আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লন টেনিস - অষ্ট্রেলিয়ান ওপেন ২০১০ - রজার ফেদেরার - ডেভিডেঙ্কোর ক্ষণস্থায়ী সাম্রাজ্যে(!)র পতন।

বিশেষ কিছু নেই বলার মত। প্রতিবাদী একজন মানুষ আমি। অনেকেরই মত...... :)
রজার ফেদেরার - রাফায়েল নাদালের রাজত্ব শেষ বলে ঘোষণা দিয়ে দেওয়া রাশিয়ার টেনিস খেলোয়াড় নিকোলাই ডেভিডেঙ্কো অবশেষে নিজেই রজার ফেদেরারের কাছেই পরাজয় বরণ করে অষ্ট্রেলিয়ান ওপেন ২০১০ থেকে বিদায় নিলেন। এবং আবারও প্রমাণ হলো, ফেদেরারের রাজত্বকাল এখনও শেষ হয়নি। গত এক বছরের মাঝে তিনটি ম্যাচে সুইস টেনিস সম্রাট রজার ফেদেরারকে দুইবার এবং স্প্যানিশ টেনিস সেনসেশন রাফায়েল নাদালকে একবার হারিয়েই রাশিয়ার নিকোলাই ডেভিডেঙ্কো বলেছিলেন, ফেদেরার-নাদালের রাজত্বের দিন শেষ।

কিন্তু আসলে যে রজার ফেদেরারের দিন শেষ হয়নি, যেন সেটা প্রমাণ করতেই অষ্ট্রেলিয়ান ওপেন ২০১০ এর ড্র দুইজনকে একই গ্রুপে এনে ফেলে। ফলস্বরূপ, এই দুজন আজ মুখোমুখি হন পুরুষ এককের ৩য় কোয়ার্টার ফাইনালে। এবং যথারীতি টেনিস ইতিহাসে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডস্ল্যামজয়ী বর্তমানের নাম্বার ওয়ান টেনিস খেলোয়াড় রজার ফেদেরার ম্যাচটিতে নিকোলাই ডেভিডেঙ্কোকে ২-৬, ৬-৩, ৬-০, ৭-৫ গেমের ব্যবধানে হারিয়ে উঠে গেলেন সেমিফাইনালে। ম্যাচের শুরু থেকে ফেদেরার খুব বাজে খেলছিলেন। প্রথম সেটে অনেকগুলো আনফোর্সড এরর করেছিলেন তিনি।

যার ফলে তিনি প্রথম সেটটি হারেন ২-৬ ব্যবধানে। তৃতীয় সেটেও তিনি ১-৩ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু সেই পর্যন্তই! এরপর শুরু হয় ফেড ম্যাজিক। টানা ৫টি গেম জয় করেন তিনি। এবং সেটটি জিতে নেন ৬-৩ ব্যবধানে।

তৃতীয় সেটের অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর। ডেভিডেঙ্কো একটি গেমও জিততে পারেননি তৃতীয় সেটে! সোজাসুজিভাবে ৬-০ ব্যবধানে তৃতীয় সেটটিও জিতে নেন ফেদেরার। তখন পর্যন্ত তিনি টানা ১১টি গেম জিতেছেন। এরপর শুরু হয় চতুর্থ সেট। প্রথম দুইটি গেম ফেদেরার জিতে নেন।

এবং তারপরের গেমটি হারেন। এবং আবারও পিছিয়ে পড়েন। সেটের অবস্থা যখন ৩-৪, তখন তিনি আবার কিছু কঠিন সার্ভিস করে ম্যাচে ফেরেন। সেই থেকে অবস্থা দাঁড়ায় ৫-৪। ১০ম গেমে ম্যাচ পয়েন্টের সুযোগ আসে ফেদেরারের।

কিন্তু তিনি পারেননি। শেষ পর্যন্ত গেমটি জিতে নেন ডেভিডেঙ্কো। ১১তম গেমটি সার্ভ করেছিলেন ডেভিডেঙ্কো। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় ১১তম গেমে। কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা হয়নি।

ডেভিডেঙ্কো ১১তম গেমটিও হারেন। যথারীতি ১২তম গেমে সার্ভ করেন ফেদেরার। এবং এই সময় তিনি আর ভুল করেননি। তার সার্ভিস দক্ষতা দিয়ে মূহুর্তেই গেমটি জিতে নেন তিনি। এবং সেই সাথে ম্যাচটিও।

উল্লেখ্য, ম্যাচটি অনেক দিক থেকেই খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একে তো কোয়ার্টার ফাইনাল। তার ওপরে ফর্মের তুঙ্গে থাকা নিকোলাই ডেভিডেঙ্কোর সাথে রজার ফেদেরারের ম্যাচ। তবে তার চাইতেই বেশি বড় ব্যাপার ছিলো যেটি, ডেভিডেঙ্কোর ভুল ধারণা ভেঙে দেওয়া। ফেদেরার সেটিই করেছেন।

ম্যাচটিতে রজার ফেদেরারের আনফোর্সড এররের সংখ্যা ৪৩টি এবং ডাবল ফল্ট করেছেন ৪টি। উইনারের সংখ্যা ৩৫টি এবং এইস করতে পেরেছেন ৯টি। বিপরীতে নিকোলাই ডেভিডেঙ্কো আনফোর্সড এরর করেছেন ৫০টি এবং ডাবল ফল্ট করেছেন ৪টি। উইনারের সংখ্যা ৩৫টি এবং এইস করেছেন মাত্র ১টি। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রজার ফেদেরার ২৯ তারিখে মুখোমুখি হবেন আজ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সার্বিয়ার নোভাক জোকোভিচ এবং ফ্রান্সের জো-উইলফ্রায়েড সোঙ্গার মধ্যকার চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালের বিজয়ীর সাথে।

প্রথম সেমিফাইনালে কাল মুখোমুখি হচ্ছেন স্পেনের রাফায়েল নাদালকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা গ্রেট ব্রিটেনের অ্যান্ডি মারে এবং ইউএসএ'র অ্যান্ডি রডিককে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা ক্রোয়েশিয়ার ম্যারিন কিলিচ। বিঃদ্রঃ নিকোলাই ডেভিডেঙ্কোর নামের সাথে বোধহয় সাম্রাজ্য কথাটি বেমানান দেখাচ্ছে। তাই না? আসলেই তাই। উনি তো সাম্রাজ্য হাতেই পাননি। তবে উনি যেমন ৩টি ম্যাচে দুইজনকে হারিয়ে হুমকি দিয়েছিলেন সাম্রাজ্য কেড়ে নেওয়ার, সেটা বোধহয় ঠিক হয়নি।

টেনিসে ৩টি ম্যাচ মাঝেমাঝে কোন ফ্যাক্টরই নয়। আশা করি, আজকের ম্যাচের পর উনার চোখ খুলে গেছে। তাঁর অবস্থান তিনি বুঝতে পারবেন।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।