আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হে আল্লাহ পুলিশের চাকরি যাতে কারো না করতে হয় !!!!

সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায়......

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের উপর সরকারি দলের নেতা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের সাম্প্রতিক কর্মনির্দেশনায় রাজশাহীর পুলিশ প্রশাসনে অসন্তোষ বিরাজ করছে বলে সূত্রে প্রকাশ। বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাদের চাপে নীতি বহির্ভূত কাজে দৌঁড়ঝাপে ব্যস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অনিচ্ছা সত্ত্বেও একের পর এক সরকার দলের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খুবই বিরক্ত হয়েছেন কয়েকজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা। হলে সীট দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে দুইজন ছাত্র নিহত হবার ঘটনায় সরকারের চাপ বাড়তে থাক পুলিশ প্রশাসনের প্রতি। রাবি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন নিহত হবার পর দিনই পুলিশের আইজিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সশরীরে রাজশাহীতে আসতে বাধ্য করা থেকে শুরু হয় এই ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের দৌঁড়ঝাপ।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী স্বয়ং রাজশাহীতে এসে শিবিরের বিরুদ্ধে আওয়ামী জেহাদ ঘোষণা করেন। আর তা বাস্তবায়নের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেধে দেন। ফারুক হোসেন মৃত্যুর ঘটনাকে ইস্যু হিসেবে নিয়ে সরকারি দলের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে মাঠ কর্মীর দায়িত্ব পরে পুলিশ রাজশাহীর প্রশাসনের উপর। সরকার এই ঘটনায় প্রথমে রাজশাহীতে ‘জামায়াত শিবির বধ' মিশন ঘোষণা করে। পরে তার পরিধি বাড়ে দেশব্যাপী।

ফলে পুলিশের উপর চাপ বাড়তে থাকে। জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযানের নামে পুলিশের ঘুম হারাম করে দেয়া হয়। পুলিশকে দিয়ে একদিকে চালাতে থাকে শিবির নেতা কর্মীদের ধরপাকড় অভিযান অপরদিকে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের গার্ড অব অনার প্রদর্শনের মহড়া। পুলিশ প্রহরায় ছাত্রলীগকে রাবি ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠার বন্দোবস্ত করা হয়। এত কিছুর পরও পুলিশের ৭ জন সদস্যের ভাগ্যে জোটে কর্তব্যে অবহেলার নাম করে সাময়িক বরখাস্তের সরকারি নির্দেশ।

আওয়াম লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের মনমতো কাজ না করায় আরএমপির দুই উপ-কমিশনারকে আরো শাস্তি পেতে হয়। ওএসডি করা হয় পুলিশ উপ-কমিশনার সরদার নুরুল আমীনকে। তিনি সেদিন রাবি এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে ছিলেন। একই অভিযোগ বদলী করা হয় উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমানকে। অথচ এই দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে সবচেয়ে ভদ্র ও করিৎকর্মা বলে বিভিন্ন মহলে পরিচিত ছিল।

এদিকে গত ১২ তারিখে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাবি'র প্রগতিশীল বামপন্থি শিক্ষকেরা পুরো ঘটনার জন্য পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেন। এই ঘটনায় তারা রাবি ভিসির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এর পরদিন রাবি ভিসি সাংবাদিক সম্মেলন করে রাবি'র ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন আরএমপি কমিশনার নওশের আলী তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। রাবি ভিসির এ ধরনের মন্তব্যের ব্যাপারে পুলিশ কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি প্রত্যুত্তরে বলেন, বর্তমান রাবি প্রশাসনের ব্যর্থতাই এই ঘটনার জন্য দায়ী।

তারাই নানা আকাম-কুকাম করছে। আর পুলিশের উপর এর দায়ভার চাপাচ্ছে। এ ভাবে পুলিশের সাথে আওয়ামী নেতা ও রাবি প্রশাসনের মাঝে মানসিক দ্বন্দের শুরু হয়। যা সিটি মেয়রের দৃষ্টি গোচর হলে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নালিশ করে পুলিশ প্রশাসনের উপর আরো চাপ প্রয়োগ ঘটান বলে সূত্র জানায়। আরএমপির কয়েকজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার সাথে সামগ্রিক বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে তারা বলেন, বর্তমান সরকারের পলিসি কী তা বুঝা মুশকিল।

দেশ কোন দিকে যাচ্ছে সে ব্যাপারে আমরাও সন্দিহান। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে এভাবে ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা চাকরি জীবনে এবারই প্রথম। থানা পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কেমন আছেন এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে একজন কর্মকর্তা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করে একটি ইতর প্রাণীর নাম উল্লেখ করে বলেন, তাদেরও আরাম আছে কিন্তু বর্তমানে পুলিশের নেই। সরকারের নির্দেশ মতো কাম করেও বদলী, ওএসডি কিংবা বরখাস্তের আশংকা নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। রাত বিরাত নাই কখন কোথায় ওপারেশন চালাতে হবে তার কোন রুটিন নাই।

যখনি ডাক আসে তখনি দৌঁড়াতে হচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পর থেকে স্থানীয় পুলিশের ছুটিও বন্ধ হয়ে গেছে বলে অনেকে জানান। সরকারি নির্দেশ ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী ও মহাজোট নেতা-পাতিনেতাদের হুকুমের গোলাম হতে হচ্ছে বলে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আল্লাহ না করুন পুলিশের চাকরি কারো হোক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।