আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

CIA এন্টি কম্যুনিজম মিশনঃবাংলাদেশে ধর্মিয় উগ্রতা বিস্তারে প্রথম বীজ (পর্ব-২)

ব্যস্ত শহর ঠাঁস বুনটের ভিরে আজো কিছু মানুষ স্বপ্ন খুজে ফিরে........
সিকিম ও কাস্মিরের ভুখন্ড বড়দের বাট্টা হতে পারে কিন্তু রক্তের দামে কেনা বাংলাদেশ নয়- পর্ব ১ ১৯৫১ সালে CIA বাংলাদেশে অর্থাৎ তৎকালীন পুর্ব পাকিস্তানে শুরু করে এক এন্টি কম্যুনিজম মিশন। রেডিও,স্থির চিত্র,চলচ্চিত্র,সংবাদ মাধ্যম,বই-পুস্তক,পোস্টার,কার্টুন কে ব্যবহার করে ধীরে ধীরে টার্গেট গ্রুপ (ছাত্র,শ্রমিক,আর্মড ফোর্স, সহ সমাজের নানা স্তরে বিভিন্ন ক্লাব সহ আমজনতা)এর মাঝে কম্যুনিজমের বিপক্ষে প্রচারনা করে এর বিপক্ষে আরেকটি কাউন্টার মতবাদ চালু করার পরিকল্পনা করা হয়। আর মুসলিম অধ্যুসিত এই অঞ্চলে ইসলামকে প্রোমোট করে সেটিকে কম্যুনিজমের প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ইসলামি নানা গ্রুপ ধর্মিয় নেতাদেরকে নিয়োগ করা হয়। সে সাথে বিদ্যমান ,প্রয়োজনে নতুন কোন পলিটিক্যাল পার্টি গঠন করে অপারেশন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা থাকে তাতে।

অপারেশনাল থিম হিসাবে কম্যুনিজম ইসলামের শত্রু,এন্টি গড হিসাবে ও বিভিন্ন দেশে কি কি নেগেটিভ প্রভাব পড়েছে সেগুলিকে হাইলাইট করে কম্যুনিজমকে ধ্বংস করার সে এক বিশাল নীলনক্সা। আদর্শিক ভাবেই মুজিব ও তার দল ছিল রাশিয়া ও ভারত পন্থী। ফলে ভারত ও রাশিয়া বিরোধী একটা প্রচারনা গোপনে ভালো ভাবেই ছড়াচ্ছিল বাঙ্গালীদের মাঝে। আর ঐতিহাসিক ভাবেই বাংলাদেশের মানুষ ধর্মিয় ভাবে সহনশীল,কিন্তু নিজেদের আদর্শিক শত্রু কম্যুনিজমের ধংস আনার জন্য মার্কিনীরা এদেশে উগ্র ইসলামী চেতনার বীজ রাষ্ট্রের ভিতরে প্রথিত করার সকল ব্যবস্থা করে। একটি রাষ্ট্রে ভিতর কোন মতবাদ হুট করে ঢুকিয়ে দেয়া যায় না,জাতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে কিভাবে কোন ধারনাকে ছড়িয়ে দেয়া যায় তার সকল ব্যবস্থাই এই পরিকল্পনাতে ছিল।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম বাঙ্গালীর স্বাধিকার আন্দোলনের একটি চুড়ান্ত ধাপ,কিন্তু সেটির পার্শ্ব পটভুমিতে পাক-ভারত দ্বন্দ ছিল। আর সেই পার্শ্ব কারনে ভারত আমাদের সহায়তা করেছে। সে সাহায্যের মুল উদ্দেশ্যই ছিল পাকিস্তানকে দুর্বল করা। কিন্তু সেটি কি আমাদের জন্য মুখ্য ছিল?শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু। ১৯৭২ সালে কর্নেল তাহের শেখ মুজিবের কাছে একটি পদত্যাগ পত্র দেয়।

সেটি আমার কাছে মনে হয় খুবই গুরুত্ব পুর্ণ। সেই পদত্যাগ পত্রে তাহের আক্ষেপ ও অভিযোগ করে ডিসেম্বরে মিত্র বাহিনীর গঠনের বিপক্ষে তার অবস্থান ব্যক্ত করেন। তার ধারনা মতে মুক্তিযোদ্ধারা যখন বিজয়ের সকল আয়োজন সমাপ্ত করে তখন এই চুক্তি আমাদের গৌরবকে মলিন করেছে। আমার ব্যক্তি গত মত এই অভিযোগ তার মত লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার ভিতরে সুপ্ত থাকাটা এক হিসাবে খুবই স্বাভাবিক। কারন এই মিত্র বাহিনী গঠনের ফলে সাড়ে ৮ মাসের প্রতিরোধ অনেকটাই আড়ালে পরে যায়,আর ভারতের কৃতিত্ব নানা মাধ্যমে প্রাধান্য পায়।

যে মুক্তিযোদ্ধার কোলে তার সহযোগি যুদ্ধে শহীদ হয়েছে তাদের কাছে এটা মেনে না নেয়াটা প্রাকৃতিক ভাবেই স্বাভাবিক ও আবেগের বিষয়। কিন্তু জাতিসংঘে ভুট্টোর যে অপতৎপরতা ছিল,আর সেটি মোকাবাল করতে করতে রাশিয়ার উৎকন্ঠা বাড়তে থাকে। সেই পটভুমিতে এই যুদ্ধকে আরো দীর্ঘায়িত করাটা আমাদের মুল আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতা লাভকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। তাই এই যুদ্ধের দ্রুত একটি পরিনতি টানা বাধ্যতামুলক ছিল। কিন্তু অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের আবেগের কাছে হয়ত এই বাস্তব সত্যটি ধরা দেয়নি।

ঢাকায় মার্কিন কনসু্লেটে CIA যে তার বার্তা পাঠায় সেটি পাবেনঃপিয়াল ভাইয়ের ব্লগ CIA এর সকল ডিসক্লোজড ডকু পেতে:ক্লিক এই ২ পর্বের মাঝে হয়ত অনেকেই মিল খুঁজে পাবেন না!আশা করি আগামী পর্বে অর্থাৎ শেষ পর্বে সমন্বয়টা পাবেন। আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে,আমা্র আপনার মাঝে যে রাজনৈতিক চেতনা যা আজ অবিশ্বাস আর সম্পুর্ন বৈপরীত্যে ভরা,তার সাথে যোগ সুত্র স্থাপনের চেষ্টা করব। আশা করি সাথে থাকবেন।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।