আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মা আর বাচ্চা ঘোড়ার মাজার : মাজার সম্পর্কে একটি প্রচলিত রসিকতা

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই

উৎসর্গ : ব্লগার মোতাব্বির কাগু এক ভণ্ড পীর একটা মাজার দিয়েছে। যথারীতি তার এক খাদেমও জুটে গেছে। কিন্তু মাজার তো আর জমে না। লোকজন তেমন আসে না, মুরিদও পাওয়া যায় না, দান খয়রাতও কম। শেষে এমন অবস্থা হল মাজার দিয়ে আর তাদের পেট চলে না।

ভণ্ড পীরের একটা ঘোড়া ছিল। অভাবের যন্ত্রণায় এক রাতে খাদেমটি সেই ঘোড়া নিয়ে পালিয়ে গেল। অভাবের যন্ত্রণা কেবল খাদেম ভোগ করেছে তাই নয়। অভাবের কারণে ঘোড়াটিকেও অভুক্ত রাখা হত। ফলে ঘোড়াটি ছিল হাড় জিরজিরে।

পালাতে গিয়ে খাদেম ঘোড়াটিকে জোরে ছুটাল। ফলে ঘোড়া প্রচণ্ড হাপিয়ে উঠল এবং হাপাতে হাপাতে এক পর্যায়ে মারা গেল। খাদেম পড়ল বিপদে। একে তো তার ভণ্ড পীরের ভয়, অন্য দিকে মরা ঘোড়া নিয়ে সে কী করবে ভেবে পেল না। যাই হোক, সে রাতের আঁধারে রাস্তার ধারে ঘোড়াটিকে পুঁতে ফেলল।

তারপর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল এই ভেবে যে, কমপক্ষে ঘোড়া চুরির দায় থেকে সে বেঁচে গেল। অন্য দিকে সে যেখানে ঘোড়াটিকে পুঁতে ফেলল, সেই জায়গাটা ছিল হাটে যাওয়ার রাস্তা। পরদিন ছিল হাটবার। সকাল বেল এক হাটুরে এসে দেখে রাস্তার ধারে এক মাজার। সে ধরে নিল এটা একটা গায়েবি মাজার।

কারণ আগের দিন কোন কোন মাজার ছিল, রাতারাতি এটা কিভাবে হল ? ফলে সে মাজারে একটা মোমবাতি ধরাল এবং সামান্য কিছু সদকা দিল। সে হাটে গিয়ে সবাইকে গায়েবি মাজারের কথা বলে বেড়াতে লাগল। আজগুবি জিনিসের খবর বাতাসের আগে দৌড়ায়। ফলে সেদিন সন্ধ্যার মধ্যে গায়েবি মাজারটা বিখ্যাত হয়ে গেল। হাটুরেরা হাট থেকে ফেরার সময় যে যা পারল মনের আশা মেটাবার আশায় দান করে গেল।

খাদেম তো মহাখুশি। সে ঘোড়ার করবটিকে সালু কাপড় দিয়ে ঢেকে নিজে পীর সেজে বসল। রটিয়ে দিল, এটি একটি কামেল ওলির মাজার। সে স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে এই মাজারের খেদমতে এসেছে। ঘোড়ার মাজার বা গায়েবি মাজারে পীর হিসেবে সে খ্যাতিমান হয়ে উঠল।

তার টাকা পয়সা অভাব দূর হল। তার পুরোনো পীর শুনল এই নতুন মাজার ও তার ব্যাপক পসারের কথা। একদিন কৌতুহলবশত সে এই মাজার দেখতে এল। এসে দেখে তার সেই খাদেম এখানে পীর সেজে বসেছে। সে অবাক হয়ে গেল।

যাই হোক, খাদেম তার পুরোনো পীরকে সমাদর করে খাস কামরায় নিয়ে গেল। সুযোগ বুঝে পুরোনো পীর জিজ্ঞেস করল, এই মাজারের রহস্য। খাদেম তার পীরকে সব ঘটনা খুলে বলল। পীর তার এই কাহিনী শুনে খুব খুশি হল। বলল, তুই যেই ঘোড়ার বাচ্চা কবর দিয়া মাজার বানাইছস, তার মায়েরেই তো আমি কবর দিয়া মাজার বানাইছি।

(কৈফিয়ত : এটি একটি প্রচলিত গল্প। এই গল্পের সাথে ইসলাম ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই। পীরের ভণ্ডামি ও ভুয়া মাজার সম্পর্কে প্রচলিত একটি রসিকতাও এটি। কাল রাতে একটি পোস্টে ব্লগার মুতাব্বির কাগু একই গল্পটি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। )


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।