আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পদলেহকারী সারমেয়'র তালিকায় নতুন সংযোজন

সমাজ পচনস্তরের বিপ্রতীপ মেরুর এই বাসিন্দার পেট চলে শব্দ শ্রমিকের কাজ করে

সত্যি, মিডিয়া বানিজ্যের জোয়ার বইছে দেশে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মিডিয়া ধনীর সম্পদ পাহারা দেয়ার জন্য পোষা সারমেয়। যা প্রতিটি ধনীর থাকা আবশ্যক। একথা কেন বললাম? তথ্যক্ষুধা মেটাতে বসুন্ধরা গ্রুপ আনছে নতুন পত্রিকা দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। এই অল্পকাল পূর্বেই।

ঢাকঢোল পিটিয়ে বেশ খরুচে একটি মিডিয়া হাউস যাত্রা শুরু করেছে তাদের 'পুরো সত্য' নিয়ে। বিশ্লেষকদের মতে, সদ্যজাত কালের কন্ঠের জন্মই বসুন্ধরা গ্রুপের অবৈধ এজেন্ডাকে বৈধতা দান করার লক্ষ্যে। যদিও বিষয়টা মোটেই নতুন নয় বাংলাদেশে। এরকম উদাহরণ অনেকই আছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যমুনা গ্রুপের যুগান্তর পত্রিকা ও যমুনা টিভি, ট্রান্সকম গ্রুপের প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা সাথে এবিসি রেডিও।

এছাড়াও আছে ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের পায়তারায় চলা জনকন্ঠ, সংগ্রাম, আমার দেশ, নয়া দিগন্ত, দিগন্ত টেলিভিশন ইত্যাদি। একসময় ছিলো ভোরের ডাক ও ইনকিলাব। আমরা জানি গণমাধ্যমের কাজ নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। কোন নির্দিষ্ট শ্রেণী, গোষ্ঠির তাবেদারী করা না। কিন্তু হায় কলিকালে একি দেখছি আমরা।

আবার কোন কোন পত্রিকাতো বৈদেশিক অর্থের সাথে গোয়েন্দা সংস্থার অর্থও সমানে উদরস্ত করে চলেছে। এর ফলাফল কী? প্রমানস্বরূপ নজর দিন এইচ আর সি গ্রুপের দৈনিক যায়যায়দিন পতিকার দিকে। যা কিনা বসুন্ধরার সহযোগিতায় চলতো একসময়। এধরনের মিডিয়া সবসময় নিজের এজেন্ডার মাধ্যমে পাঠকের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়। পাঠকের বা জনগণের এজেন্ডা তাদের কাছে বরাবরই গৌণ।

তার উপর আছে তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ফায়দা বাস্তবায়নের প্রকল্প। পদলেহকারী সাংবাদিকদের জন্য উপরী পাওনা হিসেবে রয়েছে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রদূত হওয়ার সুযোগ। আবার সমর্থিত দল ক্ষমতায় থাকলে মিডিয়া হাউসগুলো তার গ্রুপের জন্য ব্যবসা বাগিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আছে রাষ্ট্রীয় সফরসঙ্গী হওয়ার লোভ। ভেবে দেখুন হলুদ সাংবাদিকতা আজ একটা গালিতে পরিনত হয়েছে।

যার প্রবর্তক যোসেফ পুলিৎজার। তার নামেই আজ পর্যন্ত প্রবর্তিত আছে এ সেক্টরের সেরা সাংবাদিকের পুরস্কার। উইলিয়াম হার্স্ট ও যোসেফ পুলিৎজার প্রথম হলুদ সাংবাদিকতা চালু করলেও তার নামে দেয়া পুরস্কার নিয়েই কিন্তু আজ সবাই গর্ব করছে। বাংলা উইকি : http://bn.wikipedia.org/wiki/পুলিৎজার_পুরস্কার এত কথা বলার উদ্দেশ্য- সম্প্রতি জানতে পারলাম ১০ টি টেলিভিশন চ্যানেলের সাথে আরও কিছু পত্রিকাও নাকি আসছে। ১০ টি চ্যানেল বা নতুন নতুন মিডিয়া তৈরির খবর কিছুটা দুশ্চিন্তারও বটে।

একদিকে নতুন মিডিয়া বাড়ছে অন্যদিকে কিছু পুরনো হাউস তাদের কলেবর ও অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে রহস্যজনকভাবে। তারপরও এ সেক্টরের অন্যতম পুরনো পত্রিকা ইত্তেফাক ধুঁকছে অন্তর্দ্বন্দে। সত্যিই গণমাধ্যমের দুর্দিন চলছে। এ উপলক্ষ্যে আসুন একটু পুরনো কাসুন্দি ঘাটি -ভোরের ডাক নামক পত্রিকাটির ৯০ ভাগ কর্মকর্তা কর্মচারী চাকরী ছেড়ে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিন এ। ভোরের ডাক পত্রিকার মালিক-সম্পাদক সমস্যার জের ধরে ভেঙ্গে গেছে পত্রিকাটি।

সম্পাদকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তারপরও সম্পাদক বর্তমানে ডিক্লেরাশন ধরে রেখেছেন। নিজ খরচে বের করছেন পত্রিকা। কেননা ভোরের ডাকের মাথায় রাখা বসুন্ধরা গ্রুপের ছাতাটি টেনে নিয়েছেন গ্রুপটির চেয়ারম্যান। ভোরের ডাক ছিল বসুন্ধরা গ্রুপের প্রযোজনার নাম।

কাগজ, কালি, অর্থ ইত্যাদি দিয়ে বসুন্ধরা সহযোগিতা করতো পত্রিকাটি প্রকাশে। কিন্তু সদ্য বসুন্ধরা গ্রুপের ১১০ কোটি টাকার মিডিয়া প্রজেক্ট-এ কালের কন্ঠসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকা মাঠে নামায় পূর্বের প্রজেক্ট ‌ভোরের ডাক নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছিল তাদের। অবশেষে সংস্কারপন্থী দল নিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ বের করতে যাচ্ছে নতুন পত্রিকা 'বাংলাদেশ প্রতিদিন'। মগবাজারে ইতোমধ্যে অফিসের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।