আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পেশা-বেকারত্ব



পেশায় বেকার মুখটা তাপহীন সূর্যের নীচ দিয়ে হাটতে হাটতে কেমন যেন পিঙ্গল বর্ণ ধারণ করেছে। বেকার সংঘ সদর দফতর(!) প্রতিনিয়ত এইসব তামাটে, পিঙ্গল বেকার মুখগুলোর জন্য তহবিল গঠন করে চলেছে। এই উদ্যোগ, সেই উদ্যোগ। কত্তো কি ! অভিজ্ঞতা চাই, অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতাহীনতায় না মিলিবে তহবিল, না মিলিবে সাহায্য।

উপোস থাকার অভিজ্ঞতা, মরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। চাই-ই চাই। এই সব ভাবনার জঙ্গল পেরিয়ে একদিন গলির মুখের দোকানটায় আরশির মুখোমুখি হয়ে যায় বেকার মুখটা। লালচে চোখগুলো প্রতিসরিত আলোর ফিরে আসাতে চমকিত হয়। ইউরেকা, এইতো বিজ্ঞান।

খাড়া নাকের ফুটো দুটো বিরিয়ানীর খুশবু তো খোঁজে না ! এটা কি রাজনীতি ! ললাটের আকৃতি তিন আঙ্গুল বিশিষ্ট। চার আঙ্গুল নয় কেন ? ইহাই কি ভাগ্য ! চুল তার কবেকার........। দর্শন বইকি ! মানুষের দন্তরোগ হয় কেন ? বোধ হয় বেশী ভক্ষণ করলে ! হা-করা মুখটা চিকিৎসার মর্মোপলদ্ধি করে। না খেলে কত্তো লাভ ! মুখাবয়ব লম্বা মানে দৌঁড়বিদ। গোল মানে আরামবিদ।

আর সব মিলে যে জীবন সে-তো ক্রীড়নক। বত্রিশটা দন্ত প্রদর্শন মানে সুখ। দৃশ্য ধারণ অঙ্গ বেয়ে পানির স্রোত বইয়ে দেয়া মানে দুখ। দেখতে দেখতে একসময় দাড়ি গজে উঠে। স্নো-পাউডারের ভালোবাসায় লালিত দাড়িরাও আরশির প্রতিবিম্বের কাছে ভিড় জমায়।

নিশ্চিত, এটা কোন কবিত্ব নয়। বেকার মুখটা সহজেই সুখাভিনয় করতে পারে। দুখাভিনয় সেখানে নগন্য। তহবিল আসেনা। সাহায্য আসেনা।

প্রশ্নবানে জর্জরিত আরশি। ক্ষুধার মানে কি গণতন্ত্র ? ঘৃণার মানে কি সংবিধান ? বেকারত্বের মানে কি স্বাধীনতা ? হারামজাদা কোন উত্তর দিতে পারে না। বেকার মুখটা সন্দিগ্ধ সৈনিক বেশে প্রস্তুত থাকে সারাদিন। মিছিলে মিছিলে খুঁজে ফিরে সাহায্য। সর্বগ্রাসী নদীর মত মিছিল সবকিছুকে গ্রাস করে ফেলে।

লালদীঘি, আউটার স্টেডিয়াম, প্যারেড ময়দান। প্রত্যেকটা মঞ্চ হয়ে ওঠে এক একটা আশা-আকাংখার প্রতীক। প্রত্যেকটা মাঠে মানুষের ভালোবাসায়(!) হলুদাভ ঘাসগুলো আর একবার সবুজের স্বপ্ন দ্যাখে। আর যা-ই হোক, সবুজ ঘাসের গণতন্ত্রতো ফিরে আসবে ! প্রত্যেকটা মাঠের রাত্রিযাপনকারী সামাজিক জীবগুলো আর একবার ঘৃণাবিহীন সংবিধানের স্বপ্ন দ্যাখে। মুখ ফিরে যায় প্রকৃতির কাছে।

প্রকৃতিটাই আরশিময় যেন ! লুকিং গ্লাস সমেত বিএমডব্লিউ, ওয়ান স্টপ শপিং মল। গ্লাস ছাড়া একটি দিনও কি চলে ? মুখ ফিরে যায় মুখের কাছে। মুখ-ই মুখকে বোঝে। মমতামাখা মুখটাই শুধু। - কিরে, কিছু হলো ? - না মা।

চাকরির বাজারে ‘অভিজ্ঞতার অগ্রাধিকার’। আমার যে কোন অভিজ্ঞতা নেই। - কেন ? এতগুলো বছর পড়ালেখা করলিনা ! - সে-তো জ্ঞান অর্জন। - তাহলে ওই জ্ঞানে কি চাকরি হয় না ? - না মা। বেকারত্ব - না কোন জ্ঞান, না কোন অভিজ্ঞতা।

মা বোঝেননা। দাতাদের বোঝার দরকার নেই। গ্রহীতা হতে হলে বাণিজ্য বুঝতে হয় তো !

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।