আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বান্দরবান-পরিভ্রমণ

আপাতত ঘুরপাক খাচ্ছি!
এ বছর গেট টুগেদার উপলক্ষে বান্দরবান গিয়েছিলাম ঘুরতে। প্রথমেই গিয়েছিলাম বগালেক পাড়ায়। দু'রাত্রী ছিলাম বগালেকপাড়ার লারামের রেষ্ট হাউজে। বগালেক। বগালেকপাড়া থেকেই আমাদের অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল।

সময়টা ছিল ১৮-২২ ফেব্রুয়ারী ২০১০। প্রকৃতি বেশ রুক্ষ ছিল ছবিতে যা স্পষ্ট। এর আগে শুধু বগালেক নিয়ে পোষ্ট দিয়েছিলাম। সবাই বেশ হতাশ ছবি দেখে। তাই প্রকৃতি যখন সজীব ও সতেজ থাকে তখনই বান্দরবান ভ্রমণে যাওয়া উত্তম।

আমাদেরকে চাঁদের গাড়ী নিয়েই ঘুরতে হয়েছে। কারণ বিভিন্ন বয়সী লোকজন ছিল সঙ্গে। কেওক্রাডাং শৃঙ্গ যাওয়ার পথে প্রথমেই দার্জিলিং পাড়া দেখা গেল কিন্তু ছবি নিতে পারিনি। এরপর কেওক্রাডাং শৃঙ্গ। কেওক্রাডাং পার হয়ে পাসিংপাড়া ও জাদিভাইপাড়া ক্রমান্বয়ে যেতে হয়।

পাসিংপাড়া -- ২৯০০ ফুট উচ্চতায় বাংলাদেশের সব্বোর্চ গ্রাম। নিচের ছবিটিও পাসিংপাড়ার--- পাসিংপাড়া দেখার পর জাদিভাইপাড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। জাদিভাইপাড়া। আমাদের গাইড বলল যে সামনে একটি ঝর্ণা আছে। আপনারা চাইলে দেখে আসতে পারেন।

রওয়ানা দিলাম। পথে সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য চোখে পড়ল। রক্তলাল ফুটন্ত ফুলসহ গাছ। অনেকের কাছেই পরিচিত এই গাছটি। পথে যেতে যেতে একটি ছড়ার দেখা মিলল।

ছিলাম তৃষ্ণার্ত। এই স্বচ্ছ পানি দেখে পান করার ইচ্ছে হলো। কিন্তু দেখেই তৃষ্ণা মেটাতে হলো। পাহাড়িয়া ছড়া। পথে বিভিন্ন প্রজাতির বিশালাকার গাছপালা চোখে পড়ল।

ঝর্ণার দেখা মিলছে না। গাইড শুধু বলে এইতো সামনে--এইতো সামনে। গাছের ফাঁকে লুকোচুরি। গাছগুলো দেখে মনে হচ্ছে সেলাম জানাই মহাশয়দের---কিন্তু নাম জানিনা বেশীর ভাগ গাছেরই। কি নামে সেলাম জানাবো।

গাছটির পাতা আছে তাই এনারে সেলাম জানালাম চুল সমৃদ্ধ বৃদ্ধমামা বলে। নিচের জনরে টাক মামা বলে সম্বোধন করা যায়। পাহাড়ী ছড়া, গাছপালা ---প্রকৃতি দেখা শেষ। পানি যা ছিল অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে।

কিন্তু ঝর্ণা আপার দেখা নেই। পরিশেষে এমন একটা জায়গায় গিয়ে ঠেকলাম যেখান থেকে নিচে নামতে গেলে বেশ ঝুঁকি নিতে হবে। তাই আর সামনে এগোলাম না। দু'জন অতিআগ্রহী ঝর্ণা আপার সঙ্গে দেখা করে এসেছে। এবার ফেরার পথে কেওক্রাডাং দেখার কথা।

চলে আসলাম উপরে উঠার সিড়ির কাছে। ঐতো সামনে দেখা যাচ্ছে আমাদের বহুল আলোচিত-পুস্তকে পঠিত স্বপ্নচূড়াকে------ প্রস্তরফলকে লেখা সর্বোচ্চ চূড়া ৩১৭২ ফুট । জিপিএস গুলোতে এরর থাকায় একেকটাতে একেক রকম ভ্যালু দেখায়। কিন্তু ৩২০০ ফুট এর কাছাকাছিই এর উচ্চতা। কেওক্রাডাংয়ের সর্বোচ্চ চূড়ার খ্যাতি আর নেই।

আমার জানামতে এখন তাজিংডং বা বিজয় হচ্ছে সর্বোচ্চ চূড়া। উচ্চতা এবং নামাঙ্কিত প্রস্তরফলক। জনগণের ইচ্ছে হলো ইতিহাসটা ধরে রাখার। তাইতো-- কেওক্রাডাংয়ে ম্যাঙ্গোপিপল। আমাদের সহযাত্রী ১১ মাস বয়সী আইমান বাবুটিই নাকি সর্ব কনিষ্ঠ অভিযাত্রী।

পোজ দেয়ার জন্য তার হাতে ধরিয়ে দেয়া হলো একটি সানগ্লাস। সে রেকর্ডটা স্মরণীয় করে রাখার উপায় খুঁজছে। সানগ্লাসটি সত্যি সত্যি ভেঙ্গে ফেলে ইতিহাস গড়ল! চূড়া থেকে দেখা দৃশ্যপট--------- পরের দিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা এবং বিভিন্ন স্পটগুলো ঘুরে দেখা হয়। নিলাচল থেকে বান্দরবান শহরটা এবং আশেপাশের দৃশ্য দেখা যায় পাখির দৃষ্টিতে-------- দূরে বান্দরবান শহর দেখা যাচ্ছে। শৈলপ্রপাত হচ্ছে আর একটি পর্যটন স্পট।

এখানে একটি ছড়া আছে। ছড়াটি নেমে দেখার সময় সাবধানে হাঁটতে হবে। তা নাহলে চিতপটাং হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমাদের সামনে এক পিচ্ছি তার মা সহ চিতপটাং হয়েছিল। শৈলপ্রপাত।

সাঙ্গু নদীটি প্রায় পুরো বান্দরবান জেলার বুক চিরে চলেছে যেন। এক নজরে সাঙ্গু নদী। আমাদের সর্বশেষ দেখা স্পট হচ্ছে স্বর্ণমন্দির যা বৌদ্ধদের মন্দির। স্বর্ণবাঁধানো মন্দির ভাবলে ভুল হবে! কালারটা সোনালী কিনা - তাই এই নাম। অন্য কোন ইতিহাস থাকলে জানিনা।

স্বর্ণমন্দির। স্বর্ণমন্দিরে মূর্তি খঁচিত খুটি। বগালেক দেখতে চাইলে
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।