আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বন্দুরা - ২ : শখের জুলিয়াস

হাসতা লা ভিসতা, অপূর্ব!

শখের জুলিয়াস আমার বাল্যবন্দু। তাহার একটি শখের ব্যবসা আছে হাড়িপাতিলের। গুলশন টুতে ছোট্টো দোকান। তবে তাহার অবিসংবাদিত দক্ষতা সাইকেলের চেন পাল্টানোয়। সেই থেকে বন্দুমহলে সে শিকল জুলিয়াস নামেই পরিচিতি লাভ করে।

জুলিয়াস তাহার পিতৃদত্ত পদবী নহে। চুশমা ছাড়া তাহার খোমাখান শিশুকালে জুলিয়াস সিজারের অষ্টম ভ্যালেটের ন্যায় লাগিত। তাহা হইতেই কালক্রমে নিক নেমটি অফিশিয়াল লাস্ট নেম হইয়া যায়। শিকল জুলিয়াস অপরিচিতদের শিকল পড়ায় না, থুক্কু, চেন পাল্টায় না। শুধু মাত্র ঘনিষ্ঠ বন্দুবর্গই উক্ত কৃপাধন্য।

যাহা হউক। শিশুকাল হইতেই শিকল জুলিয়াসের লিখালিখি করিবার শখ। কিন্তু বছরের পর বছর সম্পাদকের দরজায় দরজায় ঘুরিয়াও, কেহ যখন তাহার কাব্যবোমাগুলির যোগ্য সমাদর করিলো না, তখন সে স্থির করিল নিজেই ছাপাইবে। এমনি করিয়াই দিন যাইতেসিল। শখের ব্যবসার সমগ্র আমদানিটুকু তাহার বই প্রকাশের খরচের পিছনেই চলিয়া যাইত।

ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ও ডিনারে ছাতু খাইত। বিকালের খাবার খাইত না, কারণ অনেক দিন হইতেই তাহার আম্রিকান নাগরিকত্ব লওয়ার শখ। চুরাই ল্যাপটপ বিক্রেতার নিকট হইতে স্মাগল্ড প্লেবয়ের তিন গুণ মূল্যে ক্রীত একটি সংখ্যা পাঠ করিয়া জানিতে পারিয়াছিল, বিকেলের খাবার খাওয়ার পরিবর্তে হেভি ব্রেকফাস্ট করার চল আছে সায়েবদের মধ্যে। সেদিন ইউপিএসের একটি প্যাকেট পাইলাম। খুলিয়া দেখি বন্দু এই অধমকে মনে রাখিয়া তাহার নতুন কাব্যগ্রন্থটি পাঠাইয়াছেন।

মলাট খুলিতেই ফ্ল্যাপে দেখিলাম জনপ্রিয় সাহিত্যিক অনীল সঙ্গোপাধ্যায়ের সহিত বন্দুর জাপ্টাজাপ্টি করিয়া একটি ছবি। অনীল সঙ্গোপাধ্যায় লোকটা মোটকু-মোদো হইলেও তাহারে আমি ভালা পাই। পেটে বিদ্যা হ্যাজ। উত্তর-দক্ষিণের মতো উপন্যাস লেখা যারতার কর্ম নহে। সো তাহার সহিত বন্দুর ছবি দেখিয়া ব্যাপক ঘাবড়াইয়া গেলাম।

বন্দু কি তাহারে ডেট-রেপ ড্রাগ দিয়া অজ্ঞান করিয়া এই কুকর্মটি করিয়াছে? কাউয়া কি করিয়া কেকার পাশে ফুচকি মারে? বন্দুকে ফুন দিলাম। প্রথমে তো কিছুতেই বলিতে চায় না, শেষে থলে হইতে বিড়াল বাহির হইল। পিরিয়ো বন্দু আমার আজীবনের মতো অনীল সঙ্গোপাধ্যায়কে ফিরিতে পাতিল সাপ্লাইয়ের ভার লইসেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।