আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওহে কর্ণধার, তরী তীরে সংলগ্ন কর

আমি কইলাম মরিনাই; বুকের আগুনও নেভে নাই, কসম ক্ষুধিরামের। খালি কয়দিন ধইরা কর্পোরেট ভন্ডামিতে ডুইবা আছি আপাদমস্তক! কমরেড, মিছিল আইলে একটা টোকা দিয়া যাইয়েন।

ওহে কর্ণধার, আজকাল বিরাটাকারের সমস্যাক্রান্ত হৈতেছি প্রতিনিয়ত। মস্তিষ্কের নিউরন জুড়িয়া চলিতেছে তুমুল হানাহানি। কোন মতেই নিয়মতান্ত্রিক পথে সিদ্ধান্তে উপনীত হৈতে পারিতেছিনা।

বঙ্গদেশটির মাটিতে শেষবারের মতন জলপাই শাসন আমলে খুব দম বন্ধকর একখানা পরিবেশ তৈরি হইয়াছিল। চেতনাগত দূষনের ফলশ্রুতিতে কোন মতেই মানিয়া নিতে পারিনা সামরিক শাসন। তাহা ছাড়া যেই রূপ অনিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শরীর-মন-মগজ ধোলাই চলিতেছিল, বুকের মধ্যকার জমাট বদ্ধ বারুদে কেমন যেন ধোঁয়াশার উপস্থিতি লক্ষ্য করিতেছিলাম। যাহা হৌক, ঘোর কলিকাল হৈতে দেশ আম-জনতার হাতে আবার ফিরিয়া আসিয়াছে মনে করিয়া খানিকটা নিশ্বাস লৈয়াছিলাম কিছু দিন পূর্বে। কিন্তু কি করিব, বিধি বাম।

আম জনতার হাতে ক্ষমতা আসিবার পর হৈতেই জনতার জীবনে কেমন যেন উদ্ভট সময় আসিয়া উপস্থিত হইল। কোন মতেই বুঝিতে পারিলামনা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মানুষ কি কারণে বারে বারে করিয়া বেরায়। হয়তোবা কয়েক বছরের ক্ষুধা নিবৃত্তির তগিদেই আমাদের দেশপ্রেমিক বীর ছাত্রনেতাগন ঝাঁপাইয়া পরিলেন সমস্ত ধরনের টেন্ডারের মালিকানা পাইবার অভিপ্রায়ে। ইহাকে আমি প্রথমদিকে মোটেও পাত্তা দিবার কারণ বলিয়া মনে করিনাই। কিন্তু দিন যতই গেল, নেতাগনের ক্ষুধা ততই বারিতে লাগিল।

আমি কোন মতেই নিজেকে বুঝাইতে সক্ষম হৈলাম না যে, এক জন মানুষের উদরে এতখানি ক্ষুধা কি করিয়া জমিয়া থাকিতে পারে! যাহা হৌক, ছোট পোলাপান, অনেকদিন ধরিয়া ক্ষুধার্ত, একটু নাহয় বেশিই খাইয়া ফেলিয়াছে, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতেই দেখি। কিন্তু বড় বড় নেতা গনের দশা দেখিয়া মনের ভিতরকার উদগ্র অস্থিরতা ক্রমশই বাড়িতে লাগিল। একে একে দখল হইতে লাগিল নদীতীরবর্তি স্থান সমূহ। বালু লৈয়া বানিজ্যের জন্য বোধকরি ইহার চাইতে ভাল আর কোন স্থান হৈতে পারেনা। ছাত্রনেতা গনের টেন্ডার দখল, হল দখল, নেতৃত্ব দখলের সাথে সাথে দেশ নেতা গনের নদী দখল, জমি দখল, মানুষ দখল আর দেশ দখল চলিতে লাগিল উদয়াস্ত।

তবু মানিয়া লৈবার আকুল চেষ্টা থামাইলাম না। ইহার পর শুরু হৈল আইন শৃঙ্খলা লইয়া ঠাট্টা তামাশা। চাঁদাবাজি এমন আকার ধারণ করিয়াছে যে শুধু প্রান খানা হাতে লৈয়া বাহিরে যাওয়াটাকেও এখন আর নিরাপদ মনে করিতেছিনা। গলির মোড়ে সেই সব মুখ গুলিকে দেখিয়া কেমন অসহায় বোধ করিতেছি। ইহার সাথে শুরু হৈল চিনি লৈয়া তুলকালাম কাণ্ড, চাউলের বাজার দর আজ দেখিলাম মাধ্যাকর্ষনের সূত্র ভুলিয়া গিয়াছে।

আমি ঠিক বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছিনা কোন দিকে যাইব। মনের মধ্যকার আজন্ম লালিত মুক্ত-স্বাধীন চেতনার উপর আজকাল আর বিশ্বাস রাখিতে পারিতেছিনা, বরং আয়নার সম্মুখে নিজের দিকে মধ্যাঙ্গুলি প্রদর্শন করিয়া আত্মীয় পরিজনদের মতন "উহাই ভাল ছিল" বলিবার জন্য হৃৎপিণ্ড আকুলিবিকুলি করিতেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।