আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনলাইন-অফলাইন-স্বনাম-বেনাম-ভূয়া নাম.........

"এই বিংশ শতাব্দীতে আলো আঁধারের আরেক রকম মানে, যেখানে সূর্যের আলো বা প্রদীপের ব্যবহার নেই; সেখানে অন্ধকার..."

অনলাইনে আর অফলাইনে মানুষের চেহারা ভিন্ন থাকে কেন? এই ব্যাপারটা নিয়ে আজকাল ভাবছি। আমি এমন একজনকে চিনি যে বাস্তবে খুব নিরীহ গোবেচারা ধরণের মানুষ; রাজনৈতিক আলাপ দেখলে মৃদুকণ্ঠে নিজের মতামতটুকু দিয়ে চুপচাপ অন্য সবার কথা শুনেন। কেউ জোর গলায় প্রতিবাদ করলে মিইয়ে যান। কিন্তু ইনিই ব্লগে বা অনলাইন ফোরামে অশ্লীল গালাগালি করেন নিজের মতবাদ প্রতিষ্ঠা'র প্রত্যাশায়। কেন এই বৈপরীত্য? আবার এমন অনেকজনকে দেখেছি যারা অনলাইনে খুব চিন্তাশীল আর জনদরদী ব্যক্তিত্ব।

কবি আর কবিতা নিয়ে থাকেন সারাক্ষণ; ব্লগীয় বাংলা শব্দের ভিড়ে সর্বদা প্রমিত বাংলা আউড়ে যান। উত্তরাধুনিকতা আর আধুনিকতার পার্থক্য নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন; রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি কে তা নিয়ে গভীর গবেষণায় মত্ত হন। এই লোকটিই আবার ইন্টারনেটের বাইরে অন্যমানুষ। খাস বাংলায় চাকরকে গালাগালি করেন; লোকাল বাসে-রাস্তাঘাটে লোকজনের সাথে পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া বাঁধিয়ে দেন। এরকম উদাহরণ একটা নয় ভূরি ভূরি।

। ছদ্মনাম নিলে যা খুশি তা করা যায়। । নিজের মত প্রকাশে সুবিধা হয়; যারা নেয় বোধহয় একারণেই ছদ্মনাম নেয়। আমিও নিয়েছি।

সামুর নিয়মিত পাঠক হলেও বছর দুয়েক আগে রেজিস্ট্রেশনের পর বহুদিন একাউণ্টে ঢোকা হয় নি। আজকে লগইন করতে যাবো যখন দেখি ইউজার নেম ভুলে গেছি। । ক্লান্ত পথিক ঠিক ছিলো এরপরেও সংখ্যা নিয়ে গণ্ডগোল জিরো জিরো সেভেন নাকি ট্রিপল জিরো?? বেশ খানিকটা চিন্তা করে বের করতে হলো। তখনই এই হাবিজাবি চিন্তাগুলো মাথায় এলো; বুঝতে পারলাম এই অযথা হয়রানি আসলে ছদ্মনিকের ফল, নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করলে এই সমস্যাটা কখনোই হতো না।

একটু গুছিয়ে চিন্তা করার চেষ্টা করলাম ব্লগে ছদ্মনামে কেন লিখেন ব্লগাররা--- ১) ছদ্মনামে লিখলে বাস্তবজীবনে যে আচরণগুলো করতে লজ্জা লাগে তা ইচ্ছামতো করা যায়। । ভালো-খারাপ দু'অর্থেই (উপরে আমার অভিজ্ঞতা দ্রষ্টব্য) ২) জীবনের অনেক কষ্টকর অথবা চাঞ্চল্যকর ঘটনা থাকে যা অনেকেই স্বনামে পাবলিক প্লেসে প্রকাশ করতে চান না। এ জন্য ছদ্মনামকে উপযুক্ত মনে হয়। মনের চাপা কথাগুলো বলা যায় সমূহ বিপদকে এড়িয়েই।

৩) বিশেষ কোনো প্রোপাগাণ্ডা চালানোর জন্য নির্লজ্জ আচরণ অথবা ক্ষমতাবান কারো বিরুদ্ধে গোপনীয় এবং স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁস করা। যেখানে ফাঁসকারীর পরিচয় প্রকাশ পেলে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন। ৪) বৈষয়িকতা আর মননশীলতা এই দু'স্বত্তাকে আলাদা করে ফেলা। । যাতে একজনের ছাপ আরেকজনের উপর না পড়ে।

এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ 'শহীদুল জহির'। উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা হয়েও তিনি ছদ্মনামে লিখতেন; তার অফিসে লেখালেখির ব্যাপারে কোন আলোচনাও করতেন না কখনো। ৫) নিজের নামটা লেখালেখির প্রসারের জন্য উপযুক্ত মনে করেন না হয়ত কেউ কেউ। । তাই শ্রতিমধুর দারুণ দারুণ নিক নিজের জন্য বেছে নেন তারা।

। আর আর মনে আসছে না...... ??????

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।