আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

3rd Person Singular Number

পাঠশালার ছাত্র এখনো

সিনেমাটা যেসব হলগুলোতে চলছে, প্রতিটিতেই হাউসফুল। বাংলাদেশের সিনেমার নাকি দারুন উন্নতি হয়েছে, চোখে ধাধা লাগানো আর কানে তালা লাগানো। আর থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার রিলিজ হবার আগেই যেসব প্রচার প্রচারণামূলক কর্মকান্ড চলেছে, তা তো বেশ সফল। যা'ই হোক...অনেকদিন পর সিনেমা হলে। বেশ থ্রিল নিয়ে হলে ঢুকলাম আমরা ১১ জন।

মন খারাপ হয়ে গেল হলের দূর্দশা দেখে। কি জৌলুস ছিল আর কি হয়েছে। মনে হচ্ছে এক ডাকসাইটে জমিদার-এর সব হারিয়ে হতদরিদ্র রূপ। সাউন্ড এর অবস্থা যাচ্ছেতাই। চারপাশে ঝুলঝুলে অযত্ন।

যাই হোক, মানুষ জাত তো, বিশেষ করে বাঙালী জাতি। যে কোন কিছুই সহজে এ্যাডজাস্ট/মেনে নেবার অসম্ভব দারুন একটা গুন (?!) আছে আমাদের। চোখের সামনে রূপালী পর্দায় ফুটে উঠলো 'জাতীয় পতাকা প্রদর্শনকালে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করুন'। আরে বা:...এখানে ঠিক সেই মান্ধাতা আমলের চক পেন্সিলের মতো সেই ১০ শব্দের ১২ টা বানান ভুল তো ঠিক আগের জৌলুসই জানান দিচ্ছে। আর দর্শকরাও আগের মতোই জাতীয় পতাকাকে হাত নেড়ে (কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে) দারুন সম্মানিত করলো।

যা'ই হোক- এসবে মাথা না ঘামিয়ে দ্রুত ছায়াছবিতে মন দিলাম। শুরু হলো....শেষ হলো। নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুনতে শুনতে বের হলাম। আর আমার প্রতিক্রিয়াটা প্রথমেই জানিয়ে দিলাম আশরাফ শিশির নামের এক চিত্রপরিচালকের কাছে। যিনি 'আমরা একটি সিনেমা বানাবো' নামের সাদাকালোয় একটি রঙ্গীন স্বপ্নের গল্প শোনাবেন বলে কোমর বেঁধে নেমেছেন।

আমার এসএমএস'টা ছিলো এরকম- "একটি চমৎকার ভাবনার অপমৃতু্, একটা অস্থীর সস্তা নির্মাণের যাতাকলে পিষে=থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার। আমি চলচ্চিত্রের ব্যাকরণ জানি না। কিন্তু ব্যাকরণ আছে সত্য। এটাকে সিনেমা বলবো কি না, একজন আম দর্শক হিসেবে ঠিক বুঝতে পারছি না তাই। আমি শুধু এটা জানি- একটা পরিণত চিন্তাকে পরিণত রূপেই প্রকাশ করতে জানতে হয়।

না হলে চিন্তাটার অকাল অপমৃতু্য হয়। ' এরকমটাই ছিল আমার অনুভূতী। ঐ যে আগেই একটা কথা বলেছি- আমরা বাঙালী জাত। আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে আসলেই বেশ স্পীডি। হয়তো সেখানে ডিমান্ড ঠিক এর উল্টোটা।

তবে একটা কথা স্পষ্টই বলবো- এই সিনেমার পেছনে যে ব্যবসায়িক আইডিয়া ছিল, তা মারাত্মকভাবে সফল। বেঁচে থাকার জন্য, অনেক অনেক হার্ডওয়্যার সুখ উপভোগের জন্য টাকার বিকল্প আর কিছু আছে কি? সে আমার মতো দূর্মুখরা যা'ই বলুক। কারো কিছু কি আসে যায়? এই মুহুর্তে মনে পড়ছে, ছোটবেলায় দেখা সাদাকালো 'ছুটির ঘন্টা' সিনেমার কথা। ঐ সময় চিন্তার এতটা উৎকর্ষিত রূপ দেখে এখনকার উন্নতির সাথে কোন মিল খুঁজে না পেয়েই এতকিছু লিখলাম। আশা করি Mind করেননি।

কারণ তারপরও আমরা আশাবাদী। আশার গল্পগুলো নিয়ে আমরা পথচলি। সাধনার গল্পগুলো একটু দেরীতে হলেও হাতে পেয়ে যায়, এই বাঙালী জাতি'ই। আমি যা'র গর্বিত অংশীদার।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।