আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাল ঈদ: আজ আমার মন ভীষণ খারাপ



কাল ঈদ। আজ আমার মন খারাপ। ভয়াবহ রকমের মন খারাপ। মন খারাপ এবং প্রচন্ড রাগ হওয়ার যথাযথ কারনও আছে। আমার ব্যবসাটা একেবারে নতুন।

দুইজন বাদে সকল স্টাফকে গতকাল বেতন পরিশোধ করেছি। দুইজনেরটা এখনও করতে পারি নাই। কারণ যে বিল থেকে উনাদের টাকা দেয়ার কথা এবং আমার দুই বছর বয়সী সন্তানের জন্য নতুন পোষাক এবং কোরবানীর পোষাক কিনবার কথা তা পাইনি। একটি বেসরকারী স্কুলের কাছে আমি ৮৫,০০০/- টাকার বিল পাই। এই বিলটি এই মাসের ১০ তারিখের মধ্যে তাদের পরিশোধ করাবর কথা ছিলো।

কিন্তু ১০ তারিখে এই বেসরকারী স্কুলের পক্ষ থেকে আমাকে ১৮ তারিখের সময় দিয়ে ৮৫,০০০/=টাকার একটি ক্যাশ চেক প্রদান করা হয়। তারা ১৬ তারিখেও ফোনে আমাকে নিশ্চিত করে যে ১৮ তারিখেই চেকটি ক্যাশ হবে। কিন্তু ১৮ তারিখে ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে,পর্যাপ্ত টাকা নেই। তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে আমাকে জানান যেভাবেই হোক দুই-একদিনের মধ্যে তারা আমার টাকা পরিশোধ করবেন। গত পরশু সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের মালিকদের একজন জানান (যিনি ঐ স্খুলের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল) যেভাবে হউক গতকাল তারা ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার) টাকা পরিশোধ করবেন।

গতকাল সকালে তাদের পক্ষ থেকে পুনরায় আমাকে নিশ্চিত করেন যে বিকাল ৪:০০টার মধ্যে আমার অফিসে টাকা পৌছে দেবেন। আমি তাদের বলি যে, যদি উনারা অপারগ হন তবে আমি কোন জায়গা থেকে ম্যানেজ করার চেস্টা করতে পারি। ঐ ভাইস প্রিন্সিপাল আমাকে আল্লাহর নামে নিশ্চিত করেন এবং কোথাও না যেয়ে অফিসে থাকতে বলেন। কারণ উনি নিজে এসে বিকাল ৪টার মধ্যে আমাকে ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা পরিশোধ করে যাবেন। ৩:৩০টায় ফোন দিয়ে আবার আমাকে নিশ্চিত করেন যে, উনি আসছেন তবে হাতে একটু কাজ থাকার কারনে আসতে সামান্য দেরী হতে পারে।

আমি তখনও বলি যে, উনারা যদি পরিশোধ করতে না পারেন তাহলে আমাকে বলতে। উনি বলেন যে, টাকা উনার পকেটে আছে। তারপর সন্ধ্যা ৬:০০টা থেকে উনার ফোন বন্ধ পাই। আমি অফিস বন্ধ করে বাসায় ফিরে আসি। মাথায় প্রচন্ড চাপ।

কারণ শেষ মূহুর্তে কারো কাছ থেকে টাকা জোগাড় করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। রাত ৮টায় একটি সংক্ষিপ্ত ম্যাসেজ পাই যার সারমর্ম হলো 'নো টেনশন'। অথচ তার আধ ঘন্টা পরে উনার আরেকটি ম্যাসেজ পাই, যার অর্থ 'সরি, আগামী বুধবারের আগে টাকা পরিশোধ করেত পারছি না। " উনার ফোন এই পোস্ট লেখা পর্যন্ত বন্ধ। একজন টিচারের মাধ্যমে জানতে পারলাম উনি ১,৪৫,০০০(একলক্ষ পয়তাল্লিশ হাজার) টাকা দিয়ে কোরবানীর জন্য তিনটি পশু কিনেছেন।

আমি ভাবতে পারছি না মানুষ এত নীচ হয় কিভাবে। তাদের সাথে আমার সম্পর্কও খারাপ নয়। আমি কমিটমেন্ট বিশ্বাসী। তাই তাদের সাথে সবসময়ই আমি আমার কমিটমেন্ট ১০০% রক্ষা করেছি। অথচ তারা আমার সাথে এরকম কেন করলো বুঝতে পারছিনা।

খুব জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে। অথচ তার ফোন এই পোস্ট লিখবার সময়ও বন্ধ। এই লোকটাকে কি করা উচিত!!!!!যদি ভাইস প্রিন্সিপ্যালের অবস্থা এই হয় তবে বাচ্চারা কি শিখবে!! আমার পকেটে এখন সর্বসাকুল্যে ৩০০ টাকা। দুইজন স্টাফের বেতন কিভাবে পরিশোধ করবো মাথায় কিছুই ঢুকছেনা। যাদের কাছে হাত পাতছি তাদের সকলের কথা এই শেষ সময়ে করার কিছুই নেই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।