আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই প্রতিহিংসাপরায়নতা, এই নোংরামির শেষ কোথায়?

সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত...............।

নামে কি এসে যায়? কাজেই পরিচয়। – কথাগুলো বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলছি। আসলে কতটুকু মানছি? আজকের সবগুলো জাতীয় দৈনিকের একটি খবরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করছি। খবর মোটামুটি এরকম- চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে যেসব স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল, সেসব স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানের আগের নাম পুনর্বহাল করা হবে।

সেই সাথে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের ও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। হযরত শাহজালালের(রহ)নামানুসারে নতুন নামকরণ করা হবে। দেখুন নয়া দিগন্ত প্রথম আলো আমাদের সময় সাত-আট বছর আগের কথা মনে পড়ে গেল। চট্টগ্রামের এম. এ. হান্নান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখা হয়। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় তখন।

কেমন যেন একটা সূক্ষ্ম মিল এবং একটি স্থুল প্রতিহিংসাপরায়নতা খুঁজে পাচ্ছি- এ দুইয়ের মাঝে। যতদুর জানি, এ সরকার এসেই আগের নামে ফেরত চলে গিয়েছেন। আমার আশংকা হলো- ১.জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম বিগত জোট সরকার রাখেন নি এবং আমরা জন্মের পর হতে আজ পর্যন্ত এই নাম নিয়ে কোন প্রকার বিতর্ক শুনি নি। পায়ে পা বাঁধিয়ে ঝগড়ার কী প্রয়োজন? আর এই ঝগড়ার শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে! ২. বিএনপি নিশ্চয়ই এই ইস্যুটাকে এমনি এমনি ছেড়ে দেবে না! এক বাড়ি ছাড়া ইস্যু নিয়েই এখনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয় নি এবং একে কেন্দ্র করেই সংসদ বর্জন চলছে। আগুনে নতুন করে ঘি ঢালার প্রয়োজন? তখন সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার দায়ভার কে নেবে! উপরে যে দু’টি আশংকা নিকট ভবিষ্যতের।

এবার, একটু সুদুরপ্রসারী প্রভাব চিন্তা করি- ১.জনগনের ধর্মভীতিকে পুঁজি করে আর কতকাল কাঁঠাল ভেঙে খেতে চান তাঁরা? একটা খারাপ কাজের সাথে যখন ধর্ম কিংবা ধর্মীয় ব্যক্তিত্ত্বের নাম জড়ানো হয়, তখন ধীরে ধীরে পুরো ধর্মটাই কি বিতর্কিত হয়ে ওঠে না?। ২.সরকার যদি এ নাম পরিবর্তন শেষ পর্যন্ত সফলতার সাথে(!) করতে সক্ষম হন, তবে আমি লিখিত দিতে পারি, পরবর্তী সরকার এসে বিমানবন্দরের নাম তো ফিরিয়ে আনবেনই, এক কাঠি সরেস হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর নাম রাখা হবে শাহ ‘অমুক’ (রহ) সেতু। কেউ কেউ বলবেন, ওরা ও তো করেছিল। কে অস্বীকার করেছে? কিন্তু তারা ‘অধম বলিয়া আমি উত্তম হইব কেন?’ একজনকে তো প্রথম পদক্ষেপটা নিতেই হবে। না হয় দিন বদলের শ্লোগানে কী এসে যায়? ‘ওরা বদলেছে কেন? আমরাও এবার বদলে দেব!’- পাঁচ বছরের বালক সমাবেশের বক্তব্য হতে পারে, পঞ্চাশোর্ধ প্রবীনদের (যাঁরা আবার দেশের নীতিনির্ধারক) সমাবেশের ভাষা নয়।

কিছুদিন ধরে একটু একটু করে আমাদের রাজনৈতিক আচরনের পরিপক্কতা আসছে। যে বিরোধী দল এক সময় বঙ্গবন্ধুর নাম মুখে আনাই পাপ মনে করত, তারা এখন প্রকাশ্যে তাঁকে স্বাধীনতার স্থপতি বলে স্বীকার করছে। এটি একটি গুনগত পরিবর্তন। আস্তে আস্তে হয়তো এধরণের আরো ভালো পরিবর্তনের দিকে আমরা যেতে পারব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে অনেকগুলো জাতীয় ইস্যুতে আমাদের ঐকমত্য প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতান্তই আত্মঘাতী এবং শিশুসুলভ বলে আমার মনে হচ্ছে। কারন, চেয়ারে বসে থাকা ব্যক্তির দায়িত্ব, দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটির চাইতে বেশী হয়ে থাকে। ধন্যবাদ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।