি উর্দু, আরবী, বাংলা, ইংরেজী আর পার্সী ভাষায় কথা বলতে পারদর্শী এই নওয়াব ঢাকার নাগরিক আর সাংস্কৃতিক উন্নয়নে অনেক অবদান রেখেছিলেন। আজ আমরা রাস্তা রাস্তায় যেসব স্ট্রিট লাইট দেখি, এদের পূর্বপুরুষ গ্যাস লাইটের প্রচলন তিনিই প্রথম করেণ ঢাকায়। এছাড়া ওয়াসা অর্থাৎ পানি সরবরাহ ব্যবস্থার গোড়াপত্তন করেন।

তিনিই ছিলেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম ইংরেজি সংবাদপত্র Weekly Dhaka News উদ্যোক্তা। নওয়াব আব্দুল গণি, মার্টিন এন্ড কোম্পানীকে নিয়োগ করেছিলেন আহসান মঞ্জিলের নির্মানের জন্য। এক কালের কুমারটোলার কুটি বাড়িটিকে ঢাকার সবচেয়ে দৃষ্টি নন্দন সুরম্য অট্টালিকা হিসেবে গড়ে তোলেন এবং তার ছেলে খাজা আহসান উল্লার নামানুসারে এর নাম রাখেন আহসান মঞ্জিল। গম্বুজ ছাড়া আহসান মঞ্জিল। ১৮৮৮ সালে ঘুর্ণিঝড়ের পরে গম্বুজ আর মিনারেট গুলো তৈরি করা হয়েছিল।

তাঁর আরও যেসব অবদান এখনও আমরা দেখেতে পাই সেগুলো হলো ভিক্টোরিয়া পার্ক, দিলখুশা আর শাহাবাগ। ১৮৭৬-৭৭ সালের দিকে মুঘল সম্রাটদের নির্মিত বাগ-ই-বাদশাহি ঘিরে প্রায় ২৬ হেক্টর জমি নিয়ে এখানে গড়ে তুলেছিলেন চমৎকার বাগান বাড়ি। শাহাবাগের ওয়াটার টাওয়ার এটাও বাগ-ই-বাদশাহীর একটা অংশ, বর্তামনের রমনা। ১৮৬৬ সালে তিনি মতিঝিলের ঝিলের কাছে জমি কিনে নিয়ে এখনে নির্মান করেছিলনে দিলখুশা নামক একটি বাগানবাড়ি। এই বাগান বাড়ি ছাড়াও এখানে ছিল উদ্যান, ঝিল, ঝিলের উপর সেতু ইত্যাদি।

বাংলার নাট্য মঞ্চে নারী অভিনেত্রীদের অভিনয়ের সুচনাও তার হাত ধরেই শুরু হয়েছিল। তিনি বম্বে থেকে একবার একটি নাট্যদলকে আমন্ত্রন করেছিলনে, তারা এখানে ইন্দ্রসভা নামে একটি নাটক পরিবেশনা করেছিল। এছাড়া তিনিই ঢাকার প্রথম বলি খেলা, ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন ইত্যাদি সামাজিক উৎসবের প্রচলন করেণ। তাঁর এই সংস্কৃতির প্রতি তার এই অনুরাগ বংশপরস্পরার সঞ্চারিত হয়েছে পরবর্তী প্রজন্মে। নওয়াব স্যার খাজা আব্দুল গনির প্রপৌত্র নওয়াব স্যার সলিমুল্লার পুত্র নওয়াবজাদা খাজা নাসিরুল্লাহ পুর্ব বাংলার প্রথম সিনেমা "লাস্ট কিসে" পুলিশ কমিশনারে ভুমিকায় অভিনয় করেছিলেন।

এছাড়া এই সময়ের নায়ক নাঈম আর ফয়সাল কিন্তু এই এদেরই বংশধর নওয়াব স্যার খাজা আহসান উল্লাহ (১৮৯৬ -১৯০১) সর্বজন পরিচিত নওয়াব। তার নামেই নির্মান করা হয়েছিল আহসান মঞ্জিল। ১৮৯৩ সালে ডেপুটি মেজিসট্রেট হিসেবে তিনি তাঁর কর্ম জীবন শুরু করেছিলেন। বর্তমানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার পিছনে তাঁর অবদান অনেক। তিনি প্রায় ৪০ হাজার রুপি ব্যায় করেছিলেন ঢাকায় একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গড়ে তোলার জন্য, এই কলেজটিই বর্তমানের বুয়েট।

প্রাচীন ঢাকা কলেজ এছাড়া ঢাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য তিনি ৫০ হাজার দান করছিলেন, এই কেন্দ্রটি চালু হয়েছিন ১৯০১ সালে আর এই বছরই তিনি মৃত্যুবরণ করেণ। আজ এইটুকুই থাক, বাকিদের সম্পর্কে তত্ব তালাশ করে পরবর্তীতে আবার..........

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।