আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাই সচেতনতা

ঝড় এসেছে, ওরে, এবার ঝড়কে পেলেম সাথি॥ ঢাকা! বাংলাদেশের রাজধানী, দেশের বৃহত্তম ও ব্যস্ততম নগরী. আমার জন্মস্থান. আশির দশকের ঢাকা আর বর্তমান ঢাকার পার্থক্য আকাশ পাতাল. বিগত তিন দশকে ঢাকায় অবকাঠামোগত উন্নতি হয়েছে লার্জ স্কেলে. সু উচ্চ ইমারত বহুতল অট্টালিকার ভিড়ে খোলা আকাশটাও কথাও কথাও বন্দী হয়েছে. এই তিন দশকে দেশের সকল প্রান্ত থেকে মানুষ ঢাকায় এসে স্থায়ী হয়েছে. ভীড় আরো বেড়েছে,চাপ পরেছে নাগরিক সুযোগ-সুবিধায়. জন্মের পর থেকেই বাংলাদেশীদের মধ্যে জাতীয়তাবোধের প্রচন্ড অভাব লক্ষ্য করা যায়, ঢাকা বাসীদের মধ্যে নাগরিক বৈশিষ্টে টা আরো প্রকট ভাবে চোখে পরে, বিভিন্ন সময়ে সরকার এই সমসার পালে আরো হওয়া দেন বিভিন্ন জেলার লোকদেরকে ব্যাপক ভাবে সুবিধা দেবার মাধ্যমে. ঢাকায় আমরা বসবাস করি ঠিকই,কিন্তু ঢাকাকে মনে প্রাণে নিজের বলে ভাবতে পারিনা, তাই এর সাথে ব্যবহারও করি যথেচ্ছ. ফলাফল ঢাকা বিশ্বে বসবাস অযোগ্য নগরীর কাতারে প্লেস পেয়েছে. যাক এইসব বুলি কপচানো বন্ধ করি, আসল কোথায় আসি. এক রানা প্লাজা ধস এ কত মানুষের প্রাণ গেল, আর আমরা ঢাকাবাসীরা যে একটা জীবন্ত এটম বম এর উপরে বসবাস করতেসি আমরা নিশ্চই জানি. হ্যা ঠিকই ধরেছেন, ঢাকার ভুমিকম্পের রিস্ক এর কথাই বলছি বাংলাদেশ তার জিওগ্রাফিকাল লোকেশন আর টেক্টোনিক গঠন এর জন্য ভুমিকম্পের বিশাল রিস্ক এর মধ্যে আছে. বিশেষ করে ঢাকা. ভূতাত্ত্বিক গঠন অনুযায়ী এইদেশ তিনটা টেক্টোনিক প্লেট এর সংযোগ স্থলে অবস্থিত- ইন্ডিয়ান প্লেট, ইউরেশিয়ান প্লেট আর বার্মিজ মায়িক্রপ্লেট. ভুতাত্তিক্গন গবেষণা করে দেখেছেন যে ইন্ডিয়ান প্লেট টি প্রতি বছর ৬ সেনতি মিটার হারে উত্তর-পূর্ব দিকে সরে ইউরেশিয়ান প্লেট এর নিচে ৪৪ মিলিমিটার/বছর এবং বার্মিজ প্লেটের নিচে ৩৫ মিমি/বছর হারে ঢুকে যাচ্ছে যার ফলে ভু অভ্ভন্তরে প্রচন্ড শক্তি জমা হচ্ছে ও ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে. এই ফাটল বা ফল্ট্গুলোতে প্লেট বাউন্ডারির নড়াচড়ার ফলেই হতে পারে প্রলয়ন্কারী ভূমিকম্প. বাংলাদেশে ও তার সীমান্তবর্তী এলাকায় এরকম কয়েকটি ফল্ট রয়েছে- ডাউকি ফল্ট যার অবস্থান দেশের উত্তর পূর্ব সীমান্তে ৩০০ কিমি এলাকাজুড়ে. আরো আছে মধুপুর ফল্ট যা দেশের মধ্যভাগে উত্তর দক্ষিনে ১৫০ কিমি এলাকাজুড়ে, আছে সিলেট- আসাম ফল্ট যা উত্তর-পূর্ব থেকে উত্তর দক্ষিনে ৩০০ কিমি বিস্তৃত. গবেষণায় দেখা যায় যে, যদি মধুপুর ফল্ট হতে একটা ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প ঢাকায় আঘাত করে তাহলে আনুমানিক ৭২,৩১৬ টি স্থাপনা পুরোটাই ধসে যাবে, আংশিক ক্ষতিহবে ৫৩১৬৬ টির. বুঝতেই পারছেন অবস্থা কতটুকু ভয়াবহ হতে পারে! তখন ঢাকা হবে একটা ধন্সস্তুপের শহর! আমরা মুখে টেকসই উন্নয়নের কথা অনেক কপ্চালেও এই কথা ঠিকই জানি যে ঢাকায় টেকসই উন্নয়ন বলতে কিছুই হয় নি, প্রায় পুরোটাই অপরিকল্পিত. আর এই ভুমিকম্পকে মোকাবেলার জন্য যে প্রস্তুতি দরকার তাও আমাদের নেই. এইটা সকল সরকারেরই বের্থতা. আর নিয়ম না মানার ক্ষেত্রে তো ঢাকাবাসীরা ওস্তাদের ওস্তাদ! এখানে টাকার বিনিময়ে যেকোনো প্রকার দুর্নীতি করতে কারো বাধে না. ভুমিকম্পের ভয়াবহতা থেকে পার পেতে যেমন বিল্ডিং কোড মানা দরকার তেমনি দরকার গণ প্রচার ও গণ সচেতনতা. এই সচেতনতা একদিনে হবার নয়, এজন্য নিয়মিত মাস মিডিয়াগুলোতে ভূমিকম্প সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে. বিশেষ করে রাজধানীর বহুতল শিল্প ভবন যেমন গার্মেন্ট ও অনন্য কারখানার শ্রমিকদেরকে আগে জানাতে হবে. ভবনগুলোতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে অতি শীঘ্রই. আর সরকারকে ভাড়ামি থেকে বের হয়ে এসে তাদের সত্যিকার দায়িত্ব পালনে তত্পর হতে হবে. জাগো বাহে! কোনটে সবাই?

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।