আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ৭ম ও কলেজের সেই ঘটনা

I will CHOOSE the TRUTH I BELIEVE . . . .

এটা আমার সপ্তম পোস্ট । আপনি বলতেই পারেন, ‘তো কি হইসে !!’ আসলে এইখানে একটা ব্যপার আছে । ৭ সংখ্যাটার উপর আমার বিশেষ দুর্বলতা আছে । আমার নামে আছে ৭টি লেটার । জন্মদিন হল ৭ম মাসের ৭ম তারিখ ।

আমি আবার ’০৭ ব্যাচ । ক্লাস সেভেনে রোল ছিল ৭ । [ক্লাস সিক্সেও] । ৭ সংখ্যাটা ঘুরে ফিরে খালি ফিরে ফিরে আসে । এখন আমার রোল ৬৭ ; সেকশানের মাঝে ৭ম ।

…………আরো এমন অনেক কিছুই … আজ আবার ফেব্রুয়ারী মাসের ৭ তারিখ । ভাবলাম, ৭ নাম্বার পোস্ট টা আজকেই দেওয়া যাক । কি নিয়ে লিখব ভাবতে ভাবতে কলেজের একটা স্মৃতি মনে পড়ল । কিন্তু এটা আবার চিৎকার করে বলার মত না । তাই কানে মুখে বলছি, আপনেরা চোখ বন্ধ করে শুনেন , থুড়ি , পড়েন ।

নটর ডেম কলেজের গর্বিত [!] ছাত্র আমি তখন । প্রথম টার্ম শেষ হয়ে আবার ক্লাস শুরু হয়েছে । টার্মের Biology পরীক্ষা আমার যাচ্ছেতাই হয়েছিল । অজুহাত একটা ছিল – ভীষন জ্বর । পরীক্ষা দিতে এসে দেখি ১০৩ ডিগ্রী জ্বর ।

আমাদের আবার Botany আর Zoology একসাথে হয় । আমি বলতে গেলে পুরো NDC তে ওই একবারেই বিছানাতে পড়েছিলাম ; তাও আবার পরীক্ষার মাঝে । তো দেখা গেল , অমল স্যার যখন বোটানীর খাতা দিলেন , আমার নাম্বার ৫০ এ ২৬~২৭ বা এমন কিছু । আমি তো ওতেই খুশি । যখন মিজান স্যারের zoology খাতা পেলাম , ওতে ২৭ দেখে ভাবলাম, যাক জ্বর নিয়ে পরীক্ষা খারাপ হয় নি ।

বিপত্তি হল যখন নাম্বার যোগ করে দেখি আসলে ওই ২৭ হবে ৩৭ … ভাবছেন, বিপত্তি কেন ? আরে সেটাই তো গল্প ! মিজান স্যার খাতা দিতেন ক্লাস টাইমের বাইরে । স্যার ক্লাসে আস্তেই আমি আনন্দের সাথে স্যারের কাছে গিয়ে জানালাম , আমার নাম্বার ১০ বাড়বে এবং কলেজ লাইফের সব চাইতে বড় ভুল টা করলাম । স্যার আমার দিকে এমন ভাবে তাকালেন যেন আমি একটা কাঁচপোকা । এরপর রাশ ভারী গলাতে বললেন , ‘বাসাতে এইগুলো শেখায়, কেউ বাইরে থেকে আসার সাথে সাথে তাকে সমস্যা দেখান ??’ ‘যাও!! জায়গাতে গিয়ে বস !!’। ঝাড়ি খেয়ে ফিরে গেলাম বেঞ্চে ।

আমদের গ্যালারী ক্লাস ; রোটেশনে আমাদের বেঞ্চ তখন সবার পেছনে । নাম ডাকা হলে স্যার বললেন , ‘এবার আস, যাদের নাম্বার বাড়বে , তাদের নাম্বার কমায় দি । ’ ভাবলাম, ওটা বোধ হয় স্যার fun করে বলেছেন । কিন্তু যখন স্যারের কাছে গেলাম, উনি আসলেই নতুন করে খাতা দেখা শুরু করলেন … আমি তো ভাবলাম, নাম্বার মনে হয় আগের চাইতে কমেই যাবে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত নাম্বার বাড়ল ৪টা ।

স্যার একটা কাগজ চাইলেন, রোল আর নাম্বার নেওয়ার জন্য । আমি দৌড়ে গিয়ে একটা 4” * 3” কাগজ নিয়ে এলাম । এরপর শুরু হল পরের রাউন্ড । স্যার কাগজটা সবার সাত্মনে তুলে ধরে বললেন, ‘কতটুকু ছোট মন হলে এতটুকু কাগজ দিতে পারে ! … [no audible language for me]’ …আসলে এরপর আর কিছুই আমার কানে ঢুকছিল না । শেষ পর্যন্ত শুনলাম , ‘যাও, বেঞ্চের উপরে গিয়ে দাঁড়াও ’ ।

কি আর করা । অগত্যা মধুসূদন । জীবনে প্রথম বারের মত বেঞ্চে গিয়ে দাঁড়ালাম, তাও নাম্বার বাড়াতে চাওয়ার জন্য ! গ্যলারীর সবার পেছনের বেঞ্চে, মানে ক্লাসের সব চাইতে উপরে…আমি গ্রুপের সবচাইতে লম্বা ছেলে … বাকিটা বুঝে নিন । ঘটনা শেষ হলেই ভাল হত , কিন্তু তা আসলে হয় নি । সেদিনের পর স্যার কেন জানি আমাকে রেডলিস্টেড বানিয়ে ফেললেন ।

পুরো কলেজ লাইফে তিনি আমাকে ভাল চোখে দেখেন নি । অন্য ঘটনাগুলো না হয় না-ই বলি । যদিও আমি পরে স্যারের ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম, ট্রেনিং নিয়েছি তাঁর কাছে , কখনই স্যার আর আমাকে আপন করে নিতে পারেন নি । এমনিতে তিনি খারাপ না, কিন্তু কোন কারনে রেগে উঠলে আর রক্ষে নাই , যা আমার কপালে হয়েছিল । সেদিন কলেজের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্যারের সাথে ছবি তুললাম ।

তবে স্যারকে সবার আগে কি জিজ্ঞেস করেছিলাম জানেন ? ‘স্যার, আমাকে আপনি কি চিনতে পেরেছেন?’ স্যার ‘না’ বলাতেই না আমি … [ শেষমেস সব-ই বললাম । আপনেরা স্যারকে গিয়ে বইলেন না আবার … ]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।