আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংসার সুখী হয় রমণীর গুণে

হট নিউজ

একটি সংসারকে গতিশীল রাখতে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অবদান কম নয় বরং অনেক বেশি। পিতা সংসারে ব্যয়ভার বহন করেন, কিন্তু মাকে সংসারের যাবতীয় কাজের পাশাপাশি সন্তানকে স্কুলে, প্রাইভেট স্যারের বাসায়, গানের-নাচের স্কুলে আনা-নেওয়া থেকে শুরু করে সন্তানের অসুস্থতায় বিনিদ্র রজনীও হাসিমুখে পার করতে হয়। কোনও কিছুতেই যেন মায়ের ক্লান্তি নেই। সন্তানের মঙ্গলের জন্য দুর্গার মতো দশ হাতে সব আগলান। শত অভাবেও সবসময় সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ও তাদের চাহিদা পূরণ করতে ব্যস্ত থাকেন।

সবচেয়ে ভালো জিনিসটি সন্তানের মুখে তুলে দিতে পারলে মায়ের মুখে তৃপ্তির হাসিরেখা ফুটে ওঠে। স্বপ্ন দেখতে থাকেন তার সন্তানরা বড় হবে, ভালো রোজগার করবে, সংসারে আরও সুখ-শান্তি আসবে। তারপর একদিন ঘর আলো-করা বউ আসবে, বৃদ্ধ বয়সে ছেলে-বউয়ের সেবা-যতে বাকি জীবনটা পরম সুখে কাটিয়ে দেবেন। কিন্তু বাস্তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার চিত্রটি হয় উল্টো। বউ ঘরে আসার পর পাল্টাতে থাকে ছেলে, পাল্টায় ঘরের পরিবেশ।

বাবা-মা, ছোট ভাইবোন সব যেন পর হতে থাকে। অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে। তবে বেশিরভাগ চিত্রটা কিন্তু এমন। ছেলে বাবা-মাকে সঙ্গ দিক, তাদের প্রতি আগের মতো টান থাকুক, তা সহ্য করতে পারেন না বেশিরভাগ বউ। তারা মনে করেন, স্বামীটি তার নিজস্ব সম্পত্তি, তার ওপর বাবা-মা, ছোট ভাইবোন কারও কোনও অধিকার নেই।

বউয়ের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মিটাতে বাবা-মা, ভাইবোনদের কাছ থেকে দূরে চলে যায় ছেলে। নিজের বাবা-মাকে বাদ দিয়ে বেশিরভাগ ছেলে শ্বশুর-শাশুড়ি, শ্যালক-শ্যালিকা নিয়ে মেতে থাকে। মায়ের অনেক কষ্টের সংসারে আস্তে আস্তে তার অধিকার কমতে থাকে। ভাইকে পড়াশোনা করানোর জন্য মা’র সঙ্গে যে বোনেরা সংসারে শ্রম দিয়েছেÑ ভাইয়ের ঘর গোছানো, কাপড় ধোওয়া আরও কতভাবে সেবা করেছে যে বোনরা, স্বপ্ন দেখত ভাই লেখাপড়া শেষ করে ভালো চাকরি করে বোনদের সব আবদার মেটাবে, সেই আদরের ভাই হারিয়ে যায় চোখের সামনে থেকেও। বাবা-মা, ভাইবোনকে বাড়তি ঝামেলা মনে করেন বউ-ছেলে।

একসময় বৃদ্ধ বয়সে একা হয়ে যান বাবা-মা। অনেকে বয়সের ভারে, আর নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেক সময় বাবা বা মায়ের যে কোনও একজন মারা গেলে অন্যজন আরও বেশি একা হয়ে যান। এ সময় তাদের প্রয়োজন একটু ভালবাসা, একটু মমতা, প্রিয়জনের একটু সঙ্গ। এ সময় অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে হোমে পাঠানো হয়, বউরা চায় না এ ঝামেলা ঘরে রাখতে।

সেখানে নিঃসঙ্গতা ও একাকিত্ব তাদের নিত্যসঙ্গী হয়। প্রিয়জনকে একটু দেখার, তাদের ছোঁয়া পাওয়ার জন্য তারা ব্যাকুল হয়ে থাকেন। তাদের এ আকুলতার কথা কি আমরা বুঝতে পারি না? তাই বউমাদের বলছি, আজ যে সংসার, যে মানুষকে নিয়ে জীবন উপভোগ করছ, তার যারা কারিগর তাদের অবহেলা করো না। তোমার বাবা-মাকে যতখানি ভালবাস তাদেরও ঠিক ততখানি ভালবাসা প্রাপ্য। তোমার সন্তানের জন্য তুমি যে কষ্ট করছ, তোমার শাশুড়িও তোমার স্বামীর জন্য একই কষ্ট করেছেন।

তাই বলছি, শেষ বয়সে তাদের অবহেলা না করে একটু ভালবাস।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।