আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদ এলেই বেড়ে যায় আমাদের কষ্ট

আমি কিছুই জানিনা আমি গাধা।

আহ গ্রামেই যেন সব প্রাণ। যতবার গ্রামে যাই আমার এমনটাই মনে হয়। জমিনের আল বেয়ে এবাড়ি ওবাড়ি ঘুরতেই যেন সব আনন্দ। অবশ্য এই ঘুরাঘুরির অন্য কারন হলো আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা করা।

এই ঈদেও এর ব্যাত্যয় হলোনা। ঈদের আগের দিন বের হলাম হাসেম চাচার বাড়ির উদ্দেশ্যে। হাসেম চাচা বাবার দুর সম্পর্কের মামাত ভাই। এলাকায় সে ছৈয়াল (পুরনো ঘর মেরামতকারী) হিসেবে বিখ্যাত। আমাদের আত্মীয়দের মধ্যে তাকেই শুধূ গরীব বলা যায়।

দুই মেয়ে শামীমা ,সারমিন ছেলে কবির আর স্বামী স্ত্রী মিলে হাসেম চাচার সংসার। ইদানিং পাকা বাড়ির দৌরাত্যে হাসেম চাচার আর্থিক অবস্তা নুন আনতে পানতা পুরানোর ছেয়েও খারাপ। এখন তার সম্বল আত্মীয়স্বজনদের সহযোগিতা। শুধু গরীব বলেই হাসেম চাচার প্রতি আমার বাড়তি আগ্রহ এটা বললে পুরোটা সত্য বলা হবেনা। গত দুই বছর থেকে কারনে অকারনে আমার বাড়ী যাওয়া বেড়ে গেছে।

বাবা মা এতে খুশি হলেও কারনটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছেননা। আমিও বুঝেছি বছর দেড়েক আগ থেকে। শামীমা তখন ইন্টার সেকেন্ড ইযারে। 'কে বলে শারদ শশী সে মুখের তুলা পদ নখে পড়ে আছে তার কতগুলা' শামীমাকে দেখে এই লাইনটা বার বার আমার মাথায় ঘুরতে লাগল। আর আমি ঘুরতে লাগলাম শামীমার মনমন্দির ঘিরে।

অবশেষে ঘুরাঘুরি বন্ধ করে তার মনমন্দিরে থিতু হয়ে গেলাম নয়মাস আগে। তারপর কত আমবশ্যায় জোস্না গাহন করেছি কত জোস্না রাত আমাদের মান অভিমানে আমবশ্যায় ডুবে গেছে। এই ঈদে তাকে দেখে আমার মনে হলো পৃথিবীত বহুকাল সূর্য্য উঠেনা। কারো মুখে এত আঁধার ধরতে পারে তাও আগে কখনো দেখিনি। ঈদের খুশিতে তার মনখারাপ কেন জানতে চাইলে সে বলল,আমার ছোট ভাই বোনটার দিকে তাকাও।

কোরবানির জন্তু নিয়ে অন্য বাড়ীর ছেলেমেয়েদের আনন্দ তাদের কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। আমি ঈদ ঘৃণা করি কারন ঈদগুলো আমাদেরকে কঠিন ভাবে মনে করিয়ে দেয় আমরা গরীব। সে কাঁদে,আমার বুকে সে নিজেকে সপে দিয়ে আরো জোরে কাঁদতে লাগল। আমার মনে হলো আমার বুকে সে কোন ভরসা খুঁজে পাচ্ছেনা দেখে তার কান্নার গতি বহুগুন বেড়ে গেল। নিজেকে তখন খুব অসহায় মনে হলো।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।