আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইহা কল্প কাহিণী নহে : প্রফেসর টক্কর

ঘাস ফড়িং এর স্বপ্নমালা
সকাল থেকেই প্রফেসর টক্করকে যারপরণায় উত্তেজিত মনে হচ্ছে। বাম চোখের পাতার দ্রুত উঠানামায় তার প্রমাণ। সকালটাই শুরু হয়েছে অদ্ভুতভাবে... টুথপেষ্টের বদলে শেভিং ক্রিম দিয়ে দাঁত মেজে ফেলেছেন... তিতকুটে স্বাদ ছাড়া অন্য কিছুই টের পাননি। কিন্তু সমস্যা হয়েছে হাতের টিউবটা দেখার পর থেকে... হঠাৎ করেই পেটের মধ্যে গুড়গুড় শব্দ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের প্রফেসর মশায়ের এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে ভাবার সময় নেই।

খুব সমস্যা হলে তাঁর আবিষ্কৃত হজমিগুলিতো আছেই। উহু এটাকে আবার আপনারা যাতা হজমি মনে করেন না ...... ইশ্বেতু গুল্মের সাথে পরিমাণ মত কাঁচা তেঁতুলের আর দুর্বা ঘাসের নির্যাস মিশিয়ে প্রস্তুত করা হজমি... যা কিনা সবচেয়ে কঠিন কার্বনকেও হজম করে ফেলে চোখের নিমিষেই (কথার কথা এখনো পরীক্ষিত না) আর ঐ শেভিং ক্রিমতো কোন ছাড়। সে যায় হোক ... শেভিং ক্রিম যে আমাদের প্রফেসর মহাশয়ের উত্তেজনার খোরাক না এটা নিশ্চয় এতক্ষণে আপনাদের বোধগম্য হয়েছে। তাঁর সমস্ত মনযোগ কেন্দ্রিভুত আছে ছোট একটা কলমের উপর। উফফফ আপনাদেরকে নিয়ে আর পারা গেল না ... সাত খন্ড রামায়ণ পড়ে এখন জিজ্ঞেস করছেন সীতা কাহার পিতা... আফসুস।

প্রফেসর টক্করকে চিনতে পারছেন না এ কথা কিন্তু ভুলেও সভ্য সমাজে উচ্চারণ করবেন না। তাঁকে না চেনা আর নিজেকে ক্ষ্যাত বলা একই কথা। আপনারা কি তাঁর আবিষ্কৃত শচীন গার্ডের নাম শুনেননি?? কি বলছেন শুনেননি ... হা ঈশ্বর!!! ক্রীড়া জগতে তোলপাড় ফেলে দেবার অপেক্ষায় রয়েছে পণ্যটি। শুধু পৃথিবীতে আপনার আমার মত ক্ষ্যাতের সংখ্যা বেশি হওয়ায় স্পন্সর পাচ্ছেন না প্রফেসর টক্কর... আহা বেচারা। কি বলছেন মশায়?? শচীন গার্ড বস্তুটা কি!!!! আস্তা গাড়ল দেখি... সেই জন্যই এখানে জ্ঞানের কথা বলতে ইচ্ছে করেনা।

ঠিক আছে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলছি... আগে বলুন মশায় শচীন টেন্ডুলকারকে চিনেন তো?? যাক চিনেন তাহলে। এই ক্রিকেটের ক্ষুদে জিনিয়াসটা খেলার মাঠে সব সময় তার সেফটি গার্ড নিয়ে বিব্রত থাকেন ... খেয়াল করেছেন নিশ্চয়। আমদের প্রফেসর মশায়ের বিজ্ঞানে অগাধ জ্ঞান থাকলেও খেলাধূলায় মাথাটা একটু কম । তো হয়েছে কি একদিন শচীনের খেলা দেখার সময় তাকে গার্ড ঠিক করতে দেখে ভেবেছিলেন এটা খেলার একটা অংশ। এই নতুন জ্ঞানের কথা যেই না তাঁর শৈশবের বন্ধু ভুষন্ডি বাবুকে বললেন ... বেচারাতো হাসতে হাসতে চেয়ার থেকেই পড়ে গেলেন।

আপনারা ভাবছেন আমাদের প্রফেসার মশায় লজ্জিত হয়েছিলেন?? আরে না ... মহান ব্যক্তিদের লজ্জা একটু কমই থাকে... ওটা আপনার আমার মত সাধারণ মানুষের জিনিস। তখনই প্রফেসার মশায়ের মাথায় আসল একটা স্বয়ংক্রিয় গার্ডের আইডিয়া। আরে বাবা এত অধৈর্য্য হলে হবে !!! বলছিতো বাবা শচীন গার্ডের ম্যাকানিজম। তবে আগেই বলে রাখছি আমি কিন্তু য্ণ্ত্র টণ্ত্র অত ভাল বুঝি না। প্রফেসর টক্কর আমাকে যা বলেছেন তাই নিজের ভাষায় বলার চেষ্টা করছি।

শচীন গার্ডটা সাধারণ গার্ডের মতই কিন্তু এটাই একটা কন্ট্রোল প্যানেল আছে যা বাইনারী নাম্বার দ্বারা নিয়ণ্ত্রিত অর্থাৎ যদি গার্ডের পজিশান ঠিক থাকে তাহলে বাইনারী নাম্বার ০ কার্যকর থাকবে আর যদি ডান বা বামে সরাতে হয় তাহলে ১ কার্যকর হবে। ০ আর ১ কিভাবে হবে?? আগেই বলেছি বেশি প্রশ্ন করবেন না ... জানতে ইচ্ছে করলে প্রফেসরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন। আচ্ছা তাও বলার চেষ্টা করছি ... গার্ডটা ব্লু টুথের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে ব্যাটসম্যানের হেলম্যাটের পাশে লাগানো একটা স্নায়বিক সেন্সরের সাথে যেটা কি না মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের দ্বারা নিয়ণ্ত্রিত। গার্ড যদি ঠিক জায়গায় থাকে তাহলে তো কোন হ্যাপায় নাই ..... কিন্তু জায়গামত না থাকলেই ঐটার ব্যাপারে মাথায় চিন্তা আসবে ..ফলে রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হবে. .. সেন্সর সেটা ধরে ফেলবে... এই সিগন্যালই ব্লু টুথের মাধ্যমে চলে যাবে গার্ডে আর সিগন্যাল পেলেই সেটা ১ ... গার্ড তার জায়গা ঠিক করে নিবে। একদম সরল বাংলায় বললাম ... ব্যাপারটা আরো ঘোরেল... কি?? এখনো পরিষ্কার না... আরে বাপু আপনাদের বুঝাতে বুঝাতে গল্পতেই যেতে পারলাম না... না বুঝলে নাই।

আচ্ছা আচ্ছা রাগ করেন না... আমি প্রফেসর টক্করকে নিয়ে না হয় একদিন ব্লগিয় আড্ডায় যাব ... উনি তখন ব্যাপারটা আপনাদের হাতে কলমে বুঝিয়ে দিবেনক্ষন। এই হলো আমার সমস্যা... ধান ভাঙতে বসে শিবের গীত গেয়ে ফেললাম দেখছি... তো কি বলছিলাম ... আজকে আমাদের প্রফেসর টক্করের মস্তিষ্ক পূর্ণভাবে কেন্দ্রিভূত আছে টেবিলের উপর রাখা কলমটার উপর... ভাবছেন বুঝি সাধারণ কলম ... হা হা হা ... আমিও তাই ভেবেছিলাম... কিন্তু... (চলবে)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।