আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুধুমাত্র রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের কারণে নয়, আরো যেসব কারণে জামাত-শিবির-রাজাকারদের বর্জন করা কর্তব্য

কার্ণিশ ভাঙ্গা জানালার ফাঁক দিয়ে রাতের আকাশের যেটুকু অংশ দেখা যায়, অইটাই আমার পৃথিবী। পরম করুণাময় অসীম দয়ালু ঈশ্বর আমলনামা দেখিয়া, কিঞ্চিত ক্ষমা ঘোষণা করিয়া বলিলেন, যাও, আমার প্রিয় বান্দা, তোমাকে আমি বেহেশত দিয়া দিলাম। আমি ঈশ্বরকে বলিলাম- প্রিয় ঈশ্বর, আমার একখানা আর্জি রহিয়াছে। তিনি বলিলেন- বল আমার বান্দা। আমি বলিলাম- প্রিয় ঈশ্বর, মাফ করিবেন, বেহেশতে আমার জন্য যে জায়গাটা বরাদ্দ করিয়াছেন, তাহার আশে-পাশে কী কোন রাজাকার রহিয়াছে? তাহা হইলে, হয় আমার স্থান পরিবর্তন করিয়া দেন, নতুবা আমাকে দোযখেই নিক্ষিপ্ত করেন।

রাজাকার সমৃদ্ধ বেহেশত অপেক্ষা রাজাকার মুক্ত দোযখই ঢের ভালো। প্রাণময় ঈশ্বর অতিশয় রাগান্বিত হইয়া আমার দিকে তাকাইয়া রহিলেন। মনে হইল তিনি এক্ষুণি আমার বেহেশতের অনুমতিপত্র ছিনিয়া লইবেন। না, তাহা করিলেন না। হুঙ্কারিয়া বলিতে লাগিলেন, তুমি কী করিয়া ভাবিয়াছ, বেহেশতে রাজাকারের ঠাঁই হইবে? বেহেশত কী নাপাক জায়গা? বেহেশত কী ভ্রষ্টাচারী, হত্যাকারী, ধর্ম ব্যবসায়ী, ধর্ষকদের স্থান? তোমাদের প্রিয় ঈশ্বর কী ক্ষমা করিতে পারে তাহাদের, যাহারা ধর্মের দোহাই দিয়া মানুষ হত্যা করিয়াছে, ধর্মের লেবাসে যাহারা ভন্ডামি করিয়াছে, মুনাফিক, বেঈমানদের? ঈশ্বর কী ক্ষমা করিতে পারে তাহাদের, যাহারা দুনিয়াতে থাকিতে ধর্মের নামে বজ্জাতি আর ধোঁকাবাজি করিয়াছে??? জামাত-শিবির-রাজাকাররা সত্যিকার ইসলামের চর্চা করে নাই।

তাহারা মওদুদীর ফেৎনার চর্চা করিয়াছে, ইসলামের নহে। আমি আশ্বস্থ হইয়া বেহেশতে চলিয়া গেলাম আর ঈশ্বরকে কৃতজ্ঞতা জানাইলাম। মওদুদীর আসল নাম সাইয়্যেদ আবুল আ’লা মওদুদী। আবুল আ’লা মানে হল- আল্লাহর বাপ। কিন্তু পবিত্র কোরআনের সূরা ইখলাসে স্পষ্টরুপে বলা হয়েছে- আল্লাহকে কেউ জন্ম দেননি এবং আল্লাহ ও কাউকে জন্ম দেননি।

সুতরাং মওদুদীর নামের মধ্যেই আছে শিরক। ইসলাম নিয়ে মওদুদীর ধোঁকাবাজি সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা আছে দেওবন্দ মাদ্রাসা হতে প্রকাশিত “ফিৎনা’য়ে মওদুদী ফিৎনা’য়ে ক্বাদীয়ানি সে বত্তর হে” কিতাব এ। এছাড়াও মওদুদী ইসলাম ধর্ম, নবী-রাসূল, সাহাবাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, সমালোচনা করেছেন যা তার “তাফহীমুল কোরান”, “হেকায়াতে সাহাবা”, “নামাজের হাক্বীকত”, “রোজার হাক্বীকত” “ঈমানের হাক্বীকত” ইত্যাদি গ্রন্থে পাওয়া যায়। তিনি ছিলেন ছাহারুম পাশ (অষ্টম শ্রেণী) মাদ্রাসা ছাত্র, অত্যন্ত মেধাবী কিন্তু ধুরন্ধর এবং মূলত একজন কলামিষ্ট। তিনি নবী-রাসূলগণের পাপাচার খোঁজা, সাহাবাদের মধ্যে তুলনা করা ও তাঁদের পাপ খোঁজে বের করার মত ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করেছেন।

আজকে যারা নবীজিকে নিয়ে ব্যঙ্গ করার বিরুদ্ধে মিছিল-মিটিং করেন, তাঁরা কীভাবে মওদূদীর এই ধৃষ্টতাকে এড়িয়ে যাবেন? তিনি ইসলামের যে ব্যাখ্যাসমূহ দিয়েছেন, তা তার একান্ত নিজস্ব, মনগড়া এবং অজ্ঞতা ও গোঁয়ার্তুমিতে ভরা। তার তাফহীমুল কোরআন গ্রন্থের ভূমিকায় (কভারের পেছনে কালো জমিনে স্বর্ণ রঙয়ের কালিতে) খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, আমি কোরআনের এই তাফসীর আমার নিজস্ব জ্ঞান থেকে করেছি। এতে আমি কোন হাদীস, সাহাবা, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন, ঈমামদের ব্যাখ্যার ধার ধারিনি। আমরা এটা আরো স্পষ্টরুপে দেখতে পাই, যদি মুফতী শা’ফী (রাহঃ) ‘র “তাফসীরে মা’আরেফুল কোরআন” আর মওদুদীর “তাফহীমুল কোরআন এর তুলনামূলক পাঠ পর্যালোচনা করি। কোন রাজাকারের বাচ্চা, জামাত-শিবির যদি মানুষের বাচ্চা হয়ে থাকেন, কারো তর্ক করার খায়েশ যদি থাকে, তাহলে আসেন।

আমি বলছি, মওদুদীর ইসলাম ইসলাম নয়, ইসলামের নামে ধোঁকাবাজি, মওদুদীর অনুসারিত ইসলামিষ্ট জামাত-শিবিররা সত্যিকার ইসলামের চর্চা করে না। তারা আ’হলে সুন্নাত ওয়াল জামাত নয়। কিন্তু হাদীসে বলা হয়েছে, নবীজির উম্মতদের মধ্যে বাহাত্তরটি বিভক্ত দল হবে যাদের মধ্যে শুধুমাত্র একটি দলই সত্যিকার ইসলামের অনুসারী হবে, যাদের নাম হবে “আ’হলে সুন্নাত ওয়াল জামায়া’ত” এবং তারাই জান্নাতে যাবেন। আসুন, আমাদের ভেতরে যে দেশপ্রেম রয়েছে, সত্যিকার ধর্মের প্রতি যে ভালোবাসা রয়েছে সেই বোধ থেকে এই জামাত-শিবির নামের মুনাফিক, ধর্ম ব্যবসায়ী, পথভ্রষ্ট, ভ্রষ্টাচারীদের ঘৃণা করি, বর্জন করি। এই জামাত-শিবির রাজাকার বাংলাদেশের অস্তিত্বকে স্বীকার করে না।

অথচ ধর্মে বলা হচ্ছে স্বদেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.