আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের সম্ভাবনা



জৈন্তাপুরের ডিবির হাওর সীমান্তের ডিবি বিলে বিএসএফ কর্তৃক পুনরায় সহস্রাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ। আহত হয়েছেন প্রায় ৪০ জন। আশঙ্কাজনক ১৪ জনকে ওসমানীতে প্রেরণ। অন্যদের জৈন্তাপুর উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ঘর-বাড়ী ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে।

সীমান্ত এলাকা এখন তমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিএসএফ ভারী অস্ত্র মওজুদ করছে এবং অতিরিক্ত বিডিআর মোতায়েন করা হয়েছে। জানা যায় গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় জৈন্তাপুর সীমান্তের ডিবির হাওর‘র দীর্ঘ দিনের বিরোধপূর্ন ডিবি বিলে মাছ ধরতে নামে ভারতীয় নাগরিকরা। এসময় বিএসএফর তাদের সহযোগীতা করতে ১২৮৪ পিলার অতিক্রম করে বাংলাদেশের প্রায় ১৫০ গজ ভিতরে প্রবেশ করে লাল পতাকা টানিয়ে দেয়। তখন বিডিআর প্রথমে মাইকিং করে ও পরে কাছাকাছি গিয়ে এসব কর্মকান্ডের জোড় প্রতিবাদ করে।

বিএসএফ লাল পতাকা তুলে নিলেও পিছু হটেনি মাছ ধরতে আসা ভারতীয় নাগরিকরা। এ সময় তাদের এমন আগ্রাসী তৎপরতার জবাব দিতে মাছ ধরতে নামে বাংলাদেশী প্রায় ৪০/৫০ জন নাগরিক। তখন উভয় পক্ষের মাঝে বেশ কয়েকবার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর কিছুক্ষন পর বেলা ২.৪৫ মিনিটের সময় বিএসএফ বাংলাদেশী নাগরিকদের লক্ষ করে ব্রাশ ফায়ার করলে এতে বিলে অবস্থানকারী বাংলাদেশী নাগরিকরা গুলিবিদ্ধ হয়ে কাঁধা মাঠিতে লুঠে পড়ে। গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করতে স্থানীয় জনতা এগিয়ে গেলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা অভিরাম গুলিবর্ষন করতে থাকে।

জবাবে যখন বিডিআরও পাল্টা গুিল ছুড়তে থাকলে তখন ডিবির হাওর, ঘিলাতৈল, খলারবন্ধ, ফুলবাড়ীসহ আশাপশ গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের আবাল বৃদ্ধবনিতা প্রানের ভয়ে ঘর-বাড়ী ছেড়ে তাৎক্ষনিক নিরাপদে ছুটাছোটি করে। অন্য দিকে বিলে আটকার পড়া গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করতে ব্যতি ব্যস্ত হয়ে পড়েন স্থানীয় জনসাধারন এবং কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তাদের স্বজনরা। একে একে গুলাগুলির ফাঁেক গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে দ্রুত নিয়ে আসা হয় জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তারপরও মারাত্মক ভাবে আহত ঘিলাতৈল গ্রামের মনা খা‘র ছেলে আবুল কালাম (৪০) কে ওসমানি মেডিকেল কলেজে প্রেরন তরা হয়। বিডিাআর বিএসএফ‘র মধ্যে সংঘটিত গুলাগুলি চলে এক টানা সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।

আহত অন্যরা বর্তমানে জৈন্তাপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আহতরা হলেন ঘিলাতৈল গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে গোলাম রহমান (৫০), হাফিজ উদ্দিনের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান আহমদ (৭০), আবুল হোসেনের ছেলে রফিক মিয়া (২৫), আমান উল্লাহর ছেলে মনির হোসেন (২০),আবুল কালামের ছেলে মতিন মিয়া (২০), আব্দুল জলিলের ছেলে আং রহমান (২২), কালা মিয়ার ছেলে আং রহিম (২৫), কবির (২৫), রুহুল আমিনের ছেলে লালন মিয়া (২৫), ডিরির হাওর গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে আক্তার হোসেন (১৭), ইসমাইল আলীর ছেলে রাসেল আহমদ (২২), আব্দুল মন্নানের ছেলে সুমন আহমদ (২৭), চন্দ্র মনি বিশ্বাসের ছেলে রাম বিশ্বাস (২৫), আকদ্দস আকই (২৮), মকবুল (২৭), লোকমান (৪৫), হাসিম (৪০), মাহুত হাটি গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে মাসুক আহমদ (৩০)। এছাড়া আরো বেশ কয়েকজনকে প্রথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় যাদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। রাতে জৈন্তাপুর হাসপাতালে ৫ জনকে রেখে বাকি ১৩ জনকে ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বিডিআরের পক্ষ থেকে আহত প্রত্যেক পরিবারকে ১ হাজার টাকা করে চিকিৎসা খরচ দেওয়া হয়েছে এ দিকে বিকাল সাড়ে ছয়টার দিকে বিডিআর এর সেক্টার কামান্ডার লেঃ কর্নেল নেয়ামুল ইসলাম ফাতেমী ঘটনা স্থলে ছুটে আসেন এব্ং সীমান্তের সার্বিক খোজ খবর নেন।

তাছাড়া দুপুর থেকে সীমান্তে অবস্থানে ছিলেন বিডিআর‘র উপÑঅধিনায়ক মেজর আব্দুল্লাহ আল মামুনর ভুইয়া। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুহবিুল হক মুহিব, ইউপি চেয়ারম্যান মুখলিছুর রহমান দৌল্যা ও এখলাছুর রহমান। এসময় তারা স্থানীয় লোকজনকে ধর্য্য ধারনের আহবান জানান এবং আহতদের চিকিৎসার খবর নেন। বিকাল পর্যন্ত গুলাগুলি থামলেও পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। একটি সুত্র জানিয়েছে সীমান্তের ওপারে বিএসএফ ভারী অস্ত্র মজুদ করছে এবং অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন রাখছে।

অন্য দিকে আজ যে কোন সময় উভয় দেশের সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হওয়ারও কথা রয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।