আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাছ ধরতে এতো হ্যাপা

তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।
মাছ ধরার লাইসেন্সের জন্য ভর্তি হয়ে পুরো ধরা। সেই সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বোরিং ক্লাস করতে হচ্ছে। প্রথমদিন ক্লাসে ১৫ মিনিট দেরী করে ঢুকলাম। লাঞ্চ ব্রেকের আগ পর্যন্ত কোন উপস্হিতি (রোল কল।

সাধারনত একটি পেপার দিয়ে সাক্ষর নেওয়া হয়) কাউন্ট করা হয়নি। লাঞ্চ ব্রেকে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলাম উপস্হিতি কাউন্ট হবে কিভাবে? এবং ক্লাস করা কি বাধ্যতামুলক? জবাবে উনি বল্লেন উপস্হিতি উনি নিজের চোখ দিয়েই করেন। আর দেরী করে আসলে সমস্যা নেই। শুনে তো আমার চোখে ঘুম এসে গেলো। এমনিতেই ক্লাস হচ্ছে এইটি রেষ্ট্ররেন্টে।

যার যখন ইচ্ছে খাবারের অথবা ড্রিংসের অর্ডার দিচ্ছে। খাবারের পাশাপাশি সবাই টিচারের বকবক শুনতেছে। কিছু কমবয়সি ছেলেমেয়ে টিচারের সাথে বান্দরামী করতেছে। মাছের চৌদ্দগোষ্টি উদ্ধার করতে হচ্ছে। কোন মাছের আঁশ কিরকম (চেপ্টা নাকি লম্বা), রঙ কিরকম, কয়টা পাংখা আছে, কোন পাংখার কি নাম, পাংখা দেখে কিভাবে মাছ শনাক্ত করবে, মাছে চোখ কয়টি, কোন প্রকারের মাছ নদীর কোন লেভেলে চলে, কোথায় কোথায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ, মাছ ধরতে গিয়ে কিসব জলজ উদ্ভিদের পাতা অথবা সম্পুর্ন উদ্ভিদ উপড়ানো যাবে না, কোনকোন মাছ স্হানীয়, স্হানীয় মাছদের কিভাবে সনাক্ত করা যাবে, কোন মাছ কোথায় কিভাবে ডিম পাড়ে, কোন মাছের রক্ত বিষাক্ত, কোন মাছের কয়টি কানকোয়া আছে, কার কয়টি ফুসফুস, মাথার অবস্হান, মাছের মগজ কিভাবে কাজ করে ইত্যাদি হাজারো ব্লা ব্লা।

এতো কিছু পড়াশোনা করে পরীক্ষা পাশ করে তারপর মাছ ধরতে হবে জানলে ভর্তিই হতাম না। অনেকগুলো টাকা যাতে পানিতে না যায় এজন্য কষ্ট করে ক্লাস আর কাজের ফাঁকে প্রশ্ন নিয়ে দৌড়াতেছি। যখনই শুনলাম ক্লাসে দেরী করে আসা যাবে আর তাড়াতাড়ি চলেও যাওয়া যাবে তখনই টিচারকে বল্লাম আমার তো আজ একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে। বাজার করতে হবে। না হলে তো রবিবার সপ্তাহিক ছুটি।

দোকানপাট সব বন্ধ। উনি মুচকি হেসে বল্লেন আসছো তো দেরীতে আবার যেতেও চাও আগে। যাবেই যখন তাহলে যাও। আসলে কিসের বাজার। সবই ভূয়া।

৫দিন টানা কাজ করার পর যদি বাকী দুইদিনও এইরকম দৌড়ের উপর যায় তাহলে কার ভালো লাগে। এরমধ্যে ঠান্ডা, বৃষ্টি তো আছেই। পরেরদিন প্রায় দুই ঘন্টা পর ক্লাসে উপস্হিতি জানালাম। লাঞ্চ ব্রেকে টিচারের সাথে দেখা। বল্লেন আজকেও কি তাড়াতাড়ি চলে যাবে।

বল্লাম আজকে যাবো না। আপাতত পরীক্ষা পাশের ধান্ধা করতে হচ্ছে। লাঞ্চে রেষ্ট্রুরেন্টে শুয়রের মাংসের আইটেম। একটু হেটে একটি ডুনার কাবাবের দোকানে গিয়ে দেখা গেলো কমদামে ড্রিংস সহ ডুনার কাবাব বিক্রি করতেছে। দেখলাম হালাল লেখা আছে।

দোকান নতুন তাই কমদামে দিচ্ছে। মোটামুটি ভালোই হলো। যদিও একটি ডুনার খেতে আমার খবর হয়ে যায়। আগামী কয়েক সপ্তাহ কমদামে ডুনার খেতে পারবো ভেবে ভালোই লাগলো। বিকেলে বাসায় ভাইয়াকে কম দামে ডুনারের কথা বলায় উনি না খেতে বল্লেন।

কম দামের ডুনারগুলো নাকি ভালো মাংস দিয়ে বানায় না অফিসে ব্যাপক দৌড়। কলিগ কয়েকজন অসুস্হ। এখন সর্দি-জ্বরের সময়। চান্সে সোয়াইন ফ্লোয়ের ভয়ে যাদের একটু শরীর গরম হয়েছে তাদেরকে অফিসে আসতে মানা করা হয়েছে। কিন্তু দু:খের সাথে জানানো যাচ্ছে যে আমার শরীর একটুও গরম হয় না ।

একটু কাশি অথবা সর্দি হলেও না হয় ফোন করলে ম্যানেজার ভাবতো সত্যি সত্যি সর্দি-জ্বর হয়েছে। নিজের কাজের পাশাপাশি অসুস্হ লোকজনের কাজের চাপও সামাল দিতে হচ্ছে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।