আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

চতুর্মাত্রিক.কম (choturmatrik.com)
সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯ রাত ১:৫১ নিয়ন্তি, মেইল করতে বলেছিলেন। মাঝে কী মেইল করবো বুঝে উঠি নাই বলে, করা হয় নাই। খবর কি আপনার? রাতে ঝিমাচ্ছিলাম পিসি’র সামনে বসে। হঠাৎ ডিং করে একটা মেইল আসলোঃ পিচ্চিদের নোট! অথচ দেখি অফলাইন, তাই বুঝলাম না কি হইলো (?) যাক ভালো থেকেন। রাইন -০-০-০- -০-০-০- -০-০-০- সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯ রাত ১:৫৯ রাইন, আপনি কেমন আছেন? ঝিমান কেনো? আমি জিমেইলে নাই।

এটা আমার অফিসের ইমেইল অ্যাড্রেস। ঐ জন্যেই অফলাইন। ভালোই আছি, কালকে অবশ্য অনেক জ্বর ছিল, অফিসেই আসি নাই। জ্বর হলে মন টন খারাপ হয়ে যায়। তাই অনেক গজল শুনলাম।

:-) বিলাই ভালো আছে। আসার সময় দেখে আসলাম আরামসে ঘুমাচ্ছে। মাঝে মাঝে আমার বিলাই হতে ইচ্ছা করে… কী ভালো হতো! সবচেয়ে ভালো হতো- ইফ আই ওয়্যার এ ক্যাট ইউথ এ হিউম্যান মাইন্ড…. কী করেন আপনি? নিয়ন্তি -০-০-০- -০-০-০- -০-০-০- সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯ রাত ২:১০ নিয়ন্তি, ঝিমাই কারণ রাত দুইটা। ঢাকার মানুষ নিশাচর, এতো রাতেও নেটের স্পিড খারাপ। আজকালকার যুগে যদি “বেসিক এইচটিএমএল ভিউ” খুলে মেইল করতে হয় তাইলে মেজাজ খিঁচড়ে যায়।

অবশ্য নেগেটিভ ঘটনার লাভ থাকে। আজকের লাভ, এখন ঘুম একটু কম! পরে খেয়াল করলাম (আগে ঝিমুনির কারণে খেয়াল করি নাই) যে আপনি অফিসে। এখন নয়টা বাজে এবং শুক্রবারে বিদেশে লোকজন কাজ করে! সবারই জ্বর হচ্ছে। আমাদের এখানেও। আমার প্রিয় মানুষটারও জ্বর! আজকে সারাদিন আমিও ব্যস্ত ছিলাম, সে আমাকে অনেক মিস করে, কিন্তু কথা বলারও সময় করতে পারি নাই।

রাতে বাসায় ফিরে কথা হলো, খারাপ লাগলো তখন। সে ঘুমিয়ে পড়েছে এখন। আর আমি মন খারাপের ঠেলায় ঘুমাতে পারছি না! সীজনটা খুব বাজে। বাতাসে মনে হয় ফ্লু-এর রেণু/জীবাণু ঘুরে বেড়াচ্ছে!! আমি মন খারাপ হলে, জ্বরে পড়লে পিঙ্ক ফ্লয়েড শুনি! ওরা আমার মন আরো বিষণ্ণ করে দেয়!! হা হা :-)) আমার মাঝে মাঝে চেয়ার টেবিল হয়ে যেতে ইচ্ছা করে। জড়বস্তু হতে ইচ্ছা করাটা মনে হয় মাথা খারাপের লক্ষণ! বকবকাচ্ছিলাম।

অফিসে কাজ ফাঁকি দিয়ে পড়বেন! টাইপ করতে কষ্ট হইসে! ;-) রাইন -০-০-০- -০-০-০- -০-০-০- সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯ রাত ২:২০ রাইন, বাহ! আপনার চিঠি কতো সুন্দর! আমি কখনো এইরকম ফ্লুইড কথা লিখতে পারি না। আমার সব কিছু কেমন ছাড়া ছাড়া থাকে। আজকে জানেন, একদম মেঘলা বাইরে। আর আমার অফিসে চারপাশে কাচ। আর কাচের বাইরে টানা বারান্দা।

চার তলার উপরে। আমার কেমন সুররিয়্যেল মতো লাগছে। মনে হচ্ছে আমি আছি কিন্তু নাই। এটা একটা ওপেন প্ল্যান অফিস, চারপাশে সবাইকে দেখা যায়, কথা শোনা যায়… সবার কথা মিলে মিশে আসলে কোনো কথা হয় না, শুধু একটা ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজের মতোন… একটা গুঞ্জন… অনেক সময় ঢাকার দুপুরের কথা মনে পড়ে। আসলে আমার যে সময়কার কথা মনে পড়ে, ঐ সময়টা তো নাই এখন।

এখনকার দুপুর নিশ্চয়ই অনেক আলাদা। তো, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন আম্মা আর বাড়ির সবাই দুপুরে ঘুমাতো। আমি কোনোদিন ঘুমাতাম না। আমাদের বাসা ছিলো ফুলার রোডের সামনে, ইউনিভার্সিটি কোয়ার্টার্সে। বারান্দা থেকে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল দেখা যেতো আর ঠিক দেয়ালের পাশে একটা বিশাল গাছ ছিলো।

তো, ঐ দুপুরগুলা অনেক স্লো আর ঝিম ধরা থাকতো, আর একটা কেমন… ধূলার গন্ধ… সাথে ঐ রকম ঝাঁ ঝাঁ ধরনের একটা শব্দ… এখন প্রায় ঐ রকম এখানে। যদিও এখন দুপুর না, যদিও এখন রোদ নাই… আর যদিও সময়টাও অন্য। আপনার প্রিয়মানুষের নাম জানা হয় নাই। কেনো মন খারাপ আপনার? তার সাথে কথা হয় নাই, তাই? তার জ্বর আর আপনি ছিলেন না, এই জন্য? জড়বস্তু আমারো হতে ইচ্ছা করে। অবশ্য আমার তো মাথা খারাপই! আমার আসলে অনেক কিছুই হতে ইচ্ছা করে… মাঝে মাঝে… আমার আমি হতে ইচ্ছা করে… আরো অনেক লিখেন, আমার কাজ করতে ভালো লাগে না… নিয়ন্তি -০-০-০- -০-০-০- -০-০-০- সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৯ রাত ২:৩৬ নিয়ন্তি, ভালো লিখেন না, ছাড়া ছাড়া, এসব বলে যা লিখলেন তাতে আমি আবার তিন বছর আগের সময়টায় চলে গেলাম! আমি তো হলে থাকতাম, ফুলার রোডের কাছেই, দুইটা রাস্তা পেরোলেই।

আমিও ঐ গাছটা চিনেছি। এখন অবশ্য আরো গাছ হইসে ওখানে। হয়তো কোলাহলও আরো অনেক বেড়ে গেছে, যাওয়া হয় না আমারও অনেকদিন। কী তাজ্জব! আপনি যেভাবে বললেন, আমি একটা টাইমে যশোরে থাকতে ওরকম অনুভব করতাম। স্তব্ধ দুপুর, মা ঘুমে।

আমি ঘুমাইতাম না। বই পড়তাম। সুকুমার, শিবরাম, নয়তো বাংলা হাসির গল্প! পড়তাম, আর কল্পনা করতাম। চারপাশের পরিবেশটা আমাকে আরো মগ্ন করে দিতো। কখন আঁধার হয়ে যেতো! আম্মা এসে ঝাড়ি লাগাইতো, আন্ধারের মধ্যে বইসা পড়তেছিস, চোখের মাথা খাবি!! আমি পরের দিনও ওভাবেই পড়তাম।

চোখের মাথা খেয়ে চশমা নেয়ার শখ ছিলো। শখ অবশ্য মিটে নাই, কারণ চোখ খারাপ করতেই পারলাম না! প্রিয় মানুষটা আজকে একটু আক্ষেপ করে বলেছে যে তার আমাকে অনেক মনে পড়তেছিলো। কিন্তু ভাবসে যে আমি ব্যস্ত, অফিসে,তাই ফোন করে নাই। আমি ভাবসি সে অসুস্থ, রেস্ট নিচ্ছে, তাই ফোন দেই নাই। সব মিলায়ে প্রায়ই ডিসকানেক্টেড! পরে ‘আফসুস’ করলাম একটু।

হা হা! সন্ধ্যায় তার জ্বর ঠিক হইসিলো, ভালো লাগতেসিলো শুনে। পরে রাতে আবার জ্বর আসলো! আমারও মন খারাপ হলো! ও কিছুদিন ধরে ভুগতেসে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ খুবই খারাপ। পারলে বকাঝকা করে যত্ন নিতাম, কিন্তু সেই অধিকারটা এখনও জন্মায় নাই। কিন্তু অধিকারবোধটা জন্মায় গেসে। আমার সঙ্গী এখন খালি দুশ্চিন্তা আর উৎকণ্ঠা! আপনার অফিসরুম নিয়ে একটা কল্পনা মাথায় চলে আসছে।

আপনি একটা বাব্‌লে বসে আছেন, কাচের বাব্‌ল- এজন্য গোলাকার না হয়ে চৌকোনা, এটা করা হইসে শুধুই আপনাকে ধোঁকা দেয়ার জন্য। বাব্‌লে আটকে সবাইকে বসিয়ে রাখছে, আমার অফিসটাও চারিদিকে কাচ। পিছনে দেয়াল, তার মাঝেও একটা বড় জানালা! বাইরে আমি দিন শেষ হওয়া দেখি রোজ। বিকাল ভাঙা দেখি। আগে কতো বাইরে বাইরে ঘুরতাম ঐ সময়টা, বাসায় ফিরে আসতে ইচ্ছা করতো, বিপন্ন লাগতো, সবাই দুদ্দাড় করে বাড়ি ফিরছে আর আমি পথ খুঁজে বেড়াচ্ছি এমন বোধ হতো! আর এখন, একটা কিউবিক্‌লে বসে মাথা গুঁজে কাটায়ে দেই বিপন্নতা।

আসলেই চেয়ার টেবিল হয়ে গেছি… বাসায় ফিরতে ফিরতে যখন রাত হয়, তখন টের পাই, আমি বহুদিন বিকাল দেখি না!! রাইন -০-০-০- -০-০-০- -০-০-০- (চলবে)
 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।