আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীলিমার-নীল ©

We have a best in our self and I have unlashed mine. YEAH, I FEEL COOL!!!

গল্পটা প্রথম মনের ঝাল! নামে শুরু করেছিলাম। কয়েক জনে পড়তে চাইলেন তাই কয়েক পৃষ্টা লেখেছি। এক যুবতী পার্কের এক পাশে বসে আকাশে ভাসা মেঘের দিকে তাকিয়ে আঙুল দিয়ে ইশারা করে বিড়বিড় করছিল। এক যুবক কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিল আর মাথা দুলিয়ে হাটছিল। ছ্যাঁকা ট্যাঁখা খেয়েছে হয়তো তাই বিবাগী বিমনার মত হাটছিল।

হঠাৎ হুমড়ি খেয়ে পড়ল গিয়ে যুবতীর বগলে। 'ওই ঘাগু! আজ তোরে খাইছি। ' যুবতী দাঁত কটমট করে বলে দাঁড়াল। 'ওই অবলা! কার সাথে কথা বলছি জানিস? হুশে কথা বল নতুবা বেহুশ করে ফেলব। ' যুবক চোখ পাকিয়ে বলল।

'আরে ওই! আমি কে তুই জানিস?' বলে যুবতী মাথা দিয়ে ইশারা করল। 'আমি তোরে চিনতেও চাইনা। যা ভাগ নতুবা মুণ্ডু ফুটাব। ' বলে যুবক হাত দিয়ে ইশারা করল। 'মনের ঝাল ঝাড়ার জন্য আজ তোরে আচ্ছাসে প্যাঁদাবরে।

' বলে যুবতী এদিক ওদিক তাকাল। যুবক মাথা নেড়ে মুখের ভাব বদলিয়ে বলল, 'আজ তোরে বাহাত্তুরে পেয়েছেলো। ' অনতীদূরে একটা ডাল দেখে যুবতী তড়বড় করে হেটে যেয়ে হাতে নিলে, যুবক হেসে কুটিপাটি হয়ে বলল, 'ভানুমতীলো! আজ তোরে যমের জাঙ্গালে পাঠাব। ' ‘আজ তোর সাড়ে বারটা বাজিয়েই ছাড়ব। ’ বলে যুবতী যুবকের পিঠে বাড়ি বসাল।

যুবক আড়মোড়া দিয়ে যুবতীর চোখের দিকে তাকিয়ে মুখের ভাব বদলিয়ে ঘুরে পিঠ পেতে বলল, ‘আচ্ছাসে পিঠিয়ে আমার পিঠে তোর মনের ঝাল ঝাড়। ’ যুবতী মাথা নেড়ে ডাল ছুঁড়ে ফেলে যুবকের সামনে এসে হাত জোড় করে বলল, ‘আমার ভুল হয়েছে। মন ভালো নয়। বিয়ে করবে বলে কথা দিয়েছিল কিন্তু সর্বনাশ করে পালিয়েছে। ’ ‘ওই ল্যালা কি বলছিস! তোর মাথা ঠিক আছেতো?’ রাগান্বিতসুরে বলে যুবক মাথা দিয়ে ইশারা করল।

‘কোথায় গিয়ে কেমন করে আত্মহত্যা করব তা নিয়ে ধ্যান চিন্তা করছিলাম। ’ বলে যুবতী আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, ‘শুনেছি আত্মহত্যা করা মহা পাপ, তাই স্থিরসিদ্ধান্ত করতে পারছিনা। তুই এক কাজ কর, মনের ঝাল ঝাড়ার জন্য গলা টিপে আমাকে মেরে ফেল। ’ ‘পাগলী কি না বলে আর ছাগলী কি না খায়! এই জন্য পাগল-ছাগলের কাছ থেকে আমি দূরত্ব বজায় রাখি। দূরে থাক! কাছে আসলে কল্লা ফাটাব।

’ চোখ পাকিয়ে আঙুল নাচিয়ে বলে যুবক পিছু হাটতে লাগল। । ভালোবেসে আমারে কলঙ্কিনী বানাইলগো বন্ধুয়ায়, গুণ করে আমারে ঘরছাড়া করলগো বন্ধুয়ায়, বন্ধুয়ার বিরহে তুষেরাগুন জ্বলে আমার কলিজায়। বিরহিণীর মত উদাস সুরে যুবতী বলল। যুবক কিছু না বলে মাথা নেড়ে হাটতে লাগল।

যুবতী হাঁক দিয়ে বলল, ‘ওই কাপুরুষ! বলে না ছিলে যমের জাঙ্গালে পাঠাবি। যা পারবিনা তা কখনো বলবিনা। বেড়া কোথাকার! দৌড়ে দাদীর বগলে যা, নতুবা হাত পা ভেঙে ল্যাংড়া বানাবো। ’ যুবক হেসে কুটিপাটি হয়ে বলল, ‘দূর ল্যালা! ওই, আলাইর সাথে যখন টক্কর দিতে পারিসনা তখন কু ডাকিস কেনলো? যা দৌড়ে নানীর উরে যা, নতুবা ভূতে দৌড়াবে। ’ ‘ওই তোর নাম কি? আমার নাম নীলিমা।

’ নীলিমা বলল। যুবক হাসতে হাসতে বলল, ‘নীলিমার নীল হলে গণ্ডগোল লাগবেলো। ’ ‘তোর নাম নীল নাকি?’ নীলিমা অবাক হয়ে বলল। ‘ডাক নাম। ’ নীল বিদ্রূপহেসে বলল।

‘আমিও ডাকনাম বলেছিলাম। তোর আসল নাম কি?’ বলে নীলিমা মাথা দিয়ে ইশার করল। ‘খামোখা হয়রানি করার জন্য মামলা ঠুকতে চাস নাকি?’ বলে নীল আড় চোখে তাকাল। ‘ওই শুন! জানিনা আর কয়দিন বাঁচব? কিন্তু বেঘোরে মরার সময় তোকে অভিশাপ দিতে চাইনা। আমার পাশে আয়, মন খুলে তোর সাথে গপসপ করব।

’ বলে নীলিমা হাতের ইশারায় ডাকল। ‘এক কাজ কর, কলাগাছের মাথায় রশি বেঁধে মরে যা; কষ্ট কম হবে। কাঁঠাল গাছে উঠতে পারবিনা, ধমাৎ করে মাটিতে পড়ে খামোখা হাত পা ভেঙে ল্যাড়ী হবি। ঔ দেখ কলাগাছ, দড়িকলশি লাগবেনা; ওড়না দিয়ে কাজ চালাতে পারবি। গাছও বেশী উঁচা নয়, লাফ দিয়ে উঠতে পারবি।

দৌড়ে যা। ’ বলে নীল হাত দিয়ে ইশারা করে হাটতে লাগল। তার কথা শুনে নীলিমা বিচলিত হয়ে মাথা নত করে হাতের পৃষ্টে অশ্রু মুছে মাথা নেড়ে বলল, ‘প্রেমে মজে পাপিষ্ঠা হলাম আমি প্রভুকে মুখ দেখাব কেমন করে?’ নীল থমকে দাঁড়িয়ে রাগান্বিত হয়ে ঘুরে দাঁতে দাঁত পিঁষে বলল, ‘ওই! বদমাশের প্রেমে মজার জন্য আমি তোকে মিনতি করেছিলাম নাকি?’ ‘নীল, আমি নিজেকে মারতে চাইনা। হৃদয়হীনের মত দয়া কর, তোর জন্য দোয়া করব। ’ নীলিমা মিনতি করে বলল।

‘আমি অতি দুঃখিত। মা জাতিকে আমি মারতে পারবনা। শুন, আমাকে মেরে ফেল; ওরা তোকে ফাঁসি দিয়ে দেবে। ’ বলে নীল মৃদু হাসল। নীলিমা দাঁতে দাঁত পিঁষে ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে পলকে ডাল হাতে লেয়ে দৌড়ে এসে নীলের মাথায় বাড়ি বসাল।

বাম হাত মাথায় বুলিয়ে মাটিতে বসে হাসতে হাসতে নীল বলল, ‘দূর! তোর গায়ে এক রত্তি জোর নেই। ’ ‘আমাকে মেরে ফেল, নতুবা গলা ফাটিয়ে চিল্লিয়ে বলব; তুই আমাকে মুগুর দিয়ে মেরেছিস। ’ বলে নীলিমা দাঁতে দাঁত পিঁষল। নীল চিন্তিত হয়ে বলল, ‘সব খুলে বল, পারলে সাহায্য করব। আরেক কাজ করলে কেমন হয়? ক্লিনিকে চল, ওরা সব কলঙ্ক ফেলে দেবে।

’ নীলিমা কপাল কুঁচকে বলল, ‘আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম কিন্তু সে আমার সাথে বদমাশি করতে চেয়েছিল। পাত্থর ছুঁড়ে বলেছিলাম; বিষ গিলে মরব তবুও তোর মত বদমাশকে প্রমিক ডাকবনা। ’ ‘কল্লা ফাটিয়েছিলেতো?’ কপাল কুঁচকে নীল বলল। ‘জানিনা। ’ বলে নীলিমা কাঁধ বাঁকাল।

‘বাসায় চলে যা। আর শুন, নাম ঠিকানা বল; আজ রাতে বদমাশটার জীবন লীলা সাঙ্গ করে দেব। ’ বলে নীল মুখের ভাব বদলাল। নীলিমা বিচলিত হয়ে মাথা নেড়ে বলল, ‘তুমি কে?’ ‘আমি এক ছেলে, আমি এক ভাই। এক স্বামী হবার জন্য ভালোবেসেছিলাম।

এক বাপ হতে চেয়েছিলাম। যা বাসায় চলে যা। শুন, প্রেম ট্রেম খুব খারাপ, মন অন্তর নষ্ট করে ফেলে। এসব থেকে দূরে থাকাই ভালো। ’ বলে নীল বিরক্ত হল।

‘নীল, আমাকে ক্ষমা করে দে। আমি ভেবেছিলাম কাউকে ভালোবসলেই কলঙ্কিনী নাম লাগে। আমি আসলে নিষ্কলঙ্ক। আজ প্রথম বদমাশটার সাথে পার্কে এসেছিলাম। ’ বলে নীলিমা নীলের চোখের দিকে তাকাল।

‘আল্লাহ নিগাবান হলে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারেনা। বাসায় চলে যা, আমিও বাসায় চলে যাব। তোর সাথে পরিচয় হয়ে খুব ভালো হয়েছে। এখন যা, ছুটির দিন পার্কে আসলে দেখা হবে। ’ বলে নীল হাত নাড়ল।

নীলিমা স্নিগ্ধহাসি হেসে হাত নেড়ে পিছু হেটে চলে গেল। নীল মৃদু হেসে ঘুরে হেডফোন কানে লাগিয়ে মাথা দুলিয়ে হাটতে লাগল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।