আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেখ মুজিব যে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, তার প্রমাণ দাবী করেছেন দেলোয়ার


খন্দকার দেলোয়ার তার তীর্যক বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য নিন্দিত ও নন্দিত। গতকাল তিনি প্রশ্ন তোলেছেন এবং আহ্বান জানিয়েছেন শেখ মুজিব যে স্বাধীণতা ঘোষণা করেছেন, তার প্রমাণ দিতে। গত দু বছর যাবত আমি নিজেও প্রমাণ খোজ করছি। কিন্তু শেখ মুজিবের স্বাধীনতার ঘোষণার স্বপক্ষে প্রত্যক্ষ কোন প্রমাণ নেই। নীচে ২৫ ও ২৬ মার্চের একটি নিঘন্ট দেয়া গেল।

২৫ মার্চঃ সন্ধ্যা ৬টা শেখ মুজিব দেখা করেন তারেক আলীর পিতা ও রেহমান সোবহানের সাথে। সন্ধা ৭টার মধ্যে শেখ মুজিব ২৭ মার্চ আহ্বান করেন হরতাল ও এ বিষয়ে প্রচারপত্র বিলি করেন সর্বত্র। ফজলুল হক মনি সন্ধ্যায়ই চলে যান টুঙ্গিপাড়া। রাত ৮টায় এইচ.এম. কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম শেখ মুজিবের সাথে দেখা করে চলে যান যার যার গন্তব্যে। রাত ৯টায় শেখ কামাল সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যান।

রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে শহরে বিভিন্ন ব্যারিকেডের নিকট পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে শুরু হয় জনগণের মুক্তিযুদ্ধ। রাত সাড়ে ১০টায় আসেন পূর্ব পাকিস্তান শিপিং কর্পোরেশনের এমডি ক্যাপ্টেন রহমান, নৌবাহিনীর দুজন প্রাক্তন কর্মকর্তা কমান্ডার ফারুক ও লে. মতিউর রহমান। রাত ১১টায় আসেন সিরাজুল আলম খান, আ.স.ম.আব্দুর রব ও শাজাহান সিরাজ। তারা শেখ মুজিবের সাথে কথা বলে কিছুক্ষণ পর চলে যান। রাত ১১ টার কিছু পর আসেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ প্রধান আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি শেখ মুজিবের সাথে সাক্ষাত করে তাঁকে আত্মগোপন করার অনুরোধ জানান। রাত ১১.৩০ মিনিটে আসেন ঝন্টু (জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা জাকারিয়া চৌধুরীর ভাই)। ঝন্টু শেখ মুজিবকে পাকিস্তানী সৈন্যদের অপারেশন সার্চলাইটের নৃশংস হত্যা ও ধ্বংস যজ্ঞ ঘটানো শুরু করার কথা অবহিত করে। ঝন্টুর বর্ণনা শুনে শেখ মুজিব ‘হাসিনা, রেহানা ও জেলীকে নিয়ে’ ভাড়াকৃত ফ্লাটে চলে যেতে বলেন এবং তারা ৩২নং রোডের বাসা ত্যাগ করে চলে যান। রাত ১২টায় পাকিস্তানী সৈন্যরা ছড়িয়ে পড়ে ঢাকার সর্বত্র।

শুরু হয় তুমুল প্রতিরোধ যুদ্ধ। ২৬ মার্চ রাত ১টায় পাকিস্তানী সৈন্যরা শেখ মুজিবের বাসায় অভিযান শুরু করে এবং আধঘন্টার মধ্যে শেখ মুজিব তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত শেখ মুজিবের সাথে যাদের দেখা হয়েছিল, তাদের কাউকে শেখ মুজিব বলেন নি যে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণার পরিকল্পনা নিয়েছেন বা উদ্যোগ নিয়েছেন বা প্রয়োজন হলে করবেন। সেক্ষেত্রে দেলোয়ার যে দাবী করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে যারা বিশ্বাস করেন যে শেখ মুজিব সত্যই ২৬ মার্চ স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিলেন, জাতির ভবিষ্যত প্রজন্মের দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটানোর জন্য তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেশ করা উচিত বলে মনে করি। শেখ মুজিব নিজেও স্বাধীনতা ঘোষণার কোন প্রমাণের বিষয় উল্লেখ করে থাকলে তাও জাতির নিকট প্রকাশ করা উচিত।

এ প্রসঙ্গে আমার একটি অনুসন্ধানী পোস্ট ছিল। কারো কৌতুহল হলে দেখতে পারেন "১৯৭১ সালের ২৫ ও ২৬ মার্চের শ্বাসরুদ্ধকর সাড়ে ৭ ঘন্টা : স্বাধীনতার ঘোষণা ও কতিপয় বিভ্রান্তি
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।