আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ।ক।জ।ন । হ্যা।কা।রে।র । ডা।ই।রী

দ্রোহ আর বিদ্রোহের ফিনিক্স

শুভ আর অশুভর যে চিরায়ত দ্বন্দ, তা সকল ভুবনেই বিরাজমান। অশুভ বা শুভ শক্তি যাই হোকনা কেন, কেউ যখন চেয়েছে সকল ক্ষমতা, জ্ঞান আর নির্বাণের পথকে রুদ্ধ করতে; তখনি বিরুদ্ধ প্ল্যাকার্ড হাতে দাড়িয়েছে কেউ না কেউ। সেই যে প্রমিথিউস, দেবতা জিউসের অগ্নিরথ থেকে আগুন চুরি করে এনে তুলে দিয়েছিল মানুষের হাতে, আর মানুষ এগিয়ে গিয়েছিল কতনা দূর!! প্রমিথিউস ঠিকই জানতো তাকে প্রতিদিন বিদীর্ন হতে হবে সহস্রবার, শকুনীর তিক্ষè নখরে। তবুও প্রতিবাদী হয়ে সে হলো কিংবদন্তী। জ্ঞানকে যারা গন্ডীবদ্ধ করতে চেয়েছে, তাদের বিপরীতে সব সময়েই জন্মেছে প্রমিথিউসরা।

তারা দেখিয়েছে মুক্তির পথ.... নির্বাণ। আর সেই সব কদর্য মানুষেরা, যারা অন্যদের পদানত করে রাখতে চেয়েছে সব সময়- তারা বরাবরই বড় কুটিল। সৌকর্ষের মুখোশে তারা ঢেকে রাখে সর্পিল মুখ। শুধূ অন্তরালে ছড়ায় লিকলিকে জিভের বিষ। মোহময়তার যে জগত তারা সৃষ্টি করে, সকলে তাতে নিমগ্ন হয় খুব সহজেই।

ডুবে যায় অবরুদ্ধতায়। মোটেও উপলব্ধি করেনা- নিজেকে করছে ক্রীতদাস। অদৃশ্য দেয়ালের সীমানাটাও দেখতে পায়না জন্মান্ধ চোখে। সেই ঘোলাটে দৃষ্টিতে কদর্য মানুষগুলো যেন হয়ে ওঠে মহা-মানবের প্রচ্ছায়া। এই অবগুন্ঠ চৌকাঠেও কেউ কেউ পেড়িয়ে যায় সীমানা।

কিন্তু সবাই নিজেকে জয় করতে পারেনা। চিরায়ত যে লোভ মনের গহীনে উকি মারে, তাকে জয় করা যায়না খুব সহজেই। বোধের পার্থক্য আর লোভের হাতছানি তাদের ডেকে নিয়ে যায় সাময়িক প্রাপ্তির ক্ষুদ্র দ্বারে। কিংবদন্তী হবার বদলে তারাও হয়ে ওঠে কদর্য। প্রান্তর পেরুলেই মুক্তি নয়; বরং সেই সে সীমানার ওপাড়ে অপেক্ষা করে কত না ‘আরও বেশী অন্ধকার’।

প্রাপ্তির অস্থিরতায় তারা পতিত হয় সেই অন্ধকারে। কম্পিউটার জগতে যারা ক্রীতদাস.. তারা তাদের সীমাবদ্ধতা নিয়ে ভালই আছে। যেহেতু তারা জানেনা তাদের শৃংখলের কথা.. তাই তারা সুখী না হোক.. অন্তত খুশী। আর যারা সেই সমতল কে অতিক্রম করেও লোভ আর বোধের শুদ্ধতাকে জয় করতে পারেনি.. তারা ক্রীতদাসের ও অধম...... শুন্য আর এক এর জগতের পরিভাষায় ক্র্যাকার.......সহজ কথায় ছিচকে চোর। যারা অন্ধকারে আলোক জ্বেলেছে চিরকাল, তারা কখনো নিজের দিকে ফিরে দেখেনি।

সকল আগল ভেঙ্গে তারা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে সেই আলোক। মুঠে ভরা জ্ঞান তারা কেবল নিজের মুঠোয় রাখেনি। জ্ঞানের মুক্তি, আত্মার মুক্তি আর দীপ্তমান নির্লোভ বোধের নিমিত্তে তাদের নীরব শ্লোগান। তারাই আজকের প্রমিথিউস.... বুদ্ধ....... কিংবা...... হ্যাকার। সকল অবরুদ্ধতার বিপরীতে তাদের বিপরীত প্রতিবিম্ব।

হাত বাড়ালেই যেখানে প্রাপ্তি অগুনতি, তখনো শুন্যতায় তাদের মুঠোবদ্ধ। শুধুমাত্র বিদীর্ন হবার জন্যই আগুন হাতে এক একজন প্রমিথিউস। আর তাই ক্র্যাকাররা কখনোই হ্যাকার নয়। একটি চোর কেবল কারো ঘরের ভেতর প্রবেশ করতে পারে। আর একজন সত্যিকার সিদ্ধপুরুষ প্রবেশ করতে পারে কারো মনের গহীনে।

পার্থক্যটা এখানেই। জ্ঞানই এখন অলৌকিক শক্তি। যারা বিদ্যের বেসাতি করে, তারাই কদর্য। তাই আমাদের প্রয়োজন সেই সব সিদ্ধার্থদের। তারা কি ঘরের কোনে?? নাকি... “মোহিনের ঘোড়াগুলি মোহিনের ঘরে ফিরে নাই উহারা অলৌকিক জেব্রাদের পার্শ্বে চড়িতেছে” * উৎসর্গ রিচার্ড স্টলম্যান


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।