আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যত দোষ...সালাউদ্দিন...(যাহ, মিলল না)



সালাউদ্দিন আমার সেই বন্ধু, যার চাপা শুনে আমাদের বুকে পাথর চাপা ব্যাথা শুরু হয়ে যেত। কারন তাকে নাও করতে পারতাম না। আবার তার কথার লোডও নিতে পারতাম না। সিরাজগঞ্জের সালাউদ্দিন একদিন হঠাৎ করে জানালো, অভিনেতা জাহিদ হাসান তার ভাইয়ের খুবই ক্লোজ বন্ধু। সাথে আরো অনেক অনেক প্রোফাইল দিত।

আমরা বলতাম, জাহিদ হাসান সম্পর্কে এগুলো তো ম্যাগাজিনেই পাওয়া যায়। সালাউদ্দিন আরো তথ্য প্রমাণ হাজির করে তার ভাইয়ের সাথে জাহিদ হাসানের ঘনিষ্টতা প্রমাণের চেষ্টা চালাতো। মৌ'য়ের নানি বাড়ী আমাদের ওদিক হওয়ায় একদিন জাহিদ হাসান এলো। কিন্তু সালাউদ্দিন হাওয়া। মুখোমুখি প্রমাণ করার সুযোগ পেলাম না।

চারদিনের খরচের দিনও জাহিদ হাসান আসার সম্ভাবনা থাকায় সেদিনও সালাউদ্দিন ছিল নিখোঁজ। চাপার মতো সালাউদ্দিনের আরো গুন ছিল। সালাউদ্দিন পকেটে দশ বারোটা টাকা থাকার সময়েও বাজী ধরতো হাজার টাকার। হেরে গেলে বন্ধুত্বের দোহাই ছিল তার অস্ত্র। সে গান গাইতে পারতো।

যে গানের লিরিক শুনে দ্বন্ধে পড়ে যেতে হতো আসলেই কী এসব লাইন গানে ছিল? আর সুর তো মাশায়াল্লাহ...সে ছিল সুরের দরিয়ায় টাইটানিক লেভেলের প্রতিভা। তার গান শুরু হলেই জিজ্ঞাসা করতাম ভাই থামলে কতো নিবি? প্রেমের ক্ষমতাও ব্যাপক তার চেয়ে তিনগুন ওজনের এক মেয়েকে ভালোবাসতো। ঘর বাধার স্বপ্ন দেখতো। আমরা বলতাম, ভাইরে হেরে ছাড়। তার জায়গা দেওয়ার মতো ঘর বাধা তোর জন্য টাফ হয়ে যাবে।

একটা সময় সে প্রেম টিকলো না। এক সময় এক বয়স্ক মহিরার ছবি এনে বলল, দেখ ... আমরা বললাম, তোর বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়ে গেছে নাকি? সে ব্যাপক রাগ নিয়ে জানাতো, ফাইজলামী মারাবি না। এইটা আমার ... আমরাও বলতাম, তুইও ফাইজলামী মারাবি না। এইটা তো ব্যাটা খালাম্মা হইলেও ছোট বলা হয়। সালাউদ্দিনের আরেকটা প্রতিভা আছে সে তাৎক্ষণিক ছড়া বাণিয়ে ফেলতে পারতো।

তবে খুব যে সফল হতো তাও না। জীবন থেকে নেয়া বিষয়ের উপর সেসব ছড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্তঃমিলে মার খেয়ে যেত। তবু তাকে কিছু বলা যেত না। সে বলতো, সব যে মিলতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তাই তাকে কোনো দোষ দেয়া হলে প্রায়ই বলতো, যত দোষ...সালাউদ্দিন... আমরা বলতাম, এই ব্যাটা এইটা তো মিলল না।

সে বলতো। না মিললে নাই। ব্র্যাকেটে সংশোধণী পড়ে নিবি। এই সালাউদ্দিন ছড়া না মেলাতে পারলেও তার জীবনের একটা ভালো মিল পেয়ে গেছে, ওই খালাম্মা টাইপ মহিলা কাম তরুণী তার সাথে মিলে গ্যাছে। দুজনেই ঢাকায় পড়ছে।

সবচেয়ে মিলের বিষয়, সে আর তার শালা একসাথে থাকে। এ বিষয়টা নিয়েও তাকে আমরা কম ঝামেলা করি না, কীরে ব্যাটা থাকবি প্রেমিকার সাথে, থাকিস তার ভাইয়ের সাথে। কাহিনী কী? পরীক্ষার আগে মডেল টেষ্ট দিচ্ছিস নাকি? কারণ আননোন সব ফোন তার শালা আগে ধরে। সালাউদ্দিন সেজে কথা বলে। সিরাজগঞ্জের আঞ্চলিক টানের কারণে বোঝাও যায়না কে?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।