আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এটি কোন নাস্তিক ব্লগারের লাশ নয়... তবে কার লাশ?

মুভি ক্রিটিক ব্লগ (প্রথম বাংলা মুভি ব্লগ) ★★★★★ © ২০০৭ - ২০১৩ ওয়েবসাইট: www.saifsamir.com ১। কয়টা লাশ ফেলবি তোরা? একাত্তরে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি থেকে লক্ষ লক্ষ লাশ ফেলে কোন ফায়দা হয়েছিল? এবার তো জনতা ষোল কোটি! কয়টা জীবন নিয়ে মৃত্যু খেলা খেলবি তোরা? কার জন্য তোদের এই রক্ত খেলা? কিছু পিশাচ মীরজাফর বেজন্মার জন্য? কার গোলামি করছিস তোরা? কোন ধর্মগ্রন্থে বলেছে এমন নারকীয় হত্যার কথা? ধর্মের নাম খারাপ করেছিলি আল বদর সেজে... আবার লাগিয়েছিস গায়ে সেই হায়েনার চামড়া? ২। অর্ধ-যুগের এই ব্লগ জীবনে অসংখ্য সহব্লগার পেয়েছি... সবার সঙ্গে মতের মিল হয় নাই... হয়ও না। কিন্তু মত-বিশ্বাস যার যা-ই হোক না কেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন এমন সহব্লগারদেরকে সবসময় ভাইয়ের মতই জানি। শাহবাগ আন্দোলনে তেমন এক ভাইয়ের রক্ত দেখতে হলো! কিন্তু ভাইয়ের রক্ত দেখে আমাদের ভয় না... বাঙালি তার ভাইয়ের রক্ত দেখলে আরও সাহসী হয়! বেপরোয়া হয়ে ওঠে! প্রমাণ আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা! ব্লগার 'থাবা বাবার' (আহমেদ রাজীব হায়দার) রক্ত বৃথা যাবে না! এবার আমরা সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা হবো! ৩।

তাকে 'ভাই' বলেছি ধর্মের খাতিরে না। যেহেতু তার ধর্মের সঙ্গে যোগ ছিল না তাই সে প্রশ্ন আসে না। বাঙালি পরিচয়ে ভাই। তাকে সহযোদ্ধা বলছি বিশ্বাস-অবিশ্বাসের আদর্শের ভিত্তিতে না। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাওয়া আন্দোলনকারী হিসেবে সহযোদ্ধা।

যুদ্ধের ময়দানে কে মুসলিম, কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিষ্টান, কে আস্তিক, কে নাস্তিক সেটা বিবেচ্য না! এটি কোন ধর্মযুদ্ধ না! এটি অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ। ৪। যে ব্লগারটি খুন হলেন, তাকে আমি চিনতাম না। তিনি কোন সুপরিচিত ব্লগার ছিলেন না। তার মৃত্যুর পরই তার ব্লগটি প্রথম দেখেছি, তবে শুধু চোখ বুলিয়েছি।

সাম্প্রদায়িক নাস্তিকদের লেখা আমি পড়ি না। আমার অনেক নাস্তিক বন্ধু আছে। তবে নাস্তিকদের মধ্যে যারা সাম্প্রদায়িক/মৌলবাদী তাদেরকে প্রশ্রয় দিই না। প্রশ্ন হয়েছে, এই ব্লগার থাবা বাবার মৃত্যুতে আমি ব্যথিত কেন? একজন গোঁড়া নাস্তিক মরলে আমার কি ক্ষতি? আমার উত্তর: অন্ধ নাস্তিক ও ধর্মান্ধের মধ্যে কোন তফাৎ নাই বলে মানি। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের এই অন্ধত্ব তাদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের কোন ক্ষতি কামনা করি না বা ক্ষতিতে খুশী হয় না।

কিন্তু মৌলবাদী নাস্তিক ও মৌলবাদী আস্তিক যখন কোন ভণ্ড যুদ্ধের ময়দানে নামবে, আমি তাদের অকল্যাণ কামনা করতেই পারি। তাই ব্লগিংয়ের মতো ব্যক্তিগত জায়গায় একজন নাস্তিক যখন অধর্ম নিয়ে চরমবাচ্য করতে থাকে তখন সেটা ব্যক্তিগত আঙ্গিনায় আস্ফালন হিসেবেই ধরে নিই। একই কথা মৌলবাদী আস্তিকদের জন্যও প্রযোজ্য। আমি আশা করতে থাকি এক সময় উভয় পক্ষই সত্য ও সুন্দরের সন্ধান পাবে। কিন্তু একজন ধর্মান্ধ যখন অস্ত্র হাতে 'ধর্ম উদ্ধার' করতে নেমে আসে এবং একজন মৌলবাদী নাস্তিক যখন তদ্রূপ বিধ্বংসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় অর্থাৎ উভয়ই ব্যক্তিগত আঙিনা ছেড়ে বেরিয়ে আসে, তখন আমি দুপক্ষেরই ধ্বংস কামনা করি।

এখন কথা হলো ব্লগার রাজীব (থাবা বাবা) কি এ জাতীয় কোন যুদ্ধে মারা গেছে? জবাবটি- 'না'। রাজীবের মৃত্যুটিকে আমরা শাহবাগ আন্দোলনের ত্যাগ বলেই জানছি। সে এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল তাই ছাগুরা তার প্রাণ নিয়েছে। রাজীবের জায়গায় অন্য যে কেউ শিকার হতে পারতো। কিন্তু খুনিরা রাজীবকে বেছে নিয়েছে।

কারণ এর ফলে গোঁড়া নাস্তিকতার কালিমা দিয়ে তারুণ্যের ঐক্যতে ফাটল ধরাতে পারবে বলে তারা মনে করে। আমরা কি তা বাস্তবায়ন হতে দিব? এই মৃত্যুটাকে যারা একজন নাস্তিকের মৃত্যু বলে মেনে নিতে চাচ্ছেন তারা ভুল করছেন। এটাকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়া একজন আন্দোলনকারীর মৃত্যু বলে জানবো। এই মৃত্যুটাকে আমি স্রেফ একজন ব্লগারের মৃত্যু বলে ভূষিত করবো না। এটি স্বাধীনতা বিরোধীদের নির্মূলের দাবিদার একজন বাংলাদেশির মৃত্যু বলে জানবো।

এই অপমৃত্যুটাকে কোন এক নির্দিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যু বলে মহিমান্বিত করবো না। এটি আমাদের মুক্তিকামী তরুণ প্রজন্মের প্রতি একাত্তরের হন্তারকদের চ্যালেঞ্জ মনে করবো। ৫। নব্য হায়েনারা, সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে শুদ্ধ হবার! ঠাঁই হবে না আশ্রয়ের... ইহকাল-পরকাল কোন কালেই! ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।