আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বলক কি, ইহা কেমনে হয়, একটি অনুসন্ধানী চিত্র প্রতিবেদন

যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।

ইহা মূলত একটা অনুসন্ধানীমূলক চিত্র চিরুনী অভিযান। দীর্ঘদিন ধরিয়াই আমি শুনিতেছিলাম যে বলক নাম্নি একটিবিষয় এই ধরাধামে এমনকি আরো বিচিত্র, এই বাঙলাদেশে ঘটিয়া চলিতেছে। আমি কৌতুহলী মানু, তাই বন্ধুর বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ডের বোনের ঘরের মেয়ের চাচাতো ভাইয়ের মাইধ্যমে আমি জানিতে পারিলাম ইহা একটি বিচিত্র বিষয়।

ইহাতে অনেক হয় এবং আসেও। তো আমি সেই স্থানে উপস্থিত হইয়া দেখিলাম কতিপয় মানুষ এই বৃষ্টিতেও একত্র হইয়াছে। তারা শুধু একত্রই হয় নাই তারা গোলজোগও করিতেছে। ইহাতে তাহারা বিয়াপক আনন্দও পাইতেছে। কিন্তু ঠিক কি কারণে তারা পাইতেছে তাহা বোঝা গেইলো না।

তবে আমি হাল ছারিলাম না, হাল ধরিয়া রাখার অভ্যাস আমার বহুদিনের। এমতাবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক আমাকে জিগ্গাসিলেন ইহা কি বস্তু? আমি তাহাকে বলিলাম, আমি তাহার মতই মুর্খ, আমি উহা জানিতেই এইখানে আসিয়াছি। তবে একটি ঠিকানা আমি তাহাকে দিলাম যাহা স্পষ্টতই বলকের ঠিকানা, কিন্তু বড়ই বিচিত্র ভাষায় ডন্লুডব্লু ডব্লু বিন্দু সামহয়ারইন বিন্দু নেট ইত্যাদি দেখিয়া ভরখাইয়া গেলেও ঠিকানাটি তিনি লহিলেন। এরপর আমি আরো তথ্য জানিতে বিভিন্ন জনের দিকে আগাইয়া গেলাম.... একজন লোককে দেখিলাম যিনি সমস্ত গাত্রে পেপার জড়াইয়া রহিয়াছেন.. এবং বিচিত্র ভঙ্গিতে অপর একজন কিঞ্চিত দাঁড়ির লোকের সাথে কথা বলিতেছেন..তিনিও মারমুখি। দেখিলাম লুকজন কোন কারণ ব্যতিরেকেই ক্যামেরার দিকে বা অন্যদিকে পোজ মারিতেছেন, আমার আর কি করা বুঝিবার লোভে আমি ফটুক তুলিলাম।

কিন্তু আড্ডা ব্যাতিরেকে অন্য কোন দিকে তাহাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নাই। তাহারা নিজেদের গল্পে এতই মশগুল যে উপর দিকে একটি উড়ো ফড়িং উড়িয়া গেলেও তাহারে কিঞ্চিত ভ্রুক্ষেপ হইলো না। আমার ধারণা জন্মিল যাহার আছেন তারা সকলেই বধির। তাহারা পুনরাবৃত্তিতে গল্পে মশগুল হইলেন। কিন্তু পত্রিকা পিরহিত সেই বিত্রিত লোকটিকে কোনভাবেই ফ্রেম হইতে বাহিরে ঠেলিতে পারিনা।

তিনি কোন না কোনভাবে ফ্রেমে প্রবিষ্ট হনই। মজা হইল বাকীরা তাহার সাথে কথা বলিতে কার্পন্যও করেন না। এরপর দেখিলাম কি বিচিত্র ভঙ্গিতে তাহারা যোগাযোগ করেন। ইহা বড়ই আমোদজনক। দেখিয়া মনে হইল এই বলক বিষয়টা বিচিত্র যোগাযোগের একটি মাধ্যম।

অত:পর তাহাদের মইধ্যে কেউ কেউ কোন প্রস্তুতি ব্যতিরেকে মূল্য সংযোজন করের মত একের পর এক বসিয়া যাইতে লাগিলেন এবং বিচিত্র ভঙ্গিত ইতিঊতি করিতে লাগিলেন। আমি খেই হারাইয়া ফিরিয়া ফেনা উৎপাদনকারী ব্যক্তির দিকে ফিরিলাম। ঠিক তখনি আমার উপলব্ধি হইল একজন ডোরাকাটা ললনা একই জাতীয় ক্যামেরা লইয়া ফটুক তুলিতেছেন। আমি আগ্রহী হইলাম। কিন্তু বেশিদূর অগ্রহর হইতে পারিলাম না তারপূর্বেই... আমার তখন মনোযোগ আকর্ষিত হইল নব ছবি তুলন পদ্ধতির দিকে।

কিভাবে নিজ'কে জ্বালাইয়া কসরৎ করিয়া ফটুক তুলিতে হয় আমি তাহা বুঝিলাম। শিল্প একটা কঠিন পরিশ্রমী বিষয় বটে। জয়তু হে শিল্পী। দেখিলাম একটি চমৎকার যুগল বিচিত্র ভঙ্গিতে বিপরীত দিকে তাকাইয়া রহিয়াছেন। আমি বুঝিলাম বলক একটা যুগল বিষয়ও বটে।

কিন্তু সেই ডোরাকাট ললনা পিছু ছাড়িলেন না..তিনি তখন টাইটানিক ভঙ্গিতে সমানে পোজ দিয়া চলিতেছেন। ইতোমধ্যে চকোলেট বিতরণ শুরু হইয়াগিয়াছিল। দেখিলাম তাহাদের সাথে সাথে এলাকার মানুষজনও তাদের সাথে যুক্ত হইতাছেন। আমার তখন পর্যন্ত কোন ধারনাই জন্মায়নাই বলক কি বস্তু। এরপর ঘটিল একটা অসাধারণ ঘটনা।

বিনা বাক্য ব্যায়ে লুকজন পকেটে হাত প্রবেশ করিয়া পোজ দিতে শুরু করিলেন... তাহার পোজ দিয়াই গেলেন। আমি বুঝিলাম বলকে সবাই পোজ দিয়া থাকেন। কি বিচিত্র। কখনো হস্ত বাড়াইয়া, কখনো স্কন্ধ বাঁকাইয়া, কখনো জামাতের সহিত হাত জড়াইয়া, বড়ই বিচিত্র.... অত:পর একজন ব্যক্তির প্রতি আমার মনোযোগ আকর্ষিত হইল, তিনি সকল বক্ত্যব্যের শুরুতেই হ্যান্ডসআপ ভঙ্গিমা দিয়া শুরু করেন, আমার মনে হইল বলক একটি দু:সাহসিক কাজও বটে। তা না হইলে উদ্র্ধহস্ত ভঙ্গিমা হইবে কেন? নিশ্চয় পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে একটি নিবিড় যোগাযোগ ইহার রহিয়াছে।

বিচিত্র ভঙ্গি একই গতিতে চালু রহিয়াছে....কিম আশ্চর্য্যম। কি নিদারুন অনন্যতা, ছাতা হাতে নিয়া, নিজকে কেবল আশ্রয় দিয়া আরেক ললনা সমানে হাসিয়া চলিতেছেন অত:পর চর জোড়া চক্ষু কোন দিকে তাকাইয়া রহিয়াছে তাহা আমার কোনক্রমেই বোধগম্য হইলো না। অথবা বিশেষত ইহা, যাহাতে একজন কি এমন বিষ্ফোরণের কথা বলিলেন আর তাতে অপরজন্ নাক মুখ চাপিয়া ধরিলেন তাও পরিষ্কার হইলো না। অথবা ইহা..উনারা কোন ধরণের মার্গে বিচরণ করিতেছেন তাহাও, অতি উচ্চ অতি... এমনকি ইহাও যাহাতে পরিষ্কার নয় কেন তিনি বঙ্গ নায়কের ভঙ্গিতে দেয়াল বাহিয়া খাড়াইয়া আছেন, একজন কৌতুক অভিনয় করছেন এবঙ শেষজন নামাজের প্র্যাকটিশ করছেন... বড়ই বিচিত্র বড়ই। কেনইবা তিনি আপনে যদি না বুঝে থাকেন ভঙ্গিতে বলিলেন বা ইনি কেনই বা তিনি বক্তৃতা দেয়া শুরু করলেন অথবা ইনি আগাইয়া পিছাইয়া আগাইয়া গেলেন... আমি অনেক চেষ্টা করিলাম চরিত্র করিলাম।

কিন্তু কোন সদুত্তর পাইলাম না। কেউ আমাকে বলিলেন ইহা এক প্রকার জাল, কেহ বলিলেন ইহা এক প্রকার ইট বস্তু যাহা কম্পিউটারের মনিটরের সাথে ঘষিতে হয়। কেউ বলিলেন ঝামা ইট ব্যবহার উত্তম। কেউ বলিলেন বলকের ইতিহাসে ইহাই সর্বোচ্চ জন সমাগম। কিন্তু কেউ পরিষ্কার করিলেন না।

কেউ বলিলেন ইহা একটি ছাপ যন্ত্র, একজন যিনি আছেন তার আছে সব জানা তিনিই বলকের ওরাকল, তিনি বলিতে পারিবেন বলক কেমনে করিতে হয়। যাইহোক ইতোমধ্যে খাবার আসিয়াছিল...বলকের কেউই আমাকে অভুক্ত রাখেন নাই আবার আমি উত্তরও পাই নাই। তাই আমি ইনার মত বেদনা মুখ নিয়াই খাবার খাইলাম, যা ভালো ছিল, সুস্বাদু ছিল। তবে আমি একটা বিষয় নিশ্চিত জানিলাম, বলকে খাওয়া যায়। আর যেখানে খাওয়া যায় সেটি উত্তম।

কিন্তু আমায় ক্ষমা করিবেন সবাই; একটি ব্যার্থ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য, আমি এখনো বুঝিলাম না বলক কি...।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।