আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কে এই কাজল?

পরে বলবো

পুলিশের পোশাক পরে গতকাল শাহবাগ কন্ট্রোলরুমে ঢুকে পড়া কাজল আসলে কে? রহস্যের জট খুলেনি। নির্বিকারভাবেই কাজল বলেছে, সে ময়লা কুড়ানি। কিন্তু পুলিশের বিশ্বাস হচ্ছে না। আর তাই রহস্যের জট খুলতে কাজলকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে তারা। শাহবাগ পুলিশ বলছে, একজন ময়লা কুড়ানি পুলিশের পোশাক কিনে সেটি পরে কন্ট্রোলরুমে ঢুকে পড়লÑ না।

এটি বিশ্বাস হবার নয়। অবশ্য কাজল নিজেও একেকবার একেক কথা বলছে। একবার বলছে সে ময়লা কুড়ানি। আবার বলছে সে সিকিউরিটি কোম্পনি চাকারি করে। ২৫ বছর বয়সী কাজল গতকাল শাহবাগ পুলিশ কন্ট্রোল রুমের ভিতরে পুলিশের পোশাক পরে অন্য পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে গল্প করতে থাকে।

গল্পের সময় অন্য পুলিশ সদস্যরা তার কাছে জানতে চান কাজল সদ্য বদলী হয়ে আসা পুলিশ কিনা । এসময় কাজল পুলিশ সদস্যদের জানায়, সে বরিশাল বিভাগে কর্মরত ছিলো। কয়েক দিন হলো তাকে বদলি করা হয়েছে। তার বর্তমান কর্মস্থল শাহবাগ পুলিশ কন্ট্রোল রুম। এসময় কন্ট্রোল রুমের পুলিশ সদস্যরা বরিশালে কর্মরত থাকা তার সহকর্মীদের নাম বলতে থাকেন।

কিন্তু কাজল কাউকে চিনতে পারে না। এতে পুলিশ কনস্টেবলদের সন্দেহ হয়। পরে তারা বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের জানায়। কাজলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাদের পর তাকে গ্রেফতার করে প্রতারনা মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাজল পুলিশকে জানিয়েছে, তার সখ একদিনের জন্য হলেও পুলিশের পোশাক পরে তাদের সঙ্গে উিউটি করবে।

কাজল জানায়, এ বাসনা পূরণ করতেই সে পলওয়েল মার্কেট থেকে চকলেট বিক্রি করা টাকা দিয়ে পুলিশের পোশাক কিনে। ব্যাজ, টুপিসহ খরচ পড়ে ৪শ’ টাকা। এর আগে সে এলিফ্যান্ট রোড মোড়ে দায়িত্বরত এক সার্জেন্টের কাছ থেকে জেনে নেয় কোথায় পুলিশের পোশাক পাওয়া যায়। সার্জেন্টই তাকে পল্টনের পলওয়েল মার্কেটের খোঁজ দেন। কাজল জানায়, পলওয়েল মার্কেটের ৩ তলার ডিএমপি স্টোর নামের পুলিশের পোশাক বিক্রয়কারী একটি দোকান থেকে পোশাক কিনেছে।

পরে রমনা পার্কের ক্যান্টিনের বাথরুমে ঢুকে ময়লা কুড়ানির পোশাক বদলে পুলিশের পোশাক পরে বেরিয়ে আসে। রিকশা নিয়ে সোজা চলে যায় শাহবাগ কন্ট্রোল রুমের সামনে। কাজল জানায়, সে থাকে কেরানিগঞ্জ মার্কেটের পেছনে কাঙ্গালি ক্লাবে। ময়লা কুড়িয়ে আর চকলেট বিক্রি চলে তার সংসার। অবশ্য কাঙ্গালি ক্লাবে সবাই জানে কাজল পুলিশে চাকরি করে।

পুলিশের বক্তব্য শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল হক বললেন, আমরা ধারণা করছি সে হয়তো পুলিশের কোন তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ছদ্মবেশে ঢুকেছিল। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন বলেন, কাজলের কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। ময়লা কুড়ানি পুলিশের পোশাক পরে কন্ট্রোল রুমে ঢুকে পড়বে বিষয়টি হয়তো এতো সহজ নয়। কেননা এমনিতেই মানুষ পুলিশ থেকে দুরে থাকতে চায়।

পলওয়েল মার্কেটে ৪৯ পুলিশ পোশাকের দোকান পল্টন পলওয়েল মার্কেটে মোট ৪৯ টি দোকান রয়েছে যারা পুলিশের পোশাক তৈরি করছে এবং বাজারে বিক্রি করে। যে কেউ এসব দোকান থেকে পুলিশের যে কোন পদমর্যাদার কর্মকর্তা পোশাক, ব্যাজ, টুপি, জুতা কিনতে পারেন। পুলিশ সদরদফতরের এআইজি (সরবরাহ) সোয়েব আহমেদ বলছেন, এসব দোকানকে যখন পোশাক বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয় তখন শর্ত দেয়া হয়েছিল ইন্সপেক্টর থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তার পোশাক প্রমাণ সাপেক্ষে তারা বিক্রি করবে। কিন্তু এ শর্ত তারা পালন করছে না। এসব দোকানকে শর্তাবলী পালনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কয়েকদিনের মধ্যে এ বিষয়ে মনিটরিং করা হবে। তিনি বলেন, পোশাক বিক্রির সময় শর্ত পালিত হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য ডিএমপি’র সব ইউনিটকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশের পোশাক নিয়ে বিভ্রান্তি এড়াতে বেসরকারি সিকিউরিটি গার্ডের পোশাক বিষয়ে একটি নির্দেশনা শিগগিরই জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।